বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

সৌরবিদ্যুৎ চালিত ইনকিউবেটর উদ্ভাবন স্বল্প মূল্যে উৎপাদিত হবে অধিক বাচ্চা

দেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে এবং গ্রামীণ পর্যায়ে পোল্ট্রি ব্যবসাকে আরো লাভজনক ও জনপ্রিয় করে তুলতে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক তৈরি করেছেন অত্যাধুনিক ইনকিউবেটর (ডিম থেকে বাচ্চা ফুটানোর যন্ত্র)। 
কৃষি প্রকৌশল ও কারিগরি অনুষদের কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের চেয়ারম্যান সহযোগী প্রফেসর  ড. মুহাম্মদ রাশেদ আল মামুন, লেকচারার মোঃ জানিবুল আলম সোয়েব, একই বিভাগের দুই শিক্ষার্থী মিনহাজ উদ্দিন নয়ন ও রুকন আহমেদ ইমন এই ইনকিউবেটরটি তৈরি করেছেন।
সাধারণত, হাওর এবং গ্রামাঞ্চলে ধানের তুষ ব্যবহার করে ডিম ফোটানোর প্রক্রিয়া প্রচলিত রয়েছে। এ পদ্ধতিতে সকল ডিম থেকে বাচ্চা ফোটতে  ২১ দিনের অধিক সময় লাগে এবং ডিম ফোটানোর হার ৫৫% এর নিচে। তাছাড়া অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের কারণে বাচ্চা গুলি রোগাক্রান্ত হয়ে থাকে। প্রচলিত এই পদ্ধতিতে মুরগির বাচ্চা ফোটানোর জন্য উপযুক্ত তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয় না। অন্যদিকে, উদ্ভাবিত উন্নত ইনকিউবেটরের মাধ্যমে ডিমের প্রকার ও প্রজাতি ভেদে আলাদা আলাদা তাপমাত্রা ও  আর্দ্রতা নির্ধারণ করার মাধ্যমে অধিক সুস্থ ও সবল বাচ্চা উৎপাদন করা সম্ভব হবে বলে জানান গবেষকরা।
তাদের উদ্ভাবিত এই ইনকিউবেটরটি  তুলনামূলক স্বল্প মূল্যে টেকসই উপকরণ প্লাইউড দ্বারা তৈরি করা হয়েছে যা স্থানীয় বাজারে সহজলভ্য। ভালো নিরুদক ও তাপমাত্রা সুরক্ষার জন্য বক্সের ভেতর সম্পূর্ণ অংশজুড়ে অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল পেপার মুড়ানো থার্মোকল শীট ব্যবহারের পাশাপাশি তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ করতে আরডুইনো ব্যবহার করে একটি বৈদ্যুতিক সার্কিট স্থাপন করা হয়েছে। গবেষণায় দেখা যায় এই ইনকিউবেটর ব্যবহারের ফলে ২১ দিনের মধ্যেই ৮০% ডিম থেকে সুস্থ, সবল ও স্বাস্থ্যবান বাচ্চা উৎপাদন সম্ভব হয়েছে। যার শতকরা হার প্রচলিত তুষ পদ্ধতি থেকে অনেক বেশি।
এ বিষয়ে প্রধান গবেষক ড. রাশেদ বলেন, আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণের জন্য মাইক্রো-কন্ট্রোলার ভিত্তিক স্মার্ট অটোমেশন সিস্টেম এবং স্বয়ংক্রিয় ডিম ঘুরানোর পদ্ধতি সংযোজিত হয়েছে, যা উৎপাদন হার আরো বাড়িয়ে দিতে সহায়ক হবে। গবেষণার যান্ত্রিক অংশগুলির পাশাপাশি ইনকিউবেটরের বৈদ্যুতিক অংশগুলি নিয়ন্ত্রণ করতে স্মার্ট সিস্টেম (সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয়) ব্যবহার করা হয়েছে।এছাড়াও, বিদ্যুতের ঘাটতি এবং দুর্গম অঞ্চলে যেখানে বিদ্যুৎ নেই  সেখানে সুবিধাজনক ব্যবহার নিশ্চিতের লক্ষ্যে দেশে প্রথমবারের মতো ইনকিউবেটরটি সৌর শক্তি দিয়ে পরিচালনার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে ।
ড. রাশেদ আশা প্রকাশ করেন সরকারের উপযুক্ত পৃষ্ঠপোষকতা ও আর্থিক সহায়তা পেলে ইনকিউবেটরটি বাণিজ্যিক ভিত্তিতে গ্রামীণ জনগণ ব্যবহার করতে পারবে। প্রেস বিজ্ঞপ্তি

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ