শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

সড়ক ভেঙ্গে যাওয়ায় নির্মাণ করা হয় সাঁকো বাবার সামনেই সাঁকো থেকে পড়ে শিশু নিহত

তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) সংবাদদাতা : তিন বছর আগে বন্যার পানিতে ভেঙ্গে যায় গ্রামের কাঁচা সড়কটি। সেসময় সড়কটি চলাচল উপযোগী রাখতে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানে স্থানীয়রা নিজ উদ্যোগে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করেন। এরপর থেকে এলাকাবাসী স্থানীয় মেম্বার ও চেয়ারম্যানকে সড়কটি মেরামত করতে বহুবার অনুরোধ করেন। কিন্তু ইউনিয়ন পরিষদ থেকে আজ পর্যন্ত কোনো উল্লেখযোগ্য সংস্কার কাজ করা হয়নি ওই স্থানে। এঅবস্থায় সাঁকোটি অত্যন্ত সংকীর্ণ হওয়ায় গত তিন বছরে লোকজন পারাপারের সময় একাধিক দুর্ঘটনা ঘটে। এতেও টনক নড়েনি সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধিদের। একপর্যায়ে বৃহস্পতিবার রাতে বাবার সাথে হেঁটে ওই সাঁকো পার হওয়ার সময় পানিতে পড়ে মৃত্যু হয় সুশান্ত সরকার (৩) নামের এক শিশু। ঘটনাটি ঘটে পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার দিলপাশার ইউনিয়নের অন্তর্গত বেতুয়ান গ্রামে। সুশান্ত ওই গ্রামের নারায়ন চন্দ্র সরকারের ছেলে।
স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার বেতুয়ান গ্রামের হালদারপাড়ায় দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে হিন্দু সম্প্রদায়ের নামযজ্ঞ ও হরিবাসর অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। অনুষ্ঠানে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে শত শত মানুষ যোগদান করে। বন্যায় রাস্তাটি ভেঙে যাওয়ার পর থেকে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ঝুঁকি নিয়ে ওই সংকীর্ণ বাঁশের সাঁকোর উপর দিয়ে পারাপার হয়। এঅবস্থায় হিন্দুপাড়ার পক্ষ থেকে স্থানীয় ইউপি সদস্য রঞ্জু সরকার ও ইউপি চেয়ারম্যান অশোক কুমার ঘোষের কাছে সড়কটির ক্ষতিগ্রস্ত অংশ মেরামতের দাবি জানানো হয়। ইউপি চেয়ারম্যান সড়ক মেরামত করতে মেম্বারকে পিআইসি করে গত দুই বছরে দুটি প্রকল্প দেন। কিন্তু মেম্বার নামমাত্র প্রকল্পের কাজ করে বিল তুলে নেন। এতে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বাধ্য হয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের ঝুঁকি নিয়েই ওই বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হতে হয়। প্রতিবছর নামযজ্ঞ ও হরিবাসর অনুষ্ঠানের সময় শতাধিক লোকজন পারাপার হওয়ায় এই ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়। এই অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাতে শিশুটি বাবার সাথে হরিবাসর অনুষ্ঠান দেখতে যেতে সাঁকো পার হওয়ার সময় নিচে পড়ে নিহত হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা শ্যামল কুমার জানান, বেতুয়ান গ্রামের হালদার পাড়ার মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যম একটিমাত্র সড়ক। সড়কটি বন্যায় ভেঙ্গে যাওয়ার পর থেকে সংস্কারের জন্য ইউপি মেম্বার চেয়ারম্যানকে অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু তারা সেখানে অর্থ বরাদ্দ দিয়ে নামমাত্র কাজ করেছেন। মেম্বার ও চেয়ারম্যানের দায়িত্বহীনতায় শিশুটির মৃত্যু হল। এ বিষয়ে কথা বলতে সংশ্লিষ্ট ইউপি মেম্বার রঞ্জু সরকারের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ