সরকারিকরণের দাবিতে এক মাস ধরে রাস্তায় আন্দোলনকারী শিক্ষকরা
স্টাফ রিপোর্টার: জাতীয়করণ থেকে বাদপড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা টানা ৩০ দিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন সরকারিকরণের দাবিতে। লাগাতার এ আন্দোলনে ২২০ জন শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
গতকাল সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে রাস্তার পাশে ফুটপাতে বসে গত ১৩ দিন ধরে আমরণ অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। আন্দোলনে দুই শতাধিক শিক্ষক অসুস্থ হলেও অনেকে সুস্থ হয়ে আবারও আন্দোলনে যোগ দিচ্ছেন বলে বাংলাদেশ বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. শাহজাহান আলী সাজু দৈনিক সংগ্রামকে বলেন, ২৯ দিন ধরে শিক্ষকদের কীভাবে রাজপথে বসে দিন পার করতে হচ্ছে তা নিজ চোখে না দেখলে বোঝানো যাবে না। অনাহারে রাজপথে বসে দিন-রাত কাটাতে হচ্ছে। বৃষ্টিতে ভিজে গেলে সেই কাপড়ে বসে থাকতে হচ্ছে, নাওয়া-খাওয়া, ঘুম সব হারাম হয়ে গেছে। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে খোলা আকাশের নিচে ধুলাবালিতে বসে ডেঙ্গু মশার কামড় খেয়ে ছয়জন শিক্ষক ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। এছাড়া ৭ জন শিক্ষকের ডায়রিয়া হওয়ায় তাদের পার্শ্ববর্তী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ থেকে বাদপড়া সারাদেশের প্রায় ৪ হাজার প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক গত ৩০দিন ধরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিদ্যালয় জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রথম পর্যায়ে এসব শিক্ষক টানা ১৭ দিন অবস্থান কর্মসূচি পালন করলেও গত ১২ দিন ধরে তারা আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন। এসব প্রতিষ্ঠানে প্রায় ১৬ হাজার শিক্ষক রয়েছেন। তাদের মধ্যে এক হাজার ৩০০টির মতো প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের জন্য যাচাই-বাছাই করা হলেও তাদের বঞ্চিত করা হয়েছে বলে দাবি আন্দোলনকারীদের। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে বঞ্চিত প্রায় সহস্রাধিক নারী-পুরুষ শিক্ষক এ আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন। একাধিক নারী শিক্ষকের সঙ্গে শিশু-সন্তানরাও রয়েছে। খোলা আকাশের নিচে ফুটপাতে প্লাস্টিক বিছিয়ে মাথায় ফিতা আর ব্যানার ঝুলিয়ে জাতীয়করণের দাবিতে তারা প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত আন্দোলন করে চলেছেন। উল্লেখ্য, বাদপড়া ৪ হাজারের বেশি প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারিকরণের দাবিতে গতকাল রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ১৩ তম দিনের মতো আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন কয়েকশ শিক্ষক। সরকার সাফ বলে দিয়েছে যোগ্য সব প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারিকরণ করা হয়েছে। আর কোনও প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারিকরণ করা হবে না। দেশের কোথাও প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের দরকার হলে তার সরকার করবে। ব্যক্তি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠা করা কোনও প্রাথমিক বিদ্যালয় আর সরকারি করা হবে না।