বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
Online Edition

মাগুরায় মধুমতি নদী দখল করেছে ৩০টি ইটভাটা ॥ পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব

মাগুরা থেকে ওয়ালিয়র রহমান: সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাগুরায়  নদী দখল করে অন্তত ৩০টি ইটভাটা গড়ে উঠেছে। তাতে একদিকে কৃষি জমির পরিমাণ কমছে, অন্যদিকে পরিবেশ দূষণের শিকার হচ্ছে এলাকার মানুষ। ভেঙে যাচ্ছে মধুমতি নদী। মাগুরা সদর উপজেলার বাগবাড়িয়া, কুছুন্দি, পাতুড়িয়া এলাকার মধুমতি নদী দখল করে একই জায়গায় গড়ে উঠেছে অন্তত ৩০টি ইটভাটা। মাগুরা সদরের বাগবাড়িয়া গ্রাম ভাটা গ্রাম হিসেবে সবার কাছে পরিচিত। গ্রামের যে দিকে তাকান যায় সে দিকেই ইটের ভাটা। গ্রামজুড়ে ইট ভাটা থাকায় গ্রামটি ধুলা বালীতে ছয়লাব। তাছাড়া ভাটার মাটি বালী ও ইট পরিবহনে ১০ টাকার ডাম গাড়ি ব্যবহার করায় রাস্তাগুলো চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। ইটের ভাটার ধোঁয়ায় পরিবেশ হচ্ছে বসবাস অযোগ্য।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, জেলায় মোট ৯০টি ইটভাটার মধ্যে ৩০ টি এই এক গ্রামে। তার পর এদও কারো লাইসেন্স আছে বলে মনে হয়না। জেলায় মোট ৯০ টি ভাটার মধ্যে মাত্র ১০টির লাইসেন্স আছে। বাকি ৮০টি ইটভাটা অনুমোদন ছাড়াই চলছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রায়ই এসব ইটভাটায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা আদায় করা হয়। কিন্তু ভাটাগুলোতে ইট পোড়ানো বন্ধ হয়নি। তা ছাড়া বেশির ভাগ ভাটায় সিমেন্টের তৈরি ১২০ ফুট দৈর্ঘ্যের চিমনির বদলে ব্যবহৃত হচ্ছে স্বল্প উচ্চতার চিমনি, যা আইনত নিষিদ্ধ।
ভাটা সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে জানা গেছে, জেলার প্রতিটি ভাটায় মৌসুমজুড়ে গড়ে ৫০ লাখ ইট পোড়া হয়। প্রতি এক লাখ ইটে ৮০ টন থেকে ১০০ টন হিসাবে ৯০টি ইটভাটায় প্রয়োজন প্রায় চার থেকে পাঁচ লাখ মেট্রিক টন জ্বালানি কাঠ। টনপ্রতি আড়াই হাজার টাকা হিসাবে যার মূল্য অন্তত ১শ কোটি টাকা। যা সরবরাহ হয় জেলার বিভিন্ন বন  থেকে। মাগুরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক জাহিদুল আমিন বলেন, ‘ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে রেজল্যুশনের মাধ্যমে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। তিন ফসলি জমিতে কোনো কারখানা বা ইটভাটা করা যাবে না। বিষয়টি জেলার প্রতিটি ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বারদের জানানো হয়েছে। তবে নদী দখল কওে ইট ভাটা করা ও নদীর মাটি কেটে ইটের রভাটায় ব্যবহার করলেও সে ব্যপারে কোন সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে শোনা যায়নি। মাগুরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সুফিয়ান বলেন, ‘ভুক্তভোগীদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তিন ফসলি জমিতে যাতে কোনো ইটভাটা গড়ে উঠতে না পারে, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানালেও নদী দখলের ব্যাপারে কি করা হবে জানাননি। তবে  ছাড়া অবৈধ ইটভাটার বিষয়েও দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে জানান। ভুক্তভোগীরা অবিলম্বে এ বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ দাবি করেছেন।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ