শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

রৌমারী টু জামালপুর ইয়াবা পাচারের নতুন রুট

জামালপুর সংবাদদাতা, ১৪ সেপ্টেম্বর : ইয়াবার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেও তা বন্ধ করতে না পারায় ধারণা করা হচ্ছিল, অভিযানের মুখে টেকনাফে ইয়াবার চিহ্নিত রুট বদলে ফেলেছে মাদক কারবারিরা। শেষ পর্যন্ত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সেই অনুমানই সত্যি হচ্ছে। সম্প্রতি ঢাকায় বিপুল সংখ্যক ইয়াবাসহ ভারতীয় এক নাগরিককে গ্রেফতারের পর এর নতুন রুট নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছেন গোয়েন্দারা। ভারতের আসাম সীমান্ত গলিয়ে নতুন ৪টি পয়েন্টে আসছে ইয়াবা। কুড়িগ্রামের রৌমারী টু জামালপুর মহাসড়কটিকে ইয়াবা পাচারের নতুন রুট বানিয়েছে আন্তর্জতিক ইয়াবা পাচার চক্র। এ রুটে একাধিক হাতবদল হয়ে রাজধানীসহ দেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করছে ইয়াবার বড় বড় চালান।প্রতিদিনই বিপুল পরিমাণ ইয়াবা সীমান্ত গলিয়ে নতুন পদ্ধতিতে ও নতুন রুটে আসছে বাংলাদেশে।গ্রেপ্তার মাদক কারবারিদের দেওয়া তথ্য মতে, সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়ার ওপর দিয়ে ভারতীয় অংশ থেকে ইয়াবার চালান তুলে দেওয়া হয় বাংলাদেশি চোরাচালানিদের হাতে। এখান থেকে ইয়াবার চালান চলে যায় সারা দেশে। সীমান্তবাসী এবং ইয়াবা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে ইয়াবা পাচারের ভয়াবহ তথ্য। স্থানীয় এক ইয়াবা ব্যবসায়ীর তথ্য মতে, রৌমারী সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে প্রতিদিন চার থেকে পাঁচ লাখ ইয়াবা ঢোকে বাংলাদেশে। জামালপুরের দুই উপজেলা বকশীগঞ্জ ও দেওয়ানগঞ্জ এবং কুড়িগ্রামের উলিপুর, নাগেশ্বরী, রাজিবপুর ও রৌমারী উপজেলায় অনুসন্ধান এবং সীমান্তঘেঁষা অঞ্চলগুলোর লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সীমান্তঘেঁষা অঞ্চলগুলোতে হুন্ডি ব্যবসারীরাই এই ইয়াবা পাচারের সাথে জড়িত। বাংলাদেশী ইয়াবা সিন্ডিকেটের হুন্ডির টাকা যাচ্ছে ভারতে, বিনিময়ে ইয়াবা পাঠাচ্ছে সেখানকার মাদক কারবারীরা। ভারতের আসামের সীমান্তঘেঁষা কুড়িগ্রামের ৪টি উপজেলা ও জামালপুরের দুই উপজেলার সীমান্তের কাঁটাতার গলিয়ে স্থলপথে ও নদীপথে আসছে ইয়াবার চালান। পরিবহনে সহজতর ও অধিক লাভজনক হওয়ায় বাংলাদেশের সীমান্ত ঘেঁষে গড়ে উঠেছে ইয়াবার শক্তিশালী নেটওয়ার্ক। এই নেটওয়ার্কের মধ্যে ইয়াবার ট্রানজিট পয়েন্ট কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলা। জেলার রৌমারীসহ উলিপুর, নাগেশ্বরী ও রাজিবপুর উপজেলার সীমান্তের ওপার থেকে আসা ইয়াবার ডাম্পিং স্টেশন রৌমারী হয়ে রৌমারী টু জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ-বকশীগঞ্জ-ঢাকা রুটে নানা পরিবহনে ও নানা কায়দায় রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ছে ইয়াবা। পাচারের ক্যারিয়ার হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে নারী, শিশুসহ নানা বয়সের সীমান্ত এলাকার দরিদ্র মানুষ। ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে ভাড়ায় খাটা এসব নারী-পুরুষ ও শিশু-কিশোররা রাজধানীসহ নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছে দিচ্ছে ইয়াবার চালান। ইয়াবা পাচারের নতুন রুট রৌমারী সীমান্তের নাম প্রকাশ হওয়ার পর নড়েচড়ে বসছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি। সীমান্ত টহলে কড়াকড়ি চলছে। জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বিজিবির উদ্যোগে সমাবেশ করা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে ৩৫ বিজিবি জামালপুর ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে শনিবার রৌমারীর ভোলা মোড় চত্বরে বিশাল সমাবেশ করেছি। এতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন এমপি উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া ইয়াবা পাচার বন্ধ করতে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফকে তৎপরতা বাড়াতে বলা হবে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ