শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

চলতি বছরে ২০ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্সের আশা অর্থমন্ত্রীর

স্টাফ রিপোর্টার: অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, প্রতি বছর ১৫ থেকে ১৬ বিলিয়ন রেমিট্যান্স আসতো। তবে বর্তমানে রেমিট্যান্সে যে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হচ্ছে তাতে এবার ২০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে বলে আশা করছি।
গতকাল সোমবার রাজধানীর কাকরাইলের আইডিইবিতে বাংলাদেশ ব্যাংক রেমিট্যান্স অ্যাওয়ার্ড-২০১৮ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আসাদুল ইসলাম, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সেলিম রেজা এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামাল। এছাড়া বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী, অনিবাসী বাংলাদেশিদের পরিবারের সদস্যরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, রেমিট্যান্সের বিপরীতে ২ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা দেয়া শুরু হয়েছে। এছাড়া ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠানো সহজ ও হ্যাসেল ফ্রি করতে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রবাসীদের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির সব সূচক নেগেটিভ হলেও রেমিট্যান্সের সূচক নেগেটিভ হবে না। কারণ এর বিশ্ববাজার অনেক বড়। যেখানে পোশাকে বিশ্ববাজারের আকার হচ্ছে ৪০০ বিলিয়ন ডলার সেখানে রেমিট্যান্সের বিশ্ববাজারের আকার হচ্ছে ১ হাজার ৮১২ বিলিয়ন ডলার।
তিনি বলেন, বিশ্ব এখন চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের দারপ্রান্তে। তাই আমাদেরও এর সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। যারা বিদেশে যাবেন তাদের অবশ্যই প্রশিক্ষণ নিয়ে যেতে হবে। কারণ অদক্ষ বা ইংরেজি না জানার কারণে আমাদের লোকজন একই কাজ করলেও অনেক দেশের তুলনায় কম বেতন পেয়ে থাকে।
মুস্তফা কামাল বলেন, সারা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স আহরণ করে ভারত। যার পরিমাণ প্রায় ৮০ বিলিয়ন ডলার। এরপর দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে শ্রীলঙ্কা, এরা বছরে ৬৭ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স অর্জন করে। অথচ আমরা বছরে মাত্র ১৫-১৬ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স আহরণ করি। রেমিট্যান্স বাড়ানোর বিষয়ে আমাদের আরও নজর দিতে হবে।
প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমি আশা করি আপনারা রেমিট্যান্সের পরিমাণ বাড়াতে পারবেন। রেমিট্যান্স বাড়ানোর বিষয়ে যতভাগে সহযোগিতা দরকার তা সরকার দেবে।
অর্থমন্ত্রী প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনার বিদেশের ব্যাংকে অর্থ রাখলে সেসব ব্যাংকে আপনাদেরই ফি দিতে হয়। বাংলাদেশের ব্যাংকে টাকা রাখলে ফি তো নেয়া হয় না উল্টো উচ্চহারে সুদ দেয়া হয়। সুতরাং আমাদের ওপর আস্থা রাখুন। আপনাদের আমানতের কোনো ক্ষতি হতে দেব না।
তিনি বলেন, আর কিছুদিন বিদেশে থেকে আমাদের সহযোগিতা করুন। এরপর আর বিদেশে থাকতে হবে না। আমরা ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরির পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। এগুলো বাস্তবায়ন হলে আর বিদেশে থাকতে হবে না। দেশে এসে তখন আপনারা ব্যবসা করবেন। মানুষকে কাজ দেবেন। ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রস্তুত হলে ১০ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হবে। তাই আশা করছি আগামী ১০ বছরে প্রতিটি পরিবারের অন্তত একজনকে একটি মানসম্পন্ন চাকরি দিতে পারবো।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রবাসী বাংলাদেশিদের ব্যাংকিং চ্যানেলে বৈদেশিক মুদ্রা প্রেরণের জন্য সম্মানিত ও অনুপ্রাণিত করতে এবং অধিক পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা প্রেরণে উৎসাহিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের আয়োজনে ২০১৪ সাল থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক রেমিট্যান্স অ্যাওয়ার্ড প্রবর্তন করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় এবার ৬ষ্ঠ বারের মতো এ অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়েছে। এবারের আয়োজনে ৫টি ক্যাটাগরিতে যথা-সাধারণ পেশাজীবী, বিশেষজ্ঞ পেশাজীবী, ব্যবসায়ী, রেমিট্যান্স আহরণকারী ব্যাংক ও রেমিট্যান্স প্রেরণকারী অনিবাসী বাংলাদেশি মালিকানাধীন এক্সচেঞ্জ হাউজকে মোট ৩৬টি অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ