শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

ধর্মঘট প্রত্যাহারের পরও বাস চলাচল বন্ধ

স্টাফ রিপোর্টার : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের সঙ্গে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের বৈঠকে ধর্মঘট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয়ার পরও দেশের বিভিন্ন জেলায় গতকাল বাস চলাচল বন্ধ ছিল। বাস ছেড়ে যায়নি রাজধানী ঢাকা থেকেও। শ্রমিক নেতারা মুখে ধর্মঘট প্রত্যাহারের কথা বললেও বাস্তবে প্রত্যাহার হয়নি। পণ্য পরিবহন চলাচলও শুরু হয়নি। তেজগাঁও ট্র্যাক-কাভার্ড ভ্যান টার্মিনালেও শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করেছেন। টার্মিনাল থেকে ছোট বড় কোনো ট্র্যাক-কাভার্ড ভ্যান ছাড়েনি। তেজগাঁও রেলক্রসিং থেকে শুরু করে সাতরাস্তা মোড় পর্যন্ত রাস্তার দুইপাশে সারিবদ্ধভাবে পার্কিং করা রাখা হয় ট্র্যাক-কাভার্ড ভ্যান। এদিকে পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়া হলেও রাজপথ আন্দোলন চালিয়েছেন শ্রমিকরা। কর্মবিরতির নামে যানবাহন চলাচল বন্ধ রেখে সাধারণ যাত্রীদের পণবন্দি করছেন তারা। অনেক যাত্রীই টার্মিনালে এসে বাস না পেয়ে অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়েন। অবশেষে বাসায় ফিরে যান। কেউ বিকল্প হিসেবে ট্রেনে যাওয়ার চেষ্টা করেন। টানা চার দিন চলছে এই অচলাবস্থা। শ্রমিকরা বলছেন, নতুন সড়ক পরিবহন আইন পরিবর্তন না হলে গাড়ি চালাবেন না তারা। 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বুধবার রাতে পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহারের কথা বলা হলেও বৃহস্পতিবার সকালে মহাখালী টার্মিনাল থেকে দুয়েকটি বাদে ছেড়ে যায়নি কোনো বাস। চালক শ্রমিকরা বলছেন ধর্মঘট নয় কর্ম বিরতি পালন করছেন তারা। তবে কেউ গাড়ি চালাতে চাইলে কোনো বাধা নেই। একই চিত্র গাবতলীতেও। সারি সারি বাস অলস পড়ে ছিল স্ট্যান্ডে। চালক শ্রমিকরা অনঢ়, নতুন আইনে পরিবর্তন না আসলে গাড়ি নিয়ে নামবেন না সড়কে। সেই সঙ্গে বি আরটিএ কার্যালয়ে হয়রানি বন্ধের দাবি তাদের। লাইসেন্স নবায়ন, গাড়ির ফিটনেস ইত্যাদি নিয়ে আপত্তি না থাকলেও মূলত জরিমানা কমানোর দাবিই মুখ্য। ড্রাইভারদের একজন বলেন, ‘ফাঁসির দড়ি গলায় নিয়ে গাড়ি চালাবো না। একট শ্রমিক ৫ লাখ জরিমানা দিয়ে গাড়ি চালাবে না।' আর এই ফাঁদে পড়ে যাত্রী ভোগান্তি চরমে। অনেকে অপেক্ষা করছেন দীর্ঘ সময়। জানতে পারছেন না গাড়ি ছাড়বে কি না। 

সায়েদাবাদ আন্তঃজেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কালাম বলেন, “কাল রাত থেকেই বাস চলাচল শুরু হয়েছে। শতভাগ না হলেও পূর্বাঞ্চলের নব্বই শতাংশের বেশি গাড়ি ছেড়ে গেছে।” তবে সায়েদাবাদে অধিকাংশ বাস টার্মিনালে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। কাউন্টারগুলোতে যাত্রীর সংখ্যাও কম। 

হিমাচল পরিবহনের কাউন্টার কর্মী সুমন বলেন, “গতকাল কোনো গাড়ি চলাচল করেনি। ইউনিক পরিবহনের কাউন্টারের কর্মী রিপন বলেন, সিলেট ও চট্টগ্রামে তাদের গাড়ি যাচ্ছে। অন্য রুটের গাড়ি ছাড়ার কোনো ‘নির্দেশনা’ এখনও তারা পাননি। চালকদের অনেকে বাড়ি চলে যাওয়ায় মহাখালী থেকে এখনও সব বাস চলাচল শুরু হয়নি বলে জানান মহাখালী আন্তঃজেলা বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক। “বাস শ্রমিকরা কোনো আন্দোলনে নাই। কিন্তু তারা বাড়ি চলে গিয়েছিল। ফলে সব গাড়ি চলছে না।

গাবতলী আন্তঃজেলা বাস-ট্রাক মালিক সমিতির সদস্য মো. সালাউদ্দিন বলেন, “গাবতলী টার্মিনাল থেকে বাস সেভাবে এখনও ছাড়তে পারছি না। অনেক যাত্রী এসে বসে আছেন, এটা সত্যি। দূরপাল্লার রুটে আমরা যেখানে ১০টা গাড়ি ছাড়তাম, সেখানে ছাড়ছি ২টা গাড়ি।” তিনি জানান, সবচেয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছে খুলনার রুটে। খুলনার বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা এখনও গাড়ি ছাড়তে চাইছেন না।

খুলনা রুটের দিগন্ত পরিবহনের হেল্পার ফারদিন শেখ বলেন, “খুলনার শ্রমিকরা গাড়ি ছাড়তে দিতেছে না। ওইখান থিকা গাড়ি কখন আইব, কখন এহান থেকে ছাড়ব, তা জানি না।” ঢাকা-খুলনা রুটের ঠিকানা পরিবহনের মালিক বাবুল মিয়া বাবলু বলেন, “রাতেই তো স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে ধর্মঘট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত এসেছে। তারপরও কেন শ্রমিকরা গাড়ি ছাড়তে দেবে না? প্রশাসন কি করছে? কেন ব্যবস্থা নিচ্ছে না?”

দূরপাল্লার রুটের সোহাগ পরিবহনের কাউন্টার ব্যবস্থাপকদের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, “সোহাগের যে গাড়িগুলো ছেড়ে গিয়েছিল খুলনার দিকে, সেগুলো ফিরছে না। শ্রমিকরা সে গাড়িগুলো আসতে দিচ্ছে না। তাহলে ঢাকায় গাড়ি পাব কই? তাই এই সংকট।” 

ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কালাম বলেন, “এখন কম কম করে বাস ছাড়ছে। তবে টার্মিনালে অনেক যাত্রী। বাস চলাচল স্বাভাবিক হবে।" দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের কয়েকটি জেলার পরিবহন শ্রমিকরা এখনও কর্মবিরতি চালিয়ে যাচ্ছেন। 

যশোর, খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, মাগুরা, নড়াইল, ঝিনাইদহ, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া ও চুয়াডাঙ্গার পরিবহন শ্রমিকরা এখনও ‘স্বেচ্ছায়’ কর্মবিরতি চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান খুলনা বিভাগীয় শ্রমিক ফেডারশনের যুগ্ম সম্পাদক ও বাংলাদেশ পরিবহন সংস্থা শ্রমিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোর্তজা হোসেন।

গাবতলী ও মহাখালী বাসস্ট্যান্ড থেকে ছেড়ে যায়নি কোনো বাস : 

ট্রাক-কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ধর্মঘট প্রত্যাহার হলেও গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাজধানীর গাবতলী ও মহাখালী বাসস্ট্যান্ড থেকে ছেড়ে যায়নি দূরপাল্লার কোনো বাস। মহাখালী বাসস্ট্যান্ড শ্রমিক নেতারা জানান, ট্রাক-কাভার্ডভ্যান শ্রমিকরা আশ্বাস পেলেও বাস শ্রমিকদের বিষয়ে এখনও কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়নি। দূরপাল্লার বাসচালকরা তাদের নিজের ইচ্ছামতোই বাস চালাচ্ছেন। আবার অনেকে বাস চালানো থেকে বিরত থাকছেন। সংগঠনের পক্ষ থেকে চালকদের ওপর কোনো ধরনের চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে না বলেও জানান শ্রমিক নেতারা। তবে বাস শ্রমিক নেতাদের অনেকেই নতুন সড়ক আইন বাস্তবায়নের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর লিখিত আশ্বাস দাবি করেন।

বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ডভ্যান পণ্য পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ সদস্য সচিব মো. তাজুল ইসলাম বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ৯ দফা দাবি নিয়ে আলোচনা হয়। লাইসেন্স, ফিটনেস সনদ আপডেটের জন্য ২০২০ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সময় পেয়েছি। সে অনুযায়ী আমরা কাজ করব। পাস হওয়া আইন সংশোধনের দাবি বিবেচনার জন্য সুপারিশ আকারে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর কথাও বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। 

গতকাল সকালে রাজধানীর কল্যাণপুর, আগারগাঁও, মহাখালী, তেজগাঁও ও গুলশান এলাকায় দেখা যায়, দুই লেনের সড়কে একটি লেনে গাড়ির চাপ থাকলেও আরেকটি বেশ ফাঁকা। ট্রাফিক সিগন্যালগুলোতে অন্য দিনের মতো বিশেষ চাপ নেই। পিকআপ, ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান, বাস, মিনিবাস ও দূরপাল্লার বাসও কম চলাচল করতে দেখা যায়।

বিভিন্ন জেলায় পরিবহন ধর্মঘটে ভোগান্তি : 

সিরাজগঞ্জ: কেন্দ্রীয়ভাবে বুধবার রাত থেকে পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়া হলেও সিরাজগঞ্জে সেই ঘোষণা মানছেন না পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা। বুধবারের মতো বৃহস্পতিবার সকাল থেকে এমএ মতিন বাস টার্মিনাল ও ট্রাক টার্মিনাল থেকে কোনো বাস ও ট্রাক ছাড়তে দেখা যায়নি। অন্যদিকে সিএনজি অটোরিকশাগুলোও চলাচল করছে না। এর ফলে ভোগান্তি আরো বেড়েছে সাধারণ মানুষের। বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ শহিদ আলম জানান, মহাসড়কে গতকাল রাতে কিছু যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে কিন্তু আজ সকাল থেকে খুব কম সংখ্যক বাস ও ট্রাক চলাচল করছে। অন্যদিকে সিরাজগঞ্জ জেলা বাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আনছার আলী বলেন, আজ ও কাল আমাদের ঢাকায় এ বিষয়ে মিটিং আছে সেখানে যে সিদ্ধান্ত হবে আমরা সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহে চতুর্থ দিনের মতো চলছে পরিবহণ ধর্মঘট। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ যাত্রীরা। সকাল থেকে শহরের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল, আরাপপুর, বাইপাস মোড় এলাকায় বাস ও যানবাহনের জন্য যাত্রীদের অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। অনেকে বাস না পেয়ে অনেকে ইজিবাইক ও মহাসড়কে চলাচলে নিষিদ্ধ ৩ চাকার যানবাহনে চলাচল করছেন।

খুলনা: খুলনায় আজও বন্ধ রয়ে বাস চলাচল। সকাল থেকে বাস টার্মিনাল ও ট্রাক টার্মিনাল থেকে কোনও বাস ও ট্রাক ছাড়তে দেখা যায়নি। জানা যায়, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা বাস চালাবেন না।

নড়াইল: নড়াইল-মাওয়া, নড়াইল-যশোর, নড়াইল-লোহাগড়াসহ অভ্যন্তরীণ সব রুটে কোনও ঘোষণা ছাড়া ৪র্থ দিনের মতো বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও নড়াইল জেলা বাস মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহম্মেদ খান বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় জানান, বাস ধর্মঘট অব্যাহত আছে। আমরা এখন ঢাকায় আছি। সকাল ১১ টায় এ বিষয়ে বৈঠকে বসবো।

চুয়াডাঙ্গা: নতুন সড়ক আইন সংশোধনের দাবিতে চুয়াডাঙ্গায় চলছে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট। প্রথম দিকে বাস ধর্মঘট শুরু হলেও বুধবার সকাল থেকে একই দাবিতে শুরু হয়েছে ট্রাক ও পণ্যবাহী পরিবহন ধর্মঘট। মধ্যরাতে ট্রাক ও পণ্যবাহী পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হলেও আজ সকাল থেকে কোন পণ্যবাহী পরিবহন ছেড়ে যায়নি। আজও চুয়াডাঙ্গা থেকে দূরপাল্লা ও আন্তঃজেলা রুটে সব ধরণের যাত্রীবাহী বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।

মেহেরপুর: মেহেরপুরে স্বল্প পরিমাণে ট্রাক চলাচল শুরু হলেও বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। সড়ক পরিবহন আইন সংশোধনের দাবিতে চালকদের কর্মবিরতির ফলে তৃতীয় দিনের মতো আন্তঃজেলার সকল রুটে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। মেহেরপুর মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান বলেন, সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ পাস হওয়ার পর থেকেই বাসের চালকরা চালক, হেলপার ও সুপারভাইজাররা আতঙ্কে রয়েছেন। তবে সরকারের সঙ্গে মালিক শ্রমিকদের কয়েক দফা বৈঠকে সমস্যা সমাধানের উদ্যোগে নেয়া হয়েছে। আজ ঢাকায় সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এ বৈঠক থেকে পরবর্তী সিদ্ধান্ত হবে।

জাকির হোসেন, সৈয়দপুর (নীলফামারী) সংবাদদাতা ॥ গত ২০ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া পরিবহন ধর্মঘটের কারণে সৈয়দপুর সহ নীলফামারী জেলার সর্বত্র চরম জন দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। জরুরী প্রয়োজনে এক স্থান থেকে অন্যস্থানে যাতায়াতের জন্য যান বাহন না পেয়ে চলাচলের ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়েছে সর্বস্তরের মানুষ। বিশেষ করে চাকুরীজীবি, ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থীরা সৈয়দপুর থেকে জেলার বিভিন্ন স্থানসহ রংপুর-দিনাজপুর-ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড় জেলায় যাতায়াত করতে পারছে না। একান্ত প্রয়োজনে যারা এ অবস্থার মধ্যেও রাস্তায় বের হয়েছেন তাদের  অনেকে ইজিবাইকে করে দূরের গন্তব্যে রওয়ানা হচ্ছেন। এতে দ্বিগুন ভাড়া গুনতে হচ্ছে। সে সাথে সময়ের অপচয়সহ ভোগান্তির শেষ নেই। 

সরেজমিনে গিয়ে সৈয়দপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে দেখা যায় এখান থেকে দিনাজপুর-রংপুর-ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড় সহ জেলার বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী বাস-মিনিবাস-দূরপাল্লার কোচগুলো সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে। এরুট গুলো দিয়ে কোন প্রকার যান বাহন চলাচল করছেনা। মোটর শ্রমিকরা টার্মিনালের সড়কগুলোতে জটলা করছে। কোন প্রাইভেট কার বা পিকআপ এবং সরকারী বাস সার্ভিস বিআরটিসির যানবাহনগুলো এলেও তা গতিরোধ করে আটকিয়ে দেয়া হচ্ছে। 

২১ নভেম্বর সকালে সৈয়দপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে রংপুর থেকে দিনাজপুরগামী একটি বিআরটিসি বাস আসলে রাস্তায় অবস্থানরত মোটর শ্রমিকরা তার জানালার গ্লাস ভেঙ্গে দেয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে সৈয়দপুর ওয়াপদা মোড়, রাবেয়া ফ্লাওয়ার মিল মোড়সহ বিভিন্ন পয়েন্টে শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। 

ধর্মঘটের ব্যাপারে মুঠোফোনে কথা হয় নীলফামারী জেলা বাস মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আখতার হোসেন বাদলের সাথে। তিনি বলেন, নতুন পরিবহন আইনের কিছু কিছু ধারা শ্রমিক তথা চালকদের ক্ষেত্রে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। তাই এধারাগুলো পরিবর্তনের দাবিতে শ্রমিকরা আন্দোলন করছে। এ কারণে সড়ক পথে কোন গণপরিবহন চলাচল করছেনা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে।

এদিকে নীলফামারী জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক মোজাম্মেল হক মুঠোফোনে বলেন, আমরা মালিকরা গণপরিবহন চালাতে সর্বদা প্রস্তুত আছি। কিন্তু শ্রমিকরা না চালালে আমাদের কিছুই করার নেই।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ