চট্টগ্রামে বস্তি ভস্মিভূত হওয়ায় হাজারো মানুষ গৃহহীন
চট্টগ্রাম ব্যুরো : চট্টগ্রামে একটি বস্তি ভস্মিভূত হয়েছে। এতে প্রায় দু’শতাধিক ঘর পুড়ে গেছে। ফলে হাজারো নারী, পুরুষ ও শিশুর ঠাঁই হয়েছে খোলা আকাশের নিচে। শুক্রবার সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটে নগরের পাঁচলাইশ থানার মির্জাপুল সংলগ্ন ডেকোরেশন গলির বাবু কলোনি বস্তি এলাকায় আগুন লাগার খবর পৌঁছে আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের বিভিন্ন স্টেশন থেকে পাঁচটি ইউনিটের ১৫টি গাড়ি আগুন কবলিত বাবু কলোনি বস্তি এলাকায় যায়।
ফায়ার সার্ভিস বলছে, সড়ক সরু হওয়ায় আগুন নেভানোর জন্য তাদের কোনো গাড়ি বস্তির কাছে যেতেই পারেনি। এছাড়া বস্তির আশপাশে পানির কোনো উৎস না থাকায় আগুন নেভাতে এতো সময় লেগেছে। আর তাতেই সহায়-সম্বল হারিয়ে পথে বসেছে কয়েক হাজার মানুষ।
নগর পুলিশের প্রাথমিক হিসেবে, বস্তিতে ঘর পুড়েছে প্রায় ২০০। আর ফায়ার সার্ভিস বলছে, প্রাথমিকভাবে ১১০ থেকে ১২০টি ঘর পুড়ে যাবার তথ্য তারা পেয়েছে। এই বস্তির বাসিন্দাদের সবাই নিম্ন আয়ের মানুষ। দিনমজুর, গৃহকর্মী, রিকশা চালক-এসব পেশার লোকজনই সেখানে বেশি বসবাস করেন। অধিকাংশ ঘর থেকেই আগুন লাগার পর কোনো আসবাবপত্র বের করা যায়নি। কেউ কেউ সামান্য কিছু বের করতে পারলেও মাথা গোঁজার ঠাঁই গেছে সবার। পরনের কাপড় পর্যন্ত বের করতে পারেননি।
চট্টগ্রামের ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারি পরিচালক ফরিদ উদ্দিন জানান, বেলা ১১টা ২৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে আগুন পুরোপুরি নেভাতে বেজে যায় বিকেল তিনটা। বস্তির সামনে গলিপথের সড়ক খুবই সরু। এজন্য আমাদের সব গাড়ি প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে মূল সড়কে রাখতে হয়েছে। সেখান থেকে পাইপ নিয়ে যেতে হয়েছে বস্তিতে। আশপাশে জলাধার কিংবা পানির কোনো উৎস নেই। নিজস্ব উৎসের পানি ব্যবহার করতে হয়েছে। এজন্য আগুন নেভাতে আমাদের সাড়ে চার ঘন্টা লেগেছে। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিও হয়েছে আগুন নেভাতে সময় বেশি লাগার কারণে। সবগুলো ঘরই ছিল কাঁচা। টিনের ছাউনি ও বাঁশের বেড়া দিয়ে তৈরি। সেজন্য আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানান তিনি।
চট্টগ্রাম নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) বিজয় কুমার বসাক বলেন, প্রাথমিকভাবে আমরা ১৬৩টি ঘর পুড়ে যাবার তথ্য পেয়েছি। আরও ২০-৩০টি আছে বলে সেখানকার লোকজন জানিয়েছেন। সব মিলিয়ে দুইশ’র বেশি ঘর হবে না। ফ্যামিলিও হবে প্রায় শ’দুয়েক।
তবে ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা ফরিদ উদ্দিন বলেন, বস্তিতে ৫-৬টি সারি আছে। প্রতিটি সারিতে ১৮ থেকে ২০টি ঘর আছে। সব মিলিয়ে ঘরের সংখ্যা ১১০ থেকে ১২০টি হতে পারে। প্রকৃতপক্ষে কতটি ঘর পুড়েছে এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও পরে জানা যাবে। আগুনের উৎস সম্পর্কেও তদন্তের আগে কিছু বলা যাবে না বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা।