শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

বরেন্দ্র খাবার পানি সরবরাহ প্রকল্পটি কোনো কাজে আসছে না

গাইবান্ধা সংবাদদাতাঃ বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ২০০৮-০৯ অর্থ বছরে তাদের সেচ এলাকায় সুবিধাভোগীদের মধ্যে খাবার পানি সরবরাহের লক্ষ্যে একটি বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করলেও তা এলাকার মানুষের কোনো কাজে আসছে না।
জানা গেছে, এ প্রকল্পটির আওতায় গাইবান্ধার ৫টি উপজেলায় ১৪টি পৃথক প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়। এজন্য ওই সময় ১ কোটি ৬৪ লাখ ৬১ হাজার ২৫৬ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। এজন্য সংশ্লিষ্ট সেচ পাম্প সংলগ্ন স্থানে একটি ওভারহেড ট্যাংক এবং ওই এলাকায় প্রাথমিকভাবে ৬ থেকে ৮ হাজার ফুট পানি সরবরাহ পাইপ বসানো হয়। ওভারহেড ট্যাংকের পানি ধারণ ক্ষমতা ২৫ হাজার লিটার। সেচ পাম্প এলাকার সুবিধাভোগী সদস্যদের পরিবারের খাবার পানি সমস্যা নিরসনেই এ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়।
এরমধ্যে গাইবান্ধা সদর উপজেলার বৌলেরপাড়া, বাড়ইপাড়া, আনালেরতাড়ি, পূর্ব বারবলদিয়া, দক্ষিণ গিদারী ও খামার বোয়ালী, সাদুল্যাপুরের ইসবপুর ও গয়েশপুর, সুন্দরগঞ্জের চন্ডিপুর ও ছাপরহাটি, গোবিন্দগঞ্জের কাঠালবাড়ি, বাতাইল, ছোট সাতাইল ও খুরশাইল এবং পলাশবাড়ী উপজেলার পশ্চিম দুবলাগাড়ীতে এই ১৪টি প্রকল্প স্থাপন করা হয়। প্রতিটি প্রকল্প বাস্তবায়নে ১১ লাখ ৭৫ হাজার ৮০৪ টাকা ব্যয় করা হয়। এসব প্রকল্পের সাহায্যে মোট ১ হাজার ৫৯০টি পরিবারে পানি সরবরাহের ব্যবস্থা নেয়া হয়।
কিন্তু এ প্রকল্পের সাথে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট সংযুক্ত না করায় সুন্দরগঞ্জ, সাদুল্যাপুর ও সদর উপজেলার ১০টি পানি সরবরাহ প্রকল্প এক জটিল পরিস্থিতির মুখে পড়ে। এসব এলাকার ভূ-গর্ভস্থ পানিতে অতিরিক্ত আয়রন এবং আর্সেনিকের আধিক্য থাকায় স্থানীয় লোকজন খাবার এবং ব্যবহারের পানি হিসেবে তা গ্রহণ করতে আগ্রহী হয়নি। ফলে বরেন্দ্র বহির্ভূত সুন্দরগঞ্জে, সাদুল্যাপুর ও সদর উপজেলায় ১০টি প্রকল্প চালু করা সম্ভব হয়নি।
তবে বরেন্দ্র এলাকায় পানি মোটামুটি আয়রন মুক্ত হওয়ায় গোবিন্দগঞ্জে ও পলাশবাড়ী উপজেলা এ সংস্থার পানি সরবরাহ কার্যক্রম সফল হয়েছে। ওই দুটি উপজেলায় স্থাপিত ৪টি প্রকল্প এখনও চালু রয়েছে। সেখানে ২ হাজার ৩শ’ পরিবার খাবার পানি সংগ্রহের সুযোগ পাচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সুত্র জানিয়েছে, গাইবান্ধার পশ্চিমাংশ তথা গোবিন্দগঞ্জে ও পলাশবাড়ী উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন মূলত বরেন্দ্র এলাকা হিসেবে চিহ্নিত, এরমধ্যে রয়েছে গোবিন্দগঞ্জের কামদিয়া, রাজাহার, শাখাহার, সাপমারা, কাটাবাড়ি ও গুমানিগঞ্জ এবং পলাশবাড়ীর হোসেনপুর ও কিশোরগাড়ি ইউনিয়ন বরেন্দ্রভূক্ত এলাকা হিসেবে পরিচিত। শুরুতে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বরেন্দ্র এলাকায় কৃষি উন্নয়নে পানি সেচ সরবরাহের মধ্যে দিয়ে তাদের কার্যক্রম শুরু করলেও পরবর্তীতে তারা বরেন্দ্র বহির্ভূত এলাকায় তাদের কার্যক্রম সম্প্রসারিত করে। তারা সেচ সরবরাহ ছাড়াও অন্যান্য কর্মসূচিও গ্রহণ করে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে খাবার পানি সরবরাহ, খাল-বিল ও পুকুর খনন, বৃক্ষ রোপণ, ফলজ বৃক্ষের চারা বিতরণ, কৃষক ও মৎস্য চাষী প্রশিক্ষণ ইত্যাদি।
এব্যাপারে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের গাইবান্ধা নির্বাহী প্রকৌশলী সুত্রে জানা গেছে, স্যালোমেশিন বসিয়ে বিকল্প পন্থায় ওভারহেড ট্যাংকে পানি তুলে তা পাইপ লাইনের মাধ্যমে সুবিধাভোগীদের মধ্যে সরবরাহ করা যেতে পারে। একটি স্যালো মেশিন স্থাপনে মোটর পাম্প এবং অন্যান্য আনুসাঙ্গিক ব্যয় মিলে প্রয়োজন হবে ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি আবারও সচল করা যেতে পারে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ