বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
Online Edition

কুষ্টিয়ার আইলচারায় শ্রমিকের হাট জমে উঠেছে

খালিদ হাসান সিপাই, কুষ্টিয়া: ধান কাটা আর ছাড়ার কাজে ব্যস্ত শ্রমিকরা। চড়া দাম দিয়েও শ্রমিক মেলানো যাচ্ছে না। কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার আইলচারা এলাকায় শ্রমিকের চাহিদার কারণে বিভিন্ন স্থানের শ্রমিকদের আগমনে শ্রমিকের হাট জমে উঠেছে। প্রতিদিন বড় আইলচারা  হিলাল মোড়ে শত শত শ্রমিক আসলেও তাদের ভাগে মেলানো দায়। সকলেরই চাহিদা শ্রমিকের তাই চড়া মজুরী দিয়েই শ্রমিক কেনা লাগছে গৃহস্থদের। এতে দারুণ কদর বেড়েছে শ্রমিকদের।  অতিরিক্ত মজুরী দিয়েও শ্রমিক না পাওয়ায় চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে গৃহস্থদের।
জানা যায়, দীর্ঘ ২০ বছর যাবৎ কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বড় আইলচারা হিলাল মোড়ে শ্রমিক বেচাকেনার হাট বসে। বড় আইলচারা গ্রামের মন্ডল পাড়ার মরহুম হিলাল মন্ডল এখানে শ্রমিকদের ডেকে হাট বসানোর পর থেকে এ শ্রমিকের হাটটি এখন পর্যন্ত জাঁকজমকভাবে চলে আসছে। এখানে দেশের উত্তরাঞ্চল, পাবনা, ফরিদপুরসহ জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে নিম্ন আয়ের লোকজন শ্রম বেচাকেনার জন্য আসে। ফজরের আজান দেওয়ার পর পরই বিভিন্ন স্থান থেকে কাঁচি, ঝুড়ি,কোদালসহ কাজের জন্য শ্রমিকেরা জড়ো হয় কুষ্টিয়ার বড় আইলচারা হিলাল মোড়ে। এই মোড়ের ব্রীজের উপরসহ দীর্ঘ মোড়ে শ্রমিকে শ্রমিকে কানায় কানায় ভরে যায়। সকালে শ্রমিকদের শোরগোল আর চিৎকার ৩/৪ মাইল দূর থেকে শোনা যায়। বছরের সব সময়ই এ শ্রমিকের হাট বসে। শ্রমিক এ হাটের সুনাম থাকায় জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে গৃহস্থরা মটর সাইকেল, বাই-সাইকেল নসিমন, করিমন নিয়ে এ হাটে ছুটে আসে। গৃহস্থদের চাহিদা অনুযায়ী শ্রমিকদের বিভিন্ন দামে কিনে নিয়ে যায়। শুধু ধান লাগানো, ধান-কাটা আর পাট কাটা ধোয়ার জন্যই নয়। সব ধরনের কাজের জন্য পাবেন বিভিন্ন পেশার শ্রমিক। রাজমিস্ত্রী, টিনের ঘরের মিস্ত্রীও পাওয়া যায় এখানে। কোন কাজের জন্য দিনব্যাপী শ্রমিক ও চুক্তিতেও শ্রমিক কেনাবেচা হয় এ হাটে। এখন চাষীদের ধান লাগানো আর পাট কাটার ধুম পড়ায় এ হাটে শ্রমিক এসে দাঁড়াতেই পারছে না। ফজরের পর থেকেই গৃহস্থরা অপেক্ষা করে আছে এ হাটে। শ্রমিক আসলেই শ্রমিকরা দাম বলা মাত্রই তাদেরকে নিয়ে চলে যাচ্ছে গৃহস্থরা। প্রতিদিনই শত শত শ্রমিক আসলেও তাদেরকে মেলানো দায় হয়ে যাচ্ছে। অনেক গৃহস্থ ২/৩ দিন ধরে ঘুরে সুযোগ মত শ্রমিক কিনতে হচ্ছে। তবে শ্রমিকের অনেক দাম। ৩শত, সাড়ে ৩ শত টাকা মজুরী নিয়ে শ্রমিকেরা গৃহস্থদের কাজে যাচ্ছে। এক বেলা খাবার দিয়ে তাদেরকে কাজ করাতে হচ্ছে। তাও আবার বেলা ১২টা পর্যন্ত। টাকা মাঠ থেকেই নগদ প্রদান। এরপরও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। এখন সবচাইতে বেশি মজুরী পাওয়ায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে শ্রমিকরা এ বাজারে ছুটে আসছে। এখন আর ভোর নয় গৃহস্থদের চাহিদা থাকায় দিনের বেলাতেও শ্রমিক কিনে কাজে লাগাচ্ছে। 
আর এ ভাবেই কুষ্টিয়ার বড় আইলচারা হিলাল মোড়ে আবহমান কালের শ্রমিক হাট বসছে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ