শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

নুতন কার্যনির্বাহী কমিটি নিয়ে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা নবনির্বাচিত কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ এবং উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের নিয়ে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে পুস্পস্তবক অর্পণ শেষে মোনাজাতে অংশগ্রহণ করেন -পিআইডি

স্টাফ রিপোর্টার: আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটিকে নিয়ে টুঙ্গিপাড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে দলের নেতাসহ উপস্থিত সবাইকে নিয়ে সমাধিস্থলে ফাতেহা পাঠ ও দোয়া মোনাজাতে অংশ নেন তিনি। গতকাল শুক্রবার দুপুর ১টার দিকে তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে এ শ্রদ্ধা জানান। এর আগে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি শ্রদ্ধা জানান জাতির পিতার সমাধিতে।
এর আগে, আওয়ামী লীগের নবনির্বাচিত কেন্দ্রীয় কমিটিকে নিয়ে জাতির পিতার সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে টুঙ্গিপাড়া পৌঁছান শেখ হাসিনা। হেলিকপ্টারযোগে তিনি টুঙ্গিপাড়া পৌঁছালে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা তাকে স্বাগত জানান।
সেখান থেকে বঙ্গবন্ধুর সমাধি কমপ্লেক্সে পৌঁছানোর পর বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন শেখ হাসিনা। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সেখানে দোয়া ও মোনাজাতে অংশ নেন তিনি। এসময় বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের মধ্যে শেখ ফজলুল করিম সেলিম, শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল এবং পরিবারের নিকটাত্মীয় ও স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, বৃহস্পতিবার রাতেই অগ্রবর্তী দল হিসেবে টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল। আর শুক্রবার সকাল ৭টায় ঢাকায় সংসদ ভবন চত্বরের মিডিয়া সেন্টারের সামনে থেকে বাসে চড়ে রওনা দেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। মোট ছয়টি বাসে করে কেন্দ্রীয় নেতারা টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছান দুপুর সাড়ে ১২টার পর। তারা বাস থেকে নেমে বঙ্গবন্ধুর সমাধি কমপ্লেক্সে পৌঁছালে তাদের নিয়ে জাতির জনকের সমাধিকে শ্রদ্ধা জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি।
গতকাল জুমার নামাজ ও মধ্যাহ্নভোজের পর দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ ও উপদেষ্টা পরিষদের অংশগ্রহণে আওয়ামী লীগের একটি যৌথ সভা হওয়ার কথা রয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করবেন শেখ হাসিনা। সভা শেষে ঢাকায় ফিরে আসার কথা রয়েছে তার।
শ্রদ্ধা নিবেদনের পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে আওয়ামী লীগকে ‘সোনার মানুষ তৈরির কারখানা’ বলে আখ্যা দিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। আর সেই সোনার বাংলা গড়তে আওয়ামী লীগকে নতুন মডেলে ঢেলে সাজানো হবে বলে জানান তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণই আমাদের লক্ষ্য। এ লক্ষ্যে ট্র্যাডিশনের সাথে টেকনোলজি, আইডিয়ালিজমের সাথে রিয়েলিজমের সুন্দর সমন্বয় করে সোনার বাংলা বিনির্মাণের চূড়ান্ত লক্ষ্য অভিমুখে আমরা উন্নয়নের মহাসড়ক ধরে এগিয়ে যেতে চাই।’
গতকাল শুক্রবার গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি কমপ্লেক্সে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। বঙ্গেবন্ধুর সমাধিতে আওয়ামী লীগের নবনির্বাচিত কেন্দ্রীয় কমিটির শ্রদ্ধা জানানোর আয়োজনে অংশ নিতে ওবায়দুল কাদের অন্যদের সঙ্গে এসেছেন এখানে।
সাংবাদিকদের ওবায়দুল কাদের বলেন, জাতীয় সম্মেলনের পর আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধ ও জন্মস্থান টুঙ্গিপাড়ায় এসেছি। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে সোনার মানুষ তৈরির কারখানা হিসেবে আওয়ামী লীগকে সময় ও যুগের চাহিদা অনুযায়ী নতুন মডেলে আমরা ঢেলে সাজাব। সাংগঠনিক কাঠামোকেও শুদ্ধ করব, সুশৃঙ্খল করব। সারাবাংলায় তৃণমূল পর্যন্ত এই লক্ষ্য ছড়িয়ে দেয়ার শপথ ও অঙ্গীকার নিতেই আমরা আজ এখানে এসেছি।
টানা ১০ বছরের বেশি সময় ধরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় রয়েছে। তৃতীয় মেয়াদের সরকার একবছর পার করেছে। এ অবস্থায় সোনার বাংলা বিনির্মাণে কোনো ধরনের বাধা রয়েছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘সোনার বাংলা বিনির্মাণ একটি সুদূরপ্রসারী লক্ষ্য। আমাদের টার্গেট আছে, ভিশন আছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার যে ভিশন ২০২১, ভিশন ২০৪১ ও ডেল্টা প্ল্যান রয়েছে, আমরা এই তিনটিকে সামনে রেখে আমাদের এজেন্ডা ঠিক করেছি। সময়ের চাহিদার সাথে সঙ্গতি রেখে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বাধা ও চ্যালেঞ্জ তো থাকবেই। সময়ের পরিবর্তনে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ আসবে। নতুন নতুন বাধাও আসতে পারে। চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করতে হবে। আর তার জন্য সময়ের চাহিদা অনুযায়ী আমাদের সুশৃঙ্খল সংগঠন গড়ে তুলতে হবে। সাংগঠনিক শক্তি ও আদর্শের পতাকা হাতে আমরা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করব।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা পৌঁছালে তাদের নিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে শ্রদ্ধা জানানো হবে জাতির পিতার সমাধিতে। এরপর মিলাদ ও দোয়া অনুষ্ঠিত হবে। জুমার নামাজ ও মধ্যাহ্নভোজের পর সংক্ষিপ্ত আকারে দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদ ও উপদেষ্টা পরিষদের যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হবে।’
‘আমাদের সভাপতি সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় রাজনৈতিক, সাংগঠনিক বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করব। যেহেতু সভা সংক্ষিপ্ত হবে, তাই সুদীর্ঘ আলাপের সুযোগ নেই।’
এদিকে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে অংশ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গতকাল শুক্রবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে এই দোয়া ও মিলাদ অনুষ্ঠিত হয়। এসময় বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের মধ্যে শেখ ফজলুল করিম সেলিম, শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল এবং পরিবারের নিকটাত্মীয় ও স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।
গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ সাইদুর রহমান জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের আগমন উপলক্ষে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। টুঙ্গিপাড়াসহ জেলার সর্বত্র তিন স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ