শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

বিনা ভোটে যারা ক্ষকতায় থাকে তারা দানবীয় শক্তি -রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার : বর্তমান দানবীয় শক্তিকে গলায় গামছা দিয়ে রাজপথে টেনে নামাতে বাধ্য করা হবে বলে ক্ষমতাসীনদের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, বিনাভোটে যারা ক্ষমতায় থাকে তারা দানবীয় শক্তি। যারা মানুষের ভালোবাসা নিয়ে টিকে থাকে তারাই হচ্ছে আলোক ও দিব্য শক্তি। বিএনপি ও ছাত্রদল হচ্ছে আলোক শক্তি। সুতরাং দানবীয় শক্তি টিকে থাকতে পারবে না। তাদেরকে গলায় গামছা দিয়ে রাজপথে টেনে নামাতে বাধ্য করা হবে ইনশাআল্লাহ।
গতকাল বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৫ তম জন্মদিন উপলক্ষে স্বেচ্ছায় রক্তদান ও বিনামূল্যে ব্লাড গ্রুপ নির্ণয় কর্মসূচির’ আয়োজন করে বেসরকারি মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কলেজ ছাত্রদল।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, তারেক রহমান পরিশ্রমী রাজনীতিবিদ। তিনি আগামীদিনের স্বপ্ন ও আকাক্সক্ষার প্রতীক। যিনি বাংলাদেশের অসহায় দরিদ্র মানুষদের স্বাবলম্বী করতে নানাবিধ কাজ করেছেন। আসলে তার রাজনীতি শুরুই হয়েছে মানবকল্যাণের মধ্য দিয়ে। যা কুচক্রী মহল ভালোভাবে নেয়নি। তারা তারেক রহমানের বিরুদ্ধে নানাভাবে অপপ্রচার চালিয়ে কুৎসা রটিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ টাটকা ডাহা মিথ্যা কথা বলে। কারণ জনগণের কাছে তাদের কোনো জবাবদিহিতা নেই। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল আলো ও ন্যায়ের পথে। যারা প্রকৃত সাহসী তারাই মানবতার পক্ষে। ছাত্রদলের রক্তদান কর্মসূচি অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। যারা ক্যাসিনো আর জুয়ার পক্ষে তারা তো আলোর পথে নেই।
রিজভী বলেন, আমরা গণতন্ত্রের প্রতীক দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আন্দোলন করছি। হামলা, গুলি, মামলা উপেক্ষা করে রাজপথে পেশাজীবী ও মুক্তিযোদ্ধারা নেমে পড়েছেন। মঙ্গলবার আপনারা রাজপথে তা দেখেছেন। আজকে মুক্তিযুদ্ধের শহীদ পরিবারের সন্তান জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতকে গ্রেপ্তার করেছে রাতের অন্ধকারে। অথচ প্রধানমন্ত্রী মুখে মুখে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে। শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ যেন মুক্তিযুদ্ধের মালিক।
রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী কলকাতায় খেলা দেখতে গেলেন। তিনি ঘন্টা বাজাতে গেলেন। কিন্তু তাকে তো কেউ প্রোটোকল দেয়নি। ভারত সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কেউ বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানায়নি। আসলে তিনি বাংলাদেশের মর্যাদার ঘন্টা বাজিয়ে দিয়েছেন। এরপরও তার ওসব নিয়ে কোনো চিন্তা নাই। আসলে তোরা যে যা বলিস ভাই আমার সোনার ক্ষমতা চাই। মানে “মেরেছে কলসির কানা তাই বলে কি প্রেম দিবোনা।
‘রাজাকারের পেঁয়াজ কেনো’
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘‘আপনি (শেখ হাসিনা) তো পাকিস্তানের বিরুদ্ধে, রাজাকার রাজাকার বলেন। তাহলে রাজাকারের পেঁয়াজ কেন আপনি আনলেন? এই রাজাকার পেঁয়াজ আপনি খাবেন, জনগনকে খাওয়াবেন। আপনি না মুক্তিযুদ্ধের চেতনার চ্যাম্পিয়ান নিজেকে দাবি করেন।”
‘‘ আপনার মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হচ্ছে- গণতন্ত্রকে হত্যা করে এককলীয় শাসন, আপনার মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হচ্ছে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ করা, আপনার মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হচ্ছে, গণতন্ত্রের পক্ষে যারা কথা বলবে তাদের ঠিকানা হবে লাল দালানের ভেতরে। এদেশের জনপ্রিয় নেত্রী আপনার প্রতিহিংসার জোরে কারাগারের মধ্যে অবস্থান করছেন। অন্ধকারের জায়গা হচ্ছে একদলীয় কর্তৃত্ববাদী শাসন। কারণ এরা গুন্ডামী করে ক্ষমতায় আছে, এরা ডাকাতি করে ক্ষমতায় আছে। সন্ত্রাস ও দখল হচ্ছে এদের রাজনৈতিক চেতনা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা তাদের নয়।”
‘পুশ ইন: সরকার নিশ্চুপ’
রিজভী বলেন, “জিয়াউর রহমানের ঘোষণা-আমার মাটির এক ইঞ্চি জমির ওপরে কারো শেন দৃষ্টি থাকবে-এটা বরদাশত করা হবে না। শেখ হাসিনা দেশের স্বাধীনতাকে দূর্বল করেছেন, সার্বভ্মৌত্বকে দূর্বল করেছেন। কৈ পুশ ইনের ব্যাপারে আপনার পররাষ্ট্র মন্ত্রী তো কোনো কথা বলেন না। আমরা জানি যশোর সীমান্তসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন সীমান্তে পুশ ইন করা হচ্ছে। ভারতীয় নাগরিকদের বাংলাদেশে ঢুকানো হচ্ছে।” ‘‘আপনি এ ব্যাপারে কোনো কথা বলেন না, নিশ্চুপ। আপনি এ ব্যাপারে কথা বলতে পারছেন না কেনো? তার রহস্যটা কী? আর বিএনপির নেতা কোনো কথা বললে যে যদি সাত-সমুদ্রের নিচে থাকে আপনার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মামলা দিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে জেলখানায় পাঠায়।”
তিনি বলেন, “যদি দেশে গণতন্ত্র থাকে তাহলে রাজপথে অন্যায়ের বিরুদ্ধে মিছিল হবে, এটা সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃত, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্যে সেই মিছিল করেছে গতকাল। আর জন্য আপনি ৫০১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন, আর প্রখ্যাত মুক্তিযোদ্ধা ইশতিয়াক আজিজ উলফাতকে রাতের অন্ধকারে এয়ারপোর্ট থেকে গ্রেপ্তার করেছেন।”
“এতো আতঙ্ক, এতো ভয়, এতো গ্রেপ্তার, এতো মামলার পরেও আমরা কথা বলি, আমরা রাজপথে দাঁড়াই। আমাদেরকে আপনি (শেখ হাসিনা) দমন করতে পারবেন না। আপনি আরো র‌্যাবের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে পারেন, পুলিশের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে পারেন তারপরেও জাতীয়তাবাদী শক্তিকে আপনি দাবিয়ে রাখতে পারবেন না।”
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি এএসএম রাকিবুল ইসলাম আকাশের সভাপতিত্বে কর্মসূচীতে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশীদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ