শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

৭০ হাজার শিক্ষার্থীর থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করেছে নোয়াখালীবাসী

মুজাহিদুল ইসলাম সোহেল, নোয়াখাল থেকে : জেলা শহর ছাড়াও সুবর্ণচরবাসীর অতিথি বরণে সব আয়োজন সম্পন্ন। কোনো ঘাটতি না রাখতে অনুষ্ঠিত হয়েছে একাধিক প্রস্তুতি সভা। স্বেচ্ছাসেবকদের দেওয়া হয়েছে নির্দেশনা। এখন শুধু অতিথির অপেক্ষা। এই অতিথিরা হলেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা শিক্ষার্থী ও তাঁদের অভিভাবকেরা। তাঁদের ভর্তি পরীক্ষার সময় বিনা খরচে থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

আজ শুক্রবার ও পরদিন শনিবার নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ছাড়াও জেলার ২৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৫৯টি কেন্দ্রে এ ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬টি ইউনিটের ৩০টি বিভাগে মোট ৬৮ হাজার ৭৬০জন পরীক্ষার্থী প্রতি সিটে বিপরীতে ৫৯জন ভর্তিযুদ্ধে অবতীর্ণ হবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এই অতিথিদের জন্যই সকল ব্যস্ততা এখন নোয়াখালীবাসীর। গত বছরও একইভাবে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। এবারও ৭০ হাজার জনের জন্য ব্যবস্থা রয়েছে। 

পরীক্ষার সময়সূচি হিসেবে আজ বৃহস্পতিবার পরীক্ষার্থীদের নোয়াখালী শহরে আসার কথা থাকলেও অনেকে গতকাল বুধবার থেকেই আসতে শুরু করেছেন। তাদেরকে নোয়াখালী পৌরসভার গেস্টরুমে থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

গত মঙ্গলবার নোয়াখালী পৌরসভা এবং গতকাল নোয়াখালী সদর উপজেলা পরিষদ ও জেলা রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি পৃথক সমন্বয় সভা করে নিজ নিজ সংস্থার উদ্যোগে নেওয়া পদক্ষেপ উপস্থাপন করে। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক দিদার-উল আলম। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক তন্ময় দাস ও পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন।

 পৌরসভার সমন্বয় সভায় মেয়র শহিদ উল্যাহ খান বলেন, ভর্তি পরীক্ষাকে সামনে রেখে পরীক্ষার্থী ও তাঁদের অভিভাবকেরা ৩১ অক্টোবর সকাল থেকে নোয়াখালী আসতে শুরু করবেন। গভীর রাত পর্যন্ত পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা আসবেন। অনেকে গতকাল থেকেও আসতে শুরু করেছেন। তিনি বলেন, ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও তাঁদের অভিভাবকদের বিনা খরচে থাকা-খাওয়া, কেন্দ্রে যাতায়াত, প্রাথমিক চিকিৎসা, নিরাপত্তাসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পৌরসভার পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। 

মেয়র বলেন, পৌরসভা থেকে ৪০০ জন স্বেচ্ছাসেবক থাকবে পরীক্ষার্থীদের সহযোগিতায়। রাখা হবে ৬টি বুথ। প্রতিটি বুথে থাকবে ৩০ জন করে স্বেচ্ছাসেবক। শহরের স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা (যেগুলোতে পরীক্ষার কেন্দ্র থাকবে না), মসজিদ, বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে বিনা মূল্যে রাখা হবে শিক্ষার্থীদের। ১০০টি মোটরসাইকেল থাকবে শিক্ষার্থীদের কেন্দ্রে পৌঁছে দিতে। 

এ ছাড়া সাংসদ মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরীর উদ্যোগে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের চৌমুহনী থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস পর্যন্ত বিভিন্ন  কেন্দ্রে যাতায়াতের জন্য ৬০টি বাস দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন কেন্দ্রের কাছে রাখা হবে খাবার পানির ব্যবস্থা। 

একইভাবে সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম সামছুদ্দিনের উদ্যোগে ছয় হাজার খাবারের প্যাকেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ছাড়া ছাত্রীদের জন্য পরিষদ মিলনায়তনসহ কয়েকটি স্থানে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখানে প্রায় দেড় হাজার ছাত্রী রাতে থাকতে পারবেন বলে জানিয়েছেন এ কে এম সামছুদ্দিন।

অপরদিকে জেলা রেড ক্রিসেন্টের সাধারণ সম্পাদক শিহাব উদ্দিন জানিয়েছেন,রেড ক্রিসেন্টের উদ্যোগে ১০০ জন স্বেচ্ছাসেবক দুইটি শিফটে দায়িত্ব পালন করবেন। তাঁরা ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থীদের কেন্দেৎ পৌঁছে দেওয়াসহ বিভিন্ন তথ্য ও সেবা দিয়ে সহযোগিতা করবেন। 

সভায় জেলা প্রশাসক তন্ময় দাস বলেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব আবাসিক হোটেল, যাত্রীবাহী বাসের মালিক ও খাবারের দোকানকে অতিরিক্ত মূল্য না রাখার বিষয়ে অনুরোধ জানানো হয়েছে। সকলের কাছ থেকে এ বিষয়ে সহযোগিতার আশ্বাস তাঁরা পেয়েছেন। এরপরও কেউ যাতে অতিরিক্ত ভাড়া কিংবা কোনোভাবে বাইরে থেকে আসা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাছ থেকে কোনো ধরনের ফায়দা লুটতে না পারেন সেটি তদারকের জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে একাধিক টিম কাজ করবে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ