শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

পবিত্র আশুরার করণীয় ও বর্জনীয়

মানসুরা আল আযাদ : মহররম মাস পবিত্র মাস গুলোর অন্যতম একটি মাস, আর এ মাসে আশুরার গুরুত্ব সম্পর্কে আল্লাহর রাসূল (সা:) বিশেষভাবে তাকিদ দিয়েছেন।
সামনে ১০ তারিখ পবিত্র আশুরা। তাই আসুন এর গুরুত্ব ও বর্জনীয় দিকগুলো জেনে নেই।
পবিত্র আশুরার রোজা সম্পর্কে বিভিন্ন হাদীসে এর গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে-
রাসূল (সা:) ইরশাদ করেছেন- “রমজানের পর যদি তোমরা রোজা রাখতে চাও, তবে মহররম মাসে রোজা রাখো, কেননা এটি আল্লাহর মাস। এ মাসে এমন একটি দিন রয়েছে যেদিন আল্লাহ তায়ালা একটি সম্প্রদায়ের তওবা কবুল করেছেন। (আশা করা যায়) সেদিন অন্যান্য সম্প্রদায়ের তওবাও কবুল করা হবে।” (তিরমিজি শরিফ : ৭৪১)
“হযরত ইবনে আব্বাস (রা:) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা:) আশুরা ও রমজানের রোজা সম্পর্কে যেরূপ গুরুত্বারোপ করতেন, অন্য কোন রোজা সম্পর্কে রাসূল (সা:)-কে সেরূপ গুরুত্ব প্রদান করতে দেখিনি।” (-বোখারি : ২০০৬, মুসলিম : ১১৩২)
“হযরত আবু কাতাদা (রা:) সূত্রে বর্ণিত, রাসূল (সা:) ইরশাদ করেছেন, আশুরার দিনের রোজার ব্যাপারে আমি আল্লাহর কাছে আশাবাদী যে তিনি এর ফলে পূর্ববর্তী এক বছরের গুনাহ মাফ করে দেবেন।” (মুসলিম : ১১৬১, তিরমিজি : ৭৪৯)
“হযরত আবু মুসা আশয়ারী (রা:) বলেন, আশুরার দিন ইহুদিরা ঈদ পালন করত, রাসূল (সা:) সেদিন সাহাবিদের রোজা রাখার নির্দেশ দিলেন।” (বোখারি : ২০০৫, মুসলিম : ১১৩১)
“হযরত সালামা বিন আকওয়া (রা:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করিম (সা:) আসলাম গোত্রের এক ব্যক্তিকে লোকজনের মধ্যে এ মর্মে ঘোষণা দিতে আদেশ করলেন, যে ব্যক্তি আহার করেছে, সে যেন দিনের অবশিষ্ট অংশে পানাহার বর্জন করে। আর যে ব্যক্তি আহার করেনি, সে যেন রোজা পালন করে। কেননা আজকের দিন আশুরার দিন।” (উল্লেখ্য, শুধু এ একটি দিনকে নিদিষ্ট করে রাসূল (সা:) রোজা রাখতে বারণ করেছেন, এর আগে-পিছে আরো একটি রাখার তাগিদ দেওয়া হয়েছে, তাই এর আগে অর্থাৎ ৯-ই মহররম রোজা রাখা উত্তম, এ রোজা মুস্তাহাব) (বোখারী : ২০০৭, মুসলিম : ১১৩৫)
#আশুরায় বর্জনীয় :
বর্তমানে আশুরাকে ঘিরে অনেক কু-সংস্কার ও মারাত্মক অনৈসলামিক কাজকর্ম করা হয়! তার মাঝে তাজিয়া, শোকগাঁথা পাঠ, শোক পালন, মিছিল ও র‌্যালি বের করা, শোক প্রকাশার্থে শরীরকে রক্তাক্ত করা ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত।
- তা’যিয়া বানানো অর্থাৎ, হযরত হুসাইন রাযি. এর নকল কবর বানানো। এটা বস্তুত এক ধরণের ফাসেকী শিরকি কাজ।
- মর্সিয়া বা শোকগাঁথা পাঠ করা : এর জন্য মজলিস করা এবং তাতে অংশগ্রহণ করা সবই নাজায়েজ। (ইমদাদুল ফাতাওয়া : ৫/২৯৪, কিফায়াতুল মুফতী : ৯/৩২, ৪২)
- ‘হায় হুসেন’, ‘হায় আলী’ ইত্যাদি বলে বলে বিলাপ ও মাতম করা এবং ছুরি মেরে নিজের বুক ও পিঠ থেকে রক্ত বের করা!
এগুলো করনেওয়ালা, দর্শক ও শ্রোতা উভয়ের প্রতি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম অভিসম্পাত করেছেন। (আবূ দাউদ, হা: নং ৩১২, ইবনে মাজাহ: হা: নং ১৫৮৪)
- কারবালার শহীদগণ পিপাসার্ত অবস্থায় শাহাদতবরণ করেছেন তাই তাদের পিপাসা নিবারণের জন্য বা অন্য কোন বিশেষ উদ্দেশ্যে এই দিনে লোকদেরকে পানি ও শরবত পান করানো। (ইমদাদুল ফাতাওয়া : ৫/২৮৯, কিফায়াতুল মুফতী : ৯/৪০)
- শোক প্রকাশ করার জন্য কালো ও সবুজ রঙের বিশেষ পোশাক পরিধান করা। (ফাতাওয়ায়ে রহীমিয়া : ২/৩৪৪)
আল্লাহ আমাদের সকল বিদআত থেকে পরিত্রাণ করে তার সন্তুষ্টচিত্ত হওয়ার জন্য কবুল করুন। (পরিমার্জিত ও রিপোস্ট)

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ