মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

একের পর এক ছাত্র হত্যার লাইসেন্স ছাত্রলীগকে কে দিয়েছে? -ছাত্রশিবির

ছাত্রলীগ সন্ত্রাসী কর্তৃক বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ইলেকট্রিকাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদকে নির্মমভাবে হত্যার তীব্র নিন্দা এবং অবিলম্বে খুনি ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।
গতকাল সোমবার দেয়া যৌথ বিবৃতিতে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ড. মোবারক হোসাইন ও সেক্রেটারি জেনারেল সিরাজুল ইসলাম, বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদের হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতকরণ ও সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানান। তারা বলেন, বিচারহীনতার কারণেই সন্ত্রাসী খুনি ছাত্রলীগের বিভৎস রুপ জাতিকে আরেকবার দেখতে হলো। ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা রোববার রাত ৮টার দিকে বুয়েটের নিরীহ ও মেধাবী ছাত্র আবরারকে শেরেবাংলা হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে ডেকে নিয়ে নির্মমভাবে নির্যাতন করে হত্যা করে। এ বর্বর ঘটনায় নেতৃত্ব দিয়েছে বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল ও সহ-সভাপতি মুস্তাকিম ফুয়াদসহ ছাত্রলীগের ৭-৮জন নেতা। ফেসবুকে বাংলাদেশের স্বার্থে কথা বলে স্ট্যাটাস দেয়ার অপরাধে (!) শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন মেধাবী ছাত্রকে নির্মমভাবে হত্যায় গোটা জাতি স্তম্ভিত ও ক্ষুব্ধ। জাতি জানতে চায় কোন অপরাধে হত্যা করা হলো একজন সম্ভাবনাময় মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদকে? এভাবে একের পর এক ছাত্র হত্যার লাইসেন্স ছাত্রলীগকে কে দিয়েছে?
নেতৃবৃন্দ বলেন, ছাত্রলীগের এমন বর্বরতা নতুন নয়। এর আগেও বুয়েটে ফাহাদের মত মেধাবী ছাত্রদের উপর নির্মম নির্যাতন চালিয়েছে ছাত্রলীগ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র আবু বকরসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অসংখ্য ছাত্রকে খুন করেছে ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীরা। শুধু বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীই নয়, তাদের হত্যাযজ্ঞ থেকে সাধারণ মানুষও রেহাই পায়নি। এমনকি মায়ের পেটে থাকা শিশুকেও এই হায়েনারা গুলীতে ঝাঝড়া করে দিয়েছে। ক্যাম্পাসগুলোকে সন্ত্রাসের আখড়ায় পরিণত করেছে তারা। হলগুলোকে টর্চারসেলে পরিণত করেছে। একেকটা হল যেন একেকটা মিনি ক্যান্টনমেন্টে পরিণত হয়েছে। এমনকি গতরাতে ফাহাদকে যে রুমে নির্যাতন করা হয়, ছাত্রলীগ নেতাদের সেই রুমে চাপাতি-স্ট্যাম্প-মদের বোতল পাওয়া গেছে। ছাত্রলীগের এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড লোকচক্ষুর আড়ালে হচ্ছে না। ছাত্রলীগের সন্ত্রাস সম্পর্কে সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সমানভাবে অবগত। সবই ঘটছে পুলিশ ও প্রশাসনের সামনে। কিন্তু এখন পর্যন্ত ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের বর্বরতার নূনতম শাস্তি হয়নি। উল্টো ছাত্রলীগের নারকীয় তান্ডবে নিরব থেকে প্রশাসন তাদের অপকর্মে উৎসাহ যোগাচ্ছে।
নেতৃবৃন্দ হুঁশিয়ার করে বলেন, অবৈধ সরকারের মদতে ছাত্রলীগ একের পর এক নৃশংসতা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু প্রতিটি হত্যাকান্ডের পর রাজনৈতিক বিবেচনায় খুনিরা থেকে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে। সরকারের এই দায়িত্বহীন, লজ্জাজনক ভূমিকা ছাত্রলীগকে দিনদিন আরও বেপরোয়া করে তুলেছে। তাদের এহেন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ছাত্রসমাজ আর মেনে নিতে পারেনা। ছাত্রসমাজ তাদের জান-মাল সন্ত্রাসী খুনি ছাত্রলীগের কাছে লিজ দেয়নি।
শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে নিরাপত্তার সাথে পড়ালেখা করতে চায়। খুনীদের বিচারের মাধ্যমেই সন্ত্রাসীদের রুখে দেওয়া সম্ভব। তাই নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে চিহ্নিত খুনি ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন। একই সাথে সকল ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের সন্ত্রাস বন্ধ করে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবি জানান।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ