বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
Online Edition

চৌহালীতে মৃত্যুর আগেই কবরস্থানে বসবাস

ভ্রাম্যমাণ সংবাদদাতা : যমুনার ভাঙনে বসতভিটা বিলীন হওয়ায় সিরাজগঞ্জের চৌহালীতে মৃত্যুর আগেই কবরস্থানে বসবাস শুরু করেছে হতভাগ্য কয়েকটি পরিবার। শতবছরের পুরনো মিটুয়ানী কবরস্থানে টিনের ঘর তুলে স্বপরিবারে বসবাস গড়ে তুলেছেন তারা। এছাড়া পাকা সড়ক যমুনা গ্রাস করায় কবরস্থানের মধ্যে দিয়ে স্কুল-কলেজ গামী শক্ষার্থীসহ পথচারীরা অবাধে যাতায়াত করছে। স্থানীয়রা নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের পূর্ণবাসনের দাবি জানিয়ে দ্রুত কবরস্থানের পবিত্রতা রক্ষায় ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার দাবি জানিয়েছেন। বৃহস্প্রতিবার দুপুরে স্থানীয়রা জানান, যমুনার রাক্ষুসী থাবায় বিগত ৫ বছরে চৌহালী উপজেলার খাষপুখুরিয়া থেকে বাঘুটিয়া ইউপি’র ভুতেরমোড় পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৫ কিলোমিটার এলাকায় অন্তত সাড়ে চার হাজার ঘরবাড়ি, ১৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, পাকা সড়ক শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ কয়েক হাজার একর ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়েছে। এবছর বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকেই যমুনার ভাঙনের তা-বলীলায় মিটুয়ানী ও খাষপুখুরিয়া এলাকায় প্রায় আড়াই শতাধিক বসত ভিটা নদী গর্ভে বিলীন হয়। এ কারণে শত শত পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়ে। এছাড়া কয়েকশ’ একর আবাদি জমি ও গাছপালা হারিয়ে মাথা গোজার ঠাঁই না পেয়ে নদীর পাশে অবস্থিত শতবছরের ঐতিহ্যবাহী মিটুয়ানী কবরস্থানের উপর বসবাস শুরু করেছে স্থানীয় কয়েকটি ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার। শুধু বসবাসই নয় কবরস্থান গৃহস্থলী কাজ ও যাতায়াতের জন্য সড়ক হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। 

এবিষয়ে কবরস্থানে আশ্রয় নেয়া বয়োবৃদ্ধ আতর আলী জানান, প্রয়োজন কোন আইন মানে না। ধর্মীয় বিধান বর্হিভূত হলেও কোন পথ না পেয়ে কবরস্থানেই ভাঙ্গাঘর তুলেই বসবাস করে আসছি। বসত ভিটা যখন ছিল তখন একা একা কবরস্থানে যেতেই ভয় পেতাম। আর এখন বাধ্য হয়ে বসবাস করি। তবে স্থানীয় ইউপি সদস্য রবিউল ইসলাম বলেন, যদিও বসত ভিটা হারানোদের নিদারুন কষ্ট, তারপরও কবরস্থানের পবিত্রতা রক্ষায় তাদের উচিত হবে অন্যস্থানে বসবাস গড়ে তোলা। এবিষয়ে চৌহালী উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ সরকার জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের পূণঃবাসনের পরিকল্পনা সরকার গ্রহণ করলেও এখনো তা বাস্তবায়িত হয়নি। তাই স্কুল কলেজ মাঠ, পরিত্যক্ত জায়গা সহ কবরস্থানের মধ্যে বসবাস শুরু করেছে। তবে চৌহালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহা. আবু তাহির জানান, মিটুয়ানী কবরস্থানের ভিতরে কয়েকটি পরিবার টিনের ঘর তুলে বসবাস করছে একরম একটি খবর আমি জেনেছি। বসত ভিটা নদীতে বিলীন হওয়ায় মানবিক কারনে তাদের সুযোগ দিয়েছে স্থানীয়রা। তবে নদী ভাঙনে বিধ্বস্তদের পুর্ণবাসনের চেষ্টা চলছে। ব্যবস্থা হলে কবরস্থানে আশ্রয় নেয়াদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সুযোগ দেয়া হবে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ