শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

উৎসবের সেকাল একাল

মো. আলতাফ হোসেন : ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে উৎসব। আনন্দ ভাগাভাগির এক মহা মিলন মেলায় এক কাতারে শামিল হন আবাল বৃদ্ধ বনিতা। ঈদ সবার জীবনে কম বেশি আনন্দ বয়ে আনে। সুপ্রাচীনকাল থেকে আমরা আমাদের নিজস্ব ধারায় এ উৎসব পালন করে আসছি। এখানে যেমন রয়েছে কিছু ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান তেমনি, উৎসব পালনের নিজস্ব সংস্কৃতি।

মাহে রমজানের একমাস রোজা থাকার পর শেষ ইফতারের সঙ্গে সঙ্গে যখন ঈদের নতুন চাঁদ দেখা যায় তখন আনন্দ যেনো একসঙ্গে উপচে পড়ে। আর রেডিও টিভিতে যখন জাতীয় কবি কাজী নজরুলের রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ ... ... ... এই গান বেজে ওঠে, তখন তো আমাদের বাঁধ ভেঙ্গে যায়। এ গানে সমস্ত মুসলমান যেনো আনন্দে একাকার হয়ে যায়। আকাশ বাতাস মনে হয় হেসে ওঠে ঈদ আনন্দে।

ঈদের আনন্দ কি সব সময় একই রকম ছিলো? আসলে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় এই উৎসবে আনন্দের কমতি ছিলো না কখনোই। একাল সেকাল সব কালেই আনন্দময়। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলে গেছে আনন্দ উদ্যাপনের পদ্ধতি। বদলে গেছে আনন্দানুভূতির ধরন-বৈচিত্র্যতা তবে একাল সেকাল যে কালেই হোক না কেনো ঈদের আনন্দ সকলেরই।

মুসলমানদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উৎসব হচ্ছে ঈদ-উল-ফিতর ও ঈদ-উল-আযহা। আর সংখ্যালঘু হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান এদের উৎসব বছরে অনেক। তাই প্রবাদে আছে ‘বার মাসে তের পার্বণ’। মুসলমানদের রমজান মাস (সিয়াম সাধনার মাস) চাঁদের হিসেবে একটি মাস সাহরী খেয়ে সারাদিন দানা পানি না খেয়ে রোজা রাখা। সূর্য ডুবে গেলে ইফতারের মধ্য দিয়ে  রোজা ভাঙ্গা। এভাবে  রোজা রেখে আল্লাহর গুণ গান, মিথ্যার আশ্রয় না নিয়ে সৎ পথে চলা, উপার্জন করা, এসবের মাঝে নিজেকে নিয়োজিত করে  রোযার পর উৎসবে মেতে ওঠা অর্থাৎ ঈদুল ফিতর উৎসব করা। সারা বিশ্বের মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে অন্যতম জাঁকজমক ও ধুমধামের সঙ্গে এই ধর্মীয় দিবসটি পালিত হতে দেখা যায়।

ঈদ কার্ডের সময়টা বদলেছে, একসময় পাড়া বা মহল্লায় যেমন ঈদ কার্ডের দোকানে যে ভিড় দেখা যেতো সেই ভিড় এখন আর নেই। ডিজিটাল সময়ের সাথে সাথে বদলেছে ঈদ কার্ডের ধরণটাও।  রোজার ঈদের আগে পুরো রমজান মাস জুড়ে ঢাকার নিউ মার্কেট, পল্টনে বিভিন্ন বড় বড় দোকানে ঈদ কার্ডের জন্য ভিড় এখন আর দেখা যায় না। সময়ের সাথে সাথে ঈদ কার্ডের প্রচলন অনেকটাই কমে গেছে। ঈদ কার্ডের প্রচলনটা এখন শুধু অতীত বলা যায়। কারণ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ঈদ শুভেচ্ছা পাঠানো ছাড়া এখন আর ঈদ কার্ডের প্রয়োজনীয়তা নেই বললেই চলে। ঈদের আনন্দ অবর্তিত হয় ফ্যাশন ডিজাইন বিউটি পার্লার ও শপিংকে কেন্দ্র করে। কেনা কাটাই যেন এখন ঈদের মূল আনন্দ। কেমন ছিলো সেকালের ঈদ? সেকাল তো একালের বড়দের শৈশব কাল। শৈশবের স্মৃতি মানুষকে এমনেতেই আবেগজড়িত করে। তার ওপর আবার ঈদের স্মৃতি। সে কি ভালো যায়! তখনকার দিনে এখনকার মতো রেডিমেড গার্মেন্টস ছিলো না। তখন থান কাপড় কিনে বানাতে হতো।  রোজার প্রথম দিকে ভীড় শুরু হয়ে যেতো খলিফা (টেইলার) বাড়িতে আবার কাপড় যখন তখন কেনা যেতো না। কারণ হাট বারে হাট ছাড়া কাপড় পাওয়া যেতো না। অবশ্য গঞ্জে বা সদরের নিউ মার্কেট থেকে সম্ভ্রান্তরা কিনতো।

অলিগলিতে এতো দোকানও বসে না আর আগের মতো। প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে মানুষও যান্ত্রিক হয়ে যাচ্ছে দিন দিন। কার্ড কিনে নিজের হাতে দু লাইন লেখার চেয়ে মোবাইলের কী প্যাড আর কম্পিউটারের কী-বোর্ডে লিখতেই সবাই এখন স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। মোবাইলের ম্যাসেজ অপশনে গিয়ে একটি ম্যাসেজ লিখে সবাইকে ফরওয়ার্ড করা অথবা ফেসবুকে একটি ঈদ মোবারক লেখা ছবিতে সবাইকে ট্যাগ করে দেয়াটা বর্তমানে ট্রেন্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে কিন্তু হাতে লেখা কার্ডের সাথে কি আর অনলাইন উইশের তুলনা হয়! সেটা ক’জনই বা ভাবছি আমরা।

এন্ড্রোয়েড মোবাইল যারা ব্যবহার করে থাকেন তাদের জন্য ঈদের প্লে-স্টোরেই রয়েছে অজ¯্র ঈদ কার্ডের অ্যাপ। এটা এখন অনেকটা আউটসোর্সিংও বলা যায়। আগে যেমন দোকানে বসে ঈদ কার্ড বিক্রি হতো। সেই ঈদ কার্ড এখন মনিটরের সামনে প্রযুক্তির মধ্য দিয়ে বিক্রি হচ্ছে। প্রোগ্রামের কাজ যারা পারেন তারাই মূলত এমন আউটসোর্সিংয়ের কাজগুলো করে থাকেন। শুধু গুগলেই নয়, ফেসবুকে এখন অনেক ধরনের অ্যাপ পাওয়া যায়; যার মধ্যে দিয়ে ঈদের সময় প্রিয়জনকে ঈদের শুভেচ্ছা পাঠিয়ে থাকেন অনেকে।

ঈদের দিন সকাল বেলা ছোট বড় সকলে দল বেঁধে পুকুরে বা নদীতে গোসল করা। তারপর নতুন পোশাক পরে পায়েস, সেমাই খেয়ে সারিবদ্ধভাবে দূরের কোনো ঈদগাহ মাঠে নামাজ পড়তে যাওয়া। মনে হয় মেঠো পথে সাদা পাজামা পাঞ্জাবি টুপি পরিহিত মানুষের মিছিল মিলিত হয়েছে কোনো এক মোহনায়।

তখন গ্রামে গ্রামে ঈদগাহ মাঠ ছিলো না। কয়েকটি গ্রামের জন্য ছিলো একটি ঈদগাহ মাঠ। গ্রামে গ্রামে ঈদগাহ এর প্রয়োজনীয়তাও মনে করতো না। কারণ এই উপলক্ষে ঈদগাহে কয়েকটি গ্রামের লোক এক সাথে মিলিত হতে পারতো। নামাজ শেষে পরস্পরের সাথে কোলাকুলি করে চলতো কুশল বিনিময়। ঈদ গা থেকে ফেরার পর প্রতিবেশিদের বাড়ি বাড়ি যাওয়া, মিষ্টি মুখ করা, ছােট নুতন জামা কাপড় পড়ে দল ধরে এ বাড়ি সে বাড়ি বেড়াতে বের হতো। কোনো কোনো আত্মীয় স্বজন ছোটদেরকে দুই টাকা/পাঁচ টাকা ঈদের সালাম দিতো। এই সালামী পেয়ে নিজেদেরকে অনেক সম্পদশালী মনে হতো। আগের দিনে অনেক এলাকায় গ্রামের লোকজন সাধারণত গরিবদের ফেতরার টাকা না দিয়ে সমপরিমাণ খাবার চাউল দিতো। ঈদের দিন সকাল বেলা ঈদের নামাজ পড়তে যাওয়ার সময় পােটলা বেঁধে চাউল সাথে করে নিয়ে যেতো। ঈদগাহ মাঠের চারপাশে ভিখারী ও গরীব লোকজন এই চাউল নেয়ার জন্য কাপড় বিছিয়ে রাখতো। লোকজন নামাজের পূর্বে সাথে সাথে আনা চাউল ওই কাপড়ের ওপর ছিটিয়ে দিতো। ছোটরা এই কাজটি করতে খুব আনন্দ পেতো।

কিশোরী তরুণীদের মেহেদী লাগানো সেকাল একাল দুই কালেই খুব জনপ্রিয় মনে হয় তাদের হাতে আনন্দ যেনো মূর্ত হয়ে ওঠে। আনন্দ যেনো হাতের মুঠোয় থাকে। তবে এ রং এর মেহেদী রিডিমেট পাওয়া যায়। হাতে লাগানোর সহজ উপায় আছে। কিন্তু সেকালে মেহেদী লাগালে ছিলো খুব কষ্টকর। তখন এই কষ্টকর কাজটিই ছিলো ঈদ আনন্দের প্রধান আকর্ষণ। পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে সংগ্রহ করা হতো মেহেদী বা মেন্দির পাতা, তারপর রাতে একজন শিল পাটা নিয়ে মেন্দি বাটতে বসতো। আর তাকে ঘিরে চারিদিকে গোল হয়ে বাকীরা বসতো। চলতো গল্পগুজব, হাসি ঠাট্টা গান। মেহেদী প্রস্তুত হলে একটি কাঠি দিয়ে হাতে মেহেদীর নকশা আঁকা হতো বা চুন দিয়ে নকশা একে হাতের তালুতে মেহেদী ছাপ মেরে রাখা হতো। পরে দেখা যেতো হাত লাল সাদা নকঁশা হয়েছে। নিজের চাচাতো ফুপাতো, মামাতো প্রতিবেশি ভাইবোনদের সাথে মেহেদী লাগানোর সেই সময়টুকু যে কি মধুর ছিলো।

কিন্তু যে ঈদের জন্য এতো আয়োজন সেই ঈদের দিনে কি আগের দিনের মতো আনন্দ হয়? ঈদের দিন দল ধরে প্রতিবেশিদের বাড়ি বেড়ানো গ্রামে কিছুটা থাকলেও শহরে এখন নেই বললেই চলে। সারাদিন অলস সময় কাটানোর পর বিকেলে বা সন্ধ্যায় শিশু পার্ক, অ্যামিউজমেন্ট পার্ক বা আত্মীয় স্বজনদের বাসায় বেড়াতে বের হয় কেউ কেউ। ঈদের মাঠের আনন্দও সীমিত হয়ে গেছে। শহরে তো ঈদের নামাজ ও শুক্রবারের জুম্মার নামাজের পার্থক্য বুঝা যায় না। কারণ মসজিদেই হয় ঈদের জামাআত। কোলাকুলি করার জায়গা নেই। বড় ঈদগাহ মাঠে নামাজ পড়ে কয়জনে?

অবশ্য এখন ঈদের আনন্দ দিতে বা ঈদ আনন্দকে ঘরে বন্দী করতে ব্যস্ত স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলগুলো সপ্তাহব্যাপী প্রচারিত হয় যদি অনুষ্ঠান। ব্যস্ত শহর, ব্যস্ত মানুষের জন্য এই আনন্দই বা কম কি!

ঈদের অনুষ্ঠান বা আনুষ্ঠানিকতা নাই থাকুক না কেনো, ঈদের আনন্দ থাকে প্রতিটি মুসলমানের হৃদয়ে; ধর্মীয় অনুভূতিতে। এই আনন্দে ছোট-বড়, ধনী-গরিব, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে একাকার হয়ে যায়। এটাই ঈদের বড় মহিমা।

এমন একটা সময় ছিলো যখন ঈদের দিন গ্রামের পাড়ায় পাড়ায় শহরের মহল্লায় মহল্লায় আড্ডা বসতো। ঈদের ছুটিতে এই আড্ডায় মেতে ওঠা ছিলো খুব সাধারণ ঘটনা। কিন্তু তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে মানুষের হাতে হাতে মোবাইল; আইপ্যাড। যোগাযোগ করতে এখন আর কোথাও সশরীরে উপস্থিত হতে হয় না; আড্ডা চলে ফেসবুকে ফোনেই। এ কারণে ঈদ আড্ডার চিরপরিচিত দৃশ্যও এখন আর দেখা যায় না, ঈদ উদযাপনে ঈদ আড্ডার প্রয়োজনীতা এখন ফিকে হয়ে গেছে। সেকালের সাথে একালের ঈদের যে পার্থক্য তার মধ্যে অন্যতম এই ঈদ আড্ডার অনুপস্থিতি।

মুসলমানদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় অনুষ্ঠান ঈদ। বিশ্বের সব দেশে সব সময়কে মুসলমানদের ঈদ উদযাপনের মধ্যে কিছু সাদৃশ্য থাকলেও দেশ ও জাতি ভেদে এবং সময় ভেদেও ঈদ উদযাপনের রীতিতে ভিন্নতা দেখা যায়। বাংলাদেশেও যদি উদযাপনের স্বতন্ত্র কিন্তু রীতি আছে। তবে সময় ভেদে সেই রীতিতে দিনে দিনে পরিবর্তন এসেছে। লক্ষ্য করলে দেখা যায়, আশি ও নব্বই দশকের ঈদের সাথে একুশ শতকের দ্বিতীয় দশকের ঈদ উদযাপনে অনেক পার্থক্য রয়েছে। এব ঈদ বিনোদনের বাধ্যতামূলক অনুষঙ্গ ছিলো আনন্দ মেলা। ক্যাবল লাইনবিহীন সেই যুগে বাংলাদেশ টেলিভিশনে ঈদের রাতে প্রচারিত হওয়া সেই আনন্দ মেলার জন্য এক বছর অপেক্ষা করে থাকতো ছেলে বুড়ো সবাই। টিভি দেখার ছলে পরিবারের সবাই হৈ হুল্লোড় করাটাই ছিলো মূল উদ্দেশ্য। বিটিভির অন্যতম আকর্ষণ। আরেকটা যে চলছিলো সেটা হলো, ঈদের আগের দিন পাড়ায় পাড়ায় ক্যাসেট প্লেয়ার ফুল ভলিউমে গান বাজানো। দেখা যেতো, পাড়ার তরুণ ছেলে মেয়েরা ঈদ উপলক্ষে রিলিজ হওয়া জেমস কিংবা আইয়ুব বাচ্চুর এলবাম কিনে নিয়ে আসতো। তারপর সেটা উচ্চ স্বরে বাজানো হতো। কেউ কেউ আবার সিনেমা হলে ঈদ উপলক্ষে নতুন ছবি রিলিজ হলে ধুম পড়ে যেতো সে ছবি দেখার জন্য। দেশে ক্যাবল লাইন আসার পর মধ্যবিত্তের ড্রয়িংরুম থেকে বিটিভি তার একচ্ছত্র আধিপত্য হারিয়েছে আনন্দ মেলা, ছায়াছন্দ আর বিশেষ নাটক বা সিনেমার জন্য অপেক্ষা এখন আর কেউ করে না। দেশের বিভিন্ন স্যাটেলাইট চ্যানেলেই এখন মানুষ ঈদ বিনোদন খুঁজে নেয়; অনেকে তো আবার হিন্দি। ইংরেজি চ্যানেলেই বুদ হয়ে থাকেন। আলাদাভাবে ঈদের অনুষ্ঠান দেখার বিষয়টি তাদের মধ্যে কাজ করে না। খাদ্য তালিকায় এখনো আগের মতো ঐতিহ্যবাহী পোলাও, কোরমার আর সেমাইয়ের চল রয়েছে। কিন্তু তার সাথে যুক্ত হয়েছে নানান দেশের নানান পদ। কাস্টার্ড, চিলি বিফ, স্টেকের মতো পশ্চিমা খাবার ও জায়গা করে নিয়েছে বাঙালির ঈদের রেসিপিতে। ঈদের চাঁদ দেখার জন্য এখন আর কেউ মাঠে কিংবা ছাদে ছুটে যায়। টিভির ব্রেকিং নিউজ কিংবা ফেসবুকের মাধ্যমেই চাঁদ ওঠার খবর পেতে সবাই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে।

এতো পরিবর্তনের পরও ঈদ এখনো বাঙালির জীবনে আসে সৌহাদ্য, সম্প্রীতি ও আনন্দের বার্তা নিয়ে। আগের মতো আজকের ঈদ মানুষকে সব হিংসা-বিদ্বেষ ভুলে মিলেমিশে নতুন যাত্রা শুরু করার উৎসাহ যোগায়। 

ঈদ বয়ে আসুক সবার জীবনে অনাবিল আনন্দ, সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি। বর্ণিল সাজে সাজুক প্রতিটি ঘর, পথ ঘাট ও নগর বন্দর। সবাইকে ঈদের অনেক অনেক শুভেচ্ছা। ঈদের আনন্দের মতো প্রতিটি মুহূর্ত অনুরূপ আনন্দিত হােক সকলের জীবনে। এই শুভ কামনা রইলো।

লেখক : চেয়ারম্যান, গ্রীন ক্লাব, মানিকগঞ্জ

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ