শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

রাজধানী অচল করে দেয়ার হুমকি হকারদের

গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ হকার্স ইউনিয়নের উদ্যোগে পুনর্বাসন ছাড়া হকার উচ্ছেদ না করার দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয় -সংগ্রাম

স্টাফ রিপোর্টার : আজকের (মঙ্গলবার) পর থেকে আবারও যদি হকারদের প্রতি অত্যাচার, গ্রেফতার, হামলা, দমন-পীড়ন চালানো হয় তবে ঢাকা মহানগরীকে অচল করে দেয়া হবে বলে হুমকি দিয়েছে বাংলাদেশ হকার্স ইউনিয়ন।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে বিক্ষুব্ধ হকাররা মিছিল নিয়ে এসে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ করে এ হুমকি প্রদান করেন। পুনর্বাসন ছাড়া হকার উচ্ছেদের প্রতিবাদে এবং হকার ব্যবস্থাপনা জাতীয় নীতিমালা প্রণয়ের দাবিতে এ সমাবেশ করা হয়।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ হকার্স ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুল হাশেম কবির, সাধারণ সম্পাদক সেকেন্দার হায়াৎ, কার্যকরী সভাপতি মুর্শিকুল ইসলাম শিমুল, সহ-সভাপতি আবুল কালাম, মো. শহীদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জসিম প্রমুখ।
সমাবেশে সেকেন্দার হায়াৎ বলেন, আমরা গতবার ধারাবাহিকভাবে চার মাস আন্দোলন-সংগ্রামের করে ফুটপাতে আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছিলাম। প্রথম রমজানে হকাররা ঢাকা শহর অবরোধ করেছিল। প্রধানমন্ত্রী সংসদে দুই সিটি কর্পোরেশনকে নির্দেশ দিয়েছিলেন- পুনর্বাসনের আগ পর্যন্ত হকাররা ফুটপাতে বসবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, শুক্র ও শনি দুইদিন হকাররা পূর্ণদিবস ফুটপাতে বসবে। আর বাকি পাঁচদিন বেলা ৩টা থেকে। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পর পুলিশ-প্রশাসন এভাবেই আমাদের ফুটপাতে বসিয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ করে দেশে কী হলো যে আমাদের উচ্ছেদ করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী তো তার নির্দেশনা উঠিয়ে নেননি।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ফুটপাত যেমন জনগণের তেমনি হকারের। জনগণ ফুটপাতে নির্বিঘ্নে হাঁটাহাঁটি করবে। একইসঙ্গে হকাররাও একপাশে বসবে। কিন্তু ফুটপাতে নাকি চাঁদাবাজির অজুহাতে আমাদের উচ্ছেদ করা হচ্ছে। চাঁদাবাজির সঙ্গে সরকারের এমপি-মন্ত্রী ও সরকরি দলের অঙ্গসংগঠনের নেতারা জড়িত।
আমরা বাংলাদেশ হকার্স ইউনিয়নের পক্ষ থেকে বলেছি, ফুটপাতে সবধরনের চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে। পুনর্বাসনের জন্য আমরা যারা ফুটপাতে ব্যবসা করি সরকারকে তারা টাকা দিতে চায়। হকারদের একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা করে মাসিক বা সাপ্তাহিক ভিত্তিতে টাকা জমা দিতে চায় এবং সেই টাকার সঙ্গে যদি সরকারি অনুদান যোগ করেন তাহলে প্রতি বছর হাজার হাজার হকারকে পুনর্বাসন করতে পারবেন। কিন্তু সরকার এবং সিটি কর্পোরেশন এ পথে হাঁটছে না।
সরকারের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, আপনারা পুনর্বাসন করতে না পেরে হকারদের উচ্ছেদ করছেন, মামলা দিচ্ছেন, জুলুম-নির্যাতন করছেন। এসব হকাররা মেনে নেবে না। ঢাকা মহানগরীতে প্রায় চার লাখ হকার রয়েছে। আর এদের পরিবারসহ প্রায় ২০ লাখ মানুষ ঢাকায়। ২০ লাখ মানুষকে বাদ দিয়ে ঢাকা শহরে উন্নয়ন সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক আমরা ফুটপাতে বসেছি। আজকের পরও যদি আর কোনো হকার ভাইয়ের ওপর দমন-পীড়ন, নির্যাতন করে আমরা সব ঐক্যবদ্ধভাবে সেটি প্রতিহত করব। একজন হকারকে যদি গ্রেফতার করা হয়, তাহলে হাজার হাজার হকার এক হয়ে সেটি মোকাবিলা করতে হবে। হকাররা ঐক্যবদ্ধ থাকলেই কেউ আমাদের দমাতে পারবে না।
সেকেন্দার হায়াৎ বলেন, আমরা আজকে আমাদের আন্দোলনের সূচনা করেছি। এরপরও যদি হকারদের প্রতি অত্যাচার চলে তাহলে আমরা আন্দোলন ঘোষণা করে ঢাকা শহরকে অচল করে দেব। কিন্তু আমরা সে দিকে যেতে চাই না। তবে আপনারা হকারদের ওপর আর নির্যাতন চালাবেন না। আজ আমাদের হকার ভইয়েরা যে যেখানে বসতেন, বিকেল ৩টা থেকে সেখানে বসেই ব্যবসা করবে। কোনো ধরনের হামলা, দমন-পীড়ন করা হলে এর পরিস্থিতি ভয়াবাহ আকার ধারণ করবে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ