শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে জ্বালানি মন্ত্রণালয় ঘেরাও বামজোটের

স্টাফ রিপোর্টার : গ্যাসের দাম কমানোর দাবিতে জ্বালানি মন্ত্রণালয় ঘোরাও করার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়েছে বামপন্থী দলগুলো। পরে আগামী ৫ দিনের মধ্যে গ্যাসের দাম না কমালে কঠিন আন্দোলন গড়ে তোলার হুমকি দেন বামপন্থী দলগুলোর নেতারা। সরকার গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত থেকে সরে না এলে কর্মসূচির মাধ্যমে সারাদেশ অচল করে দেয়া হবে। গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে গতকাল রোববার সমাবেশ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট।
রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাসের সামনে রাস্তা অবরোধ করে ৫টি বাম দল মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন শেষে জ্বালানি মন্ত্রণালয় ঘোরাও করতে গেলে পুলিশী বাধার সম্মুখিন হয়। এ সময় সচিবালয়ের পশ্চিম পাশে প্রেস ক্লাব সংলগ্ন রাস্তায় পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তির ঘটনাও ঘটে। সেখানে নেতা কর্মীরা বসে পড়ে প্রতিবাদ জানাতে থাকে। পরে সেখানে অবস্থান নিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, সিপিবি সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলম, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বজলুর রশীদ ফিরোজ, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাফি রতন, বাসদের (মার্ক্সবাদী) কেন্দ্রীয় পরিচালনা কমিটির সদস্য মানস নন্দী, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির লিয়াকত আলী প্রমুখ।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক মোশাররফ হোসেন নান্নু বলেন, সরকার গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করে জনজীবনকে অস্থির করে তুলেছে। গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির কারণে দেশে দ্রব্যমূল্যের দাম বেড়ে যাবে। কারখানার উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে, এর প্রভাব পড়বে সাধারণ জনগণের উপর। আমরা সরকারের এ সিদ্ধান্ত থেকে আবারও সরে আসার আহ্বান জানাই। তিনি বলেন, সরকার গণতন্ত্রকে নির্বাসনে পাঠিয়ে এখন সম্পদের অপব্যবহার করতে চায়। গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত থেকে সরকারকে সরে আসার জন্য সরকারকে ৭২ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়েছিলাম। তারা আমাদের কথা শুনেনি।
তিনি আরও বলেন, দেশের মানুষের জন্য গ্যাস অতিপ্রয়োজনীয় গ্যাসের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সব পণ্যের দাম বাড়বে, কারখানার উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে, এর প্রভাব পড়বে সাধারণ জনগণের ওপর। আমরা সরকারকে এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার আহ্বান জানাই। সরকার অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবহার ও গ্যাসের অপচয় রোধ করতে ব্যর্থ হচ্ছে। গ্যাসের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সব পণ্যের দাম বাড়বে। এরপরও সরকার নিজের অবস্থান পরিবর্তন না করলে ১৯ জুলাই ঢাকায় প্রতিনিধি সম্মেলন করে সারাদেশ অচাল করে দেওয়া হবে।
এর আগে রোববার (৭ জুলাই) অর্ধবেলা হরতাল শেষে নতুন এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু। তবে দাবি আদায় না হলে ১৯ জুলাই প্রতিনিধি সভা করে লাগাতার কর্মসূচি দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, সরকার সম্পূর্ণ অযৌক্তিকভাবে গ্যাসের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর মাধ্যমে তারা লুটপাটের মহোৎসব করতে চায়। আমরা এটা হতে দেব না। আমরা জনগণের দাবি আদায়ে সব সময় রাজপথে থাকব, গণমানুষের দাবি আদায় করব। সরকারের কাছে বিনীত অনুরোধ আপনাদের অবস্থান পরিবর্তন করুন, না হলে দুর্বার আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায় করা হবে।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, সরকার সম্পূর্ণ অযৌক্তিকভাবে গ্যাসের দাম বাড়ানোর কথা বলছে। বাসা-বাড়িতে কোনো সময়ই ৪৫ থেকে ৫০ ইউনিটের বেশি গ্যাস খরচ হয় না। বিদ্যুতে সিস্টেম লসের সম্ভাবনা না থাকলেও ক্ষমতাবানরা, আমলারা ১২ শতাংশ পর্যন্ত সিস্টেম লস দেখায়। আমাদের আজ শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দেওয়া হলো। আমরা সরকারকে আবারও তাদের অবস্থান থেকে সরে আসার আহ্বান জানাই।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ