মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

চিটাগাং চেম্বারের সাথে মত বিনিময়কালে হাইকমিশনার

বাংলাদেশে নবনিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার রীভা গাঙ্গুলী দাশ সম্প্রতি দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র বোর্ড অব ডাইরেক্টর্স, ট্রেডবডি নেতৃবৃন্দ, ব্যবসায়ী ও সুশীল সমাজের সাথে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারস্থ বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে এক মতবিনিময় সভায় মিলিত হন।
চেম্বার প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম’র সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন চেম্বার সহ-সভাপতি সৈয়দ জামাল আহমেদ, পরিচালক অঞ্জন শেখর দাশ, নবনির্বাচিত পরিচালক এস. এম. আবু তৈয়ব, প্রাক্তন পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ, জাপানের অনারারী কনসাল মোঃ নুরুল ইসলাম, কাস্টমস কমিশনার এম. ফখরুল আলম, দৈনিক পূর্বকোণ’র ব্যবস্থাপনা সম্পাদক জসিম উদ্দিন চৌধুরী, দৈনিক সুপ্রভাত বাংলাদেশ’র সম্পাদক রুশো মাহমুদ, সাউদার্ণ ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ইঞ্জি. এম. আলী আশরাফ, বিএসআরএম’র চেয়ারম্যান আলীহুসেইন আকবর আলী, বাফা’র সিনিয়র সহ-সভাপতি আমিরুল ইসলাম চৌধুরী ও উইম্যান চেম্বারের সি. সহ-সভাপতি ডাঃ মুনাল মাহবুব।
ভারতীয় হাই কমিশনার রীভা গাঙ্গুলী দাশ বলেন-দুই প্রধানমন্ত্রীর সৌহার্দ্যরে ভিত্তিতে ভারত ও বাংলাদেশ সম্পর্কের সোনালী অধ্যায় অতিবাহিত করছে। পারস্পরিক সর্ম্পক এবং উভয় দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে মূল ভূমিকা পালন করছে। ২০১৮-১৯ সালে প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের মধ্যে বাংলাদেশের রপ্তানি ১.০৪ বিলিয়ন ছাড়িয়ে গেছে। এক্ষেত্রে তৈরীপোশাক রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ভারতের অনেক বিখ্যাত কোম্পানী যেমনঃ হিরো, টাটা ইত্যাদি ৫৭০ মিলিয়ন ডলার সরাসরি বিনিয়োগ করেছে। উভয় দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের এলডিসি স্ট্যাটাস পরিবর্তিত হলেও অগ্রাধিকার ভিত্তিক বাণিজ্য অব্যাহত থাকবে। হাই কমিশনার বাংলাদেশ থেকে ভারতে রপ্তানি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে অশুল্ক বাধাসমূহ দ্বিপাক্ষিক আলোচনার ভিত্তিতে দূর করা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন-অর্থনৈতিক চরিত্র বিচারে পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে বাংলাদেশ ও ভারত এগিয়ে যাচ্ছে। ভারতের তুলনায় বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের সমাহার কম হলেও ক্রমান্বয়ে তা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি ভারত হতে আমদানির বিপরীতে বিপুল বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাস করার লক্ষ্যে রপ্তানি বৃদ্ধির উপর গুরুত্বারোপ করেন এবং এক্ষেত্রে বিদ্যমান অশুল্ক বাধাসমূহ দূর করার ক্ষেত্রে হাই কমিশনারের সহযোগিতা কামনা করেন।
পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকার প্রদত্ত কর অবকাশসহ বিভিন্ন প্রণোদনার সুযোগ গ্রহণ করে মিরসরাই ইকনোমিক জোনে যৌথ বা এককভাবে বিনিয়োগের মাধ্যমে ভারত ও পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পণ্য রপ্তানি করে উভয়পক্ষ অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে বলে চেম্বার সভাপতি মনে করেন।   
চেম্বার সহ-সভাপতি সৈয়দ জামাল আহমেদ বলেন-স্থল পথে ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি করা উভয় পক্ষের জন্য লাভজনক হবে।
তিনি আগামী চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় পার্টনার কান্ট্রি হিসেবে অংশগ্রহণের জন্য ভারতের প্রতি আমন্ত্রণ জানান এবং তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা বন্টনের দাবী জানান। অন্যান্য বক্তারা মিরসরাই ইকনোমিক জোনে জেটি নির্মাণ, আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে উভয় দেশে পরস্পরের ট্রাক চলাচলের ব্যবস্থা গ্রহণ, সীমান্ত বাণিজ্য বৃদ্ধি, দক্ষতা উন্নয়ন সহযোগিতা, উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ভারতীয় রাজ্যসমূহের সাথে যোগাযোগ অবকাঠামোর উন্নয়ন, ভারতগামী বাংলাদেশী চিকিৎসা প্রার্থীদের জন্য সহায়তা কেন্দ্র স্থাপন, তৈরীপোশাক রপ্তানিতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ, শুল্কায়নসহ বাণিজ্য সহজীকরণ, সম্ভাবনাময় খাতসমূহে মূল্য সংযোজন, চট্টগ্রাম বন্দরকে ট্রানজিট বন্দর হিসেবে ব্যবহার করা এবং যৌক্তিক পর্যায়ে মাশুল নির্ধারণ, বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী দেশসমূহের মধ্যে সম্পর্কোন্নয়ন, চট্টগ্রাম বিমান বন্দরকে কেন্দ্র করে আঞ্চলিক হাব গড়ে তোলা, উভয় দেশের ব্যাংকিং চ্যানেল উন্নয়ন, ধর্মীয় পর্যটন উৎসাহিতকরণ এবং দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়নে ভারতীয় সহযোগিতার আহবান জানান।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে চট্টগ্রামে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার শ্রী অনিন্দ্য ব্যানার্জী, হাই কমিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারী (পলিটিক্যাল) নবনিতা চক্রবর্তী, চেম্বার পরিচালকবৃন্দ এ. কে. এম. আক্তার হোসেন, জহিরুল ইসলাম চৌধুরী (আলমগীর), মোঃ অহীদ সিরাজ চৌধুরী (স্বপন), ছৈয়দ ছগীর আহমদ, হাসনাত মোঃ আবু ওবাইদা, মোঃ শাহরিয়ার জাহান, মোঃ আবদুল মান্নান সোহেল, নবনির্বাচিত পরিচালকবৃন্দ বেনাজির চৌধুরী নিশান, মোঃ এম. মহিউদ্দিন চৌধুরী, নাজমুল করিম চৌধুরী শারুন, সালমান হাবীব, তাজমীম মোস্তফা চৌধুরী ও সাকিফ আহমেদ সালাম, ইপিবি’র পরিচালক কংকন চাকমা, সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোসিয়েশন’র সাধারণ সম্পাদক আলতাফ হোসেন চৌধুরী (বাচ্চু) এবং বিভিন্ন সেক্টরের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ