খালেদার অনুমতি না মিললে উন্নত চিকিৎসা সম্ভব না - অ্যাটর্নি জেনারেল
স্টাফ রিপোর্টার: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসকদের নির্দেশ দিয়েছেন তার (খালেদা জিয়া) উন্নত চিকিৎসার জন্য। তবে, এটা ওনার অনুমতি সাপেক্ষে। কিন্তু ওনার অনুমতি না হলে উন্নত চিকিৎসা করা সম্ভব হবে না।
গতকাল বুধবার জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার জামিন আবেদন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে খারিজের পর নিজ কার্যালয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় অ্যাটর্নি জেনারেল এসব কথা বলেন।
মাহবুবে আলম বলেন, আগে দাখিল করা রিপোর্টগুলো এবং গতকালও (বুধবার ১১ ডিসেম্বর) যেটা দাখিল করা হয়েছে সেটাও পড়ে শুনানো হয়েছে। তাতে আমরা দেখিয়েছি, আসলে তার শারীরিক অবস্থার বিশেষ কোন অবনতি হয়নি। যে রকম ছিল, সে রকমই আছে।
মাহবুবে আলম বলেন, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে সাত বছর কারাদ- দিয়েছেন নিম্ন আদালত। তার বিরুদ্ধে তিনি হাইকোর্টে আপিল করেছেন। সে আপিলে তিনি জামিন চেয়েছিলেন। হাইকোর্ট বিভাগ সে জামিন আবেদন নাকচ করেছেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, পরে এ আদেশের বিরুদ্ধে বেগম জিয়ার পক্ষে একটি লিভ পিটিশন দায়ের করা হয়েছিল আপিল বিভাগে। সেখানে জামিন চাওয়া হয়েছিল। আদালত তার আইনজীবী, রাষ্ট্রপক্ষ এবং দুদকের আইনজীবীদের কথা শুনে বেলা ১টা ১৫ মিনিটের সময় জামিন আবেদন ডিসমিস করেছেন।
সর্বশেষ রিপোর্টে খালেদার স্বাস্থ্যের বিষয়ে কী বলা আছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার দুটো হাঁটুই রিপ্লেসমেন্ট করা হয়েছে। একটা ১৯৯৭ সালে, আরেকটা ২০০২ সালে। এটা ভালো হওয়ার অবস্থায় নেই। স্বাভাবিক এতদিন পরে রিপ্লেসমেন্টের কার্যকারিতা থাকে না। সেক্ষেত্রে এটার জন্য অ্যাডভান্স (উন্নত) চিকিৎসা নিতে হয়।’
রাষ্ট্রের প্রধান আইনজীবী আরও বলেন, কতগুলো বিশেষ ধরনের ইনজেকশন আছে, সে ইনজেকশন দেয়ার বিষয়ে তার অনুমতি না পাওয়া গেলে তা দেওয়া যাবে না। উনি (খালেদা জিয়া) অনুমতি দিচ্ছেন না। আদালত বলেছেন, উনি যদি অনুমতি দেন তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সে ব্যবস্থা করবেন। সর্ব সম্মতিক্রমেই আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।
জামিন পাওয়া না পাওয়ার বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আমি শুনানিতে বলেছি, এর আগে একটি মামলায় ওনাকে ১০ বছর কারাদ- দেওয়া হয়েছে। এ মামলায় সাত বছর কারাদ- দেয়া হয়েছে। মোট তাকে ১৭ বছর কারাদ- ভোগ করতে হবে। কাজেই এটাকে শর্ট সেন্টেন্স বলা যাবে না। সুতরাং এখানে তিনি জামিন পেতে পারেন না।
চিকিৎসার বিষয়ে তিনি আরও বলেন, চিকিৎসার বিষয়ে সরকার থেকে সর্বাত্মক সুযোগ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। একজন দ-প্রাপ্ত আসামি হিসেবে তাকে বঙ্গবন্ধু প্রিজন সেলে রাখার কথা। কিন্তু তাকে ভিআইপি কেবিনে রাখা হয়েছে। ওনাকে সেবা দান করার জন্য একজন সেবিকা দেয়া হয়েছে। সার্বক্ষণিকভাবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওনাকে দেখভাল করছেন। কিন্তু ওনার অনুমতি না হলে উন্নত চিকিৎসা করা সম্ভব হবে না।
মেডিকেল রিপোর্টটিকে খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন সঠিক নয় বলে উল্লেখ করেছেন। এমন বিষয়ে জানতে চাইলে অ্যাটর্নি আলম বলেন, ‘আমি তিনটা রিপোর্ট আদালতের সম্মুখে পেশ করেছি। একটা ২০১৮ সালের, একটা ২০১৯ সালের আর একটা হলো গতকালের। তিনটা রিপোর্টেরই সমস্ত বক্তব্য, রোগের বর্ণনা, শারীরিক অবস্থার বর্ণনা একই রকম।