কবিতা
অদীর্ঘ লিরিক
জাকির আজাদ
১.
বিত্ত-খ্যাতির পড়লে লোভে
হলে দ্বিধায় খন্ড,
তোমায় নিয়ে সব আয়োজন
হলো আমার পন্ড।
দিলে অপার দুঃখ পীড়ন
একা থাকার দন্ড,
বুঝলে না, আমি না খ্যাতি
কে ছিলো ভন্ড।
২.
জীবনধারায় একটা ছিলো
নিয়মিত ছন্দ,
একটু হলেও পারতো নিতে
প্রকৃতিটার গন্ধ।
কিন্তু তোমার স্বার্থের ছোঁয়া
সৃষ্টি করে দ্বন্দ্ব,
বেঁচে থাকায় এনে দিলো
বিপুল আধাঁর-মন্দ।
বিবেকের দংশনে
হাফিজ ইকবাল
ভূমধ্যসাগর তীরে বা নাফ কিনারে;
যে শিশু রয়েছে পড়ে অথর নীরব।
মোদের সভ্য সমাজে শিখর মিনারে;
হয়েছে কি কোন মুখ ঘৃণায় সরব?
এশিয়া থেকে পালিয়ে আইলান কুর্দি;
যেতে ছিল ইউরোপ মিলে যদি সুখ।
উপুর হয়ে রইল পড়ে ভেজা উর্দি;
লজ্জায় খোকা পারেনি দেখাইবে মুখ।
অজ্ঞাতনামা রোহিঙ্গা অনুরূপ লাজে;
ভেজা জামা-পায়জামা লজ্জাকর সাজে।
সেথায় মানুষ জাতি হেথায় অভিন্ন;
বিবেকের দংশনে জ্বলবে কি বাতি?
মুসলিম বলে তারা শুধুই কি ঘৃন্ন?
হেরিয়া হত্যা লজ্জিত এ মানব জাতি।
প্রতীক্ষার বেদনা
আসাদুজ্জামান আসাদ
প্রতীক্ষা বড়ই বেদনাদায়ক
রোমাঞ্চকর প্রকৃতি, অপেক্ষার সময় শেষ।
পৃথিবীর মহা ষ্টেশন, যাত্রীর মাঝে চঞ্চলতা
প্লাটফরমে যাত্রী ভরা
অর্ভ্যথনা শেষে আবাসন, তারপর আতিথেয়তা।
সহ¯্র জনমানব, আশাহীন হৃদয়
কে যেন স্পর্শ করে বলল, কোথায় ছিলে তুমি?
আমি তো খুঁজে খুঁজে বড়ই ক্লান্ত
অপেক্ষা শুধু ফেরৎ ট্রেনের।
পিছনে ফিরি, ডাকে আমার প্রিয় গন্তব্য
ভুলে যাই অপেক্ষার বেদনা, অপলক নেত্রে
চেয়ে থাকি গন্তব্যের দিকে।
ছুরিমন
পঞ্চানন মল্লিক
আমাদের দুধরঙা জলের নদীটি চুরি হয়ে গেছে
এখন কেবল শ্মশান, খরা ও গ্রীষ্ম।
এই যে এখানে প্রাণের নিরুত্তাপ-অশ্লেষ
বিলাপের পিয়ালা,
তেমন আর দায়হীনতার কিছু নেই
তলাহীন জুতোয় হামাগুড়ি পা।
কত পথ যে গুনে রাখা হয়ে গেছে ¯্রােতে;
হবে না, হবে না বকুলের মা
মন যে উপুড় হয়ে গেছে শূন্য কলসির মতো।
বাঁশের ছায়া দিয়ে কি আর সাঁকো হয়?
কেবল সুখহীন পাখিরাই জানে
পোড়া ইটেরও আছে জীবন এক নিজস্ব।
অথচ বেড়েছে কলঙ্কের ভার।
গলায় কাটা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে মৃত বক।
এই উষ্ণে মন-নদী শুকিয়ে চৌচির
পাড়ের বালু কেটে পাহাড় বানায় ছুরিমন।