শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

বৈধ কোনো প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালানো হচ্ছে না

স্টাফ রিপোর্টার : জুয়া, ক্যাসিনোকে অবৈধ উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, বৈধ কোনো প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালানো হচ্ছে না। বিভিন্ন ক্লাবে জুয়ার আসরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান নিয়ে জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর ক্ষোভ প্রকাশের প্রতিক্রিয়ায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গতকাল সোমবার তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর বার্তা পাওয়ার পর গত বুধবার থেকে ঢাকার বিভিন্ন ক্রীড়া ক্লাবে অভিযান চালাচ্ছে র‌্যাব, যাতে ক্লাবগুলোতে অবৈধ ক্যাসিনোও মেলে।
ঢাকার পাশাপাশি চট্টগ্রামে অভিযান চললেও একটি ক্লাবে ক্যাসিনো পাওয়ার কথা জানায় র‌্যাব। বাকিগুলোতে তাসের প্যাকেট পাওয়া যায়। চট্টগ্রামের ক্রীড়া ক্লাবগুলোতে অভিযানে রোববার ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী, যিনি চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেডের মহাসচিবও। “ক্যাসিনোর বিরুদ্ধে, মদের বিরুদ্ধে, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অভিযান চলবে। কিন্তু জুয়ার নামে ক্লাবগুলোতে অভিযান মানা যায় না,” বলেন তিনি। তিনি আরও বলেন, “যেসব ক্লাবে সদস্য এবং তাদের বন্ধুরা এসে কার্ড খেলে ক্লাবকে কিছু ডোনেট করে, সেটা যদি বাধাগ্রস্ত করা হয়, তাহলে ক্লাব বন্ধ হয়ে যাবে। এটা চলতে থাকলে খেলাধূলা বন্ধ হয়ে যাবে। ছেলেপেলেরা বিপথগামী হবে।”
হুইপের বক্তব্যের প্রতিক্রয়া জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, “আমরা তো অবৈধ ব্যবসা ছাড়া বৈধ কোনো প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালাইনি। ক্যাসিনো, জুয়া খেলা অবৈধ।“বৈধ খেলা যেগুলি সেগুলিতে আমাদের কেউ হানা দেবে না, আমার জানা মতে দিচ্ছেও না।”
ক্যাসিনো চালানোয় ঢাকার ফকিরাপুলের ইয়ংমেন্স ক্লাবের সভাপতি যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় যুবলীগ ঢাকা দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের নাম উঠে আসলেও তিনি এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছেন।
সম্রাট কোথায় আছেন এ প্রশ্নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, "কে কোথায় আছেন সেটা বড় কথা নয়। সবচেয়ে বড় কথা হল কে কতখানি অপরাধ করেছে। যারাই অপরাধ করেছেন, সে রাজনীতিবিদ হোক কিংবা যেই হোক, তাকে আমরা চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসছি।“নাম যেটা বলেছেন তো বলছেনই, কিন্তু নাম ছাড়া যারা আছেন, আপনারা চিহ্নিত করেননি; তাদেরকে তো আমরা নিয়ে আসছি। মোট কথা যে অপরাধ করবে, আইনের চোখে সে অপরাধী। তাকে আমরা আইনের আওতায় নিয়ে আসব।”তিনি বলেন, "গডফাদার, গ্র্যান্ডফাদার আমাদের কাছে কিছু নেই। আমরা চিনি অপরাধী। অপরাধী যেই হোক আইনের আওতায় নিয়ে আসব।"
সরকারের কাছে চুনোপুঁটি এবং রাঘব বোয়াল বলতে কিছু নেই জানিয়ে তিনি বলেন, "আমাদের কাছে সবাই সমান। রাঘব বোয়াল যদি অপরাধ করে থাকে তাকেও আমরা ধরছি। আপনারা দেখছেন আমরা মাননীয় সংসদ সদস্যদেরও বাদ দিচ্ছি না। এমন একটি উদাহরণ উপস্থাপন করতে পারবেন না যে তাকে (রাঘব বোয়াল) বাদ দেওয়া হয়েছে।”
অপরাধীদের বিদেশ যাওয়া ঠেকাতে বিমানবন্দরগুলোতে সতর্কতা জারির কোনো সম্ভাবনা নেই জানিয়ে তিনি বলেন, "সেখানে সবসময় আমাদের একটি টিম কাজ করে। বিচারকার্যে যাদের নাম থেকে যায় কিংবা কোনো অপরাধীদের, তাদের তালিকা কিন্তু বিমানবন্দর এবং ইমিগ্রেশনের সবগুলি পয়েন্টে থাকে।"
দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থেকেও কেন এতদিন এসব অবৈধ ব্যবসা নজরে আসেনি জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “যখনই আমাদের নজরে আসে তখনই আমরা ধরছি। শুধু দুই-একদিনের মধ্যে হয় তো একজন দুইজন উল্লেখযোগ্য আপনাদের চোখের সামনে আসছে।“এর আগে আমরা কিন্তু সব সময় যার নাম আসছে কিংবা অবৈধ কিছু করার চেষ্টা করছে তাকে আইনের আওতায় নিয়ে এসেছি।”সারা দেশেই এ অভিযান চলবে বলেও জানান তিনি।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ