বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

বর্ষার আগেই রাজধানীতে ডেঙ্গুর প্রকোপ প্রতি ৪ ঘণ্টায় ১ জন আক্রান্ত

স্টাফ রিপোর্টার: বর্ষা মৌসুম শুরু হতে না হতেই আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ডেঙ্গু। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান বলছে, গেলো মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত রাজধানীতে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ১৮১ জন। আর মৃতের সংখ্যা ৪, যা একই সময়ে গত দুই বছরের তুলনায় বেশি। তাই এখনই ডেঙ্গু প্রতিরোধের পাশাপাশি তা মোকাবিলায় সমন্বিত পরিকল্পনার তাগিদ বিশেষজ্ঞদের। কর্তৃপক্ষ বলছেন, প্রস্তুতিতে ঘাটতি নেই তাদের।
চলতি বছরের জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে রাজধানীতে গড়ে প্রতিদিন কমপক্ষে ২৪ জন (ঘণ্টায় ১ জন) ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন। ১ থেকে ৮ জুন পর্যন্ত ৫৫ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার নিশ্চিত তথ্য পাওয়া গেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ২০। এছাড়া বর্তমানে রাজধানীর বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ২৩ জন চিকিৎসাধীন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন্স সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক ডা. আয়েশা আক্তার গতকাল সোমবার দুপুরে গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
বর্ষা শুরুর আগেই রাজধানীতে দেখা দিয়েছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। চলতি বছর মার্চেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ১৩ জন। মৃতের সংখ্যা ২। এপ্রিলে ৪২ জন আক্রান্ত মৃতের সংখ্যা ২, মে মাসে কেউ মারা না গেলেও আক্রান্ত হয়েছেন ১৩৯ জন। পরিসংখ্যান বলছে যা গত দুই বছরের তুলনায় অনেক বেশি। মারাত্মক ডেঙ্গু না হলেও এরই মধ্যে হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা।
জানা গেছে, চলতি বছরের জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে রাজধানীতে গড়ে প্রতিদিন কমপক্ষে ১৮ থেকে ২০ জন ( ঘণ্টায় গড়ে ১ জন) ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন। ১ থেকে ৮ জুন পর্যন্ত ৫৫ জন ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হওয়ার নিশ্চিত তথ্য পাওয়া গেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের সংখ্যা ৯। এছাড়া বর্তমানে রাজধানীর বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ২৩ জন চিকিৎসাধীন।
সেক্ষেত্রে ডেঙ্গুর বাহক মশা এডিস নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে এক হয়ে কাজ করার তাগিদ বিশেষজ্ঞদের। পাশাপাশি ডেঙ্গু মোকাবিলায় হাসপাতালগুলোকে প্রস্তুত রাখার তাগিদ বিশেষজ্ঞদের। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক বেনজির আহমেদ বলেন, ডেঙ্গু বেড়ে যাওয়ার মানে এডিস মশার প্রকোপ বেড়েছে। এই প্রকোপ কমাতে হবে।
এদিকে ডেঙ্গু মোকাবিলায় সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানের কথা জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম জাতীয় প্রেসক্লাবে একটি অনুষ্ঠানে বলেন, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। তিনি জানান, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৮ জুন পর্যন্ত তিন শতাধিক নারী, পুরুষ ও শিশু ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ভর্তি রোগীদের মধ্যে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। ইতোমধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ শেষে ২৭৯ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
ডা. আয়েশা আক্তার জানান, চলতি বছর ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত মোট ৩০৪ জন রোগীর মধ্যে প্রায় ২০০ জন গত মে ও চলতি জুনের ৮ তারিখের মধ্যে আক্রান্ত হন। সুনির্দিষ্ট পরিসংখ্যান জানতে চাইলে তিনি জানান, জানুয়ারিতে ৩৬ জন, ফেব্রুয়ারিতে ১১৮, মার্চে ১২, এপ্রিলে ৪৪, মে মাসে ১৩৯ এবং চলতি জুনের ৮ তারিখ পর্যন্ত ৫৫ জন আক্রান্ত হন। আক্রান্তদের মধ্যে দুজন এপ্রিল মাসে মৃত্যুবরণ করেন।
জানা গেছে, লাশে মধ্যে গত ২৫ এপ্রিল রাজধানীর বি আরবি হাসপাতালে ৫৩ বছর বয়সী এক বৃদ্ধা ভর্তি হন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৯ এপ্রিল তিনি মারা যান। এছাড়া আজগর আলী হাসপাতালে গত ২৮ এপ্রিল ভর্তি হয়ে ৩২ বছর বয়সী এক যুবক ২৯ এপ্রিল মারা যান। ডেঙ্গু জ্বর বিশেষজ্ঞদের মতে, জুন-জুলাই মাস ডেঙ্গুবাহী এডিস মশার প্রজনন মৌসুম। এ সময় থেমে থেমে বৃষ্টিপাতের কারণে বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টির পানি জমে থাকে। জমে থাকা পরিষ্কার পানিতে এডিস মশার জন্ম হয়। বাড়ির আশপাশে যেন কোথাও পানি জমে না থাকে সে বিষয়ে সবাইকে সচেতন হতে হবে। তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবজনিত কারণে আবহাওয়ার বিরূপ প্রভাবে এখন ঋতু মেনে বৃষ্টি হয় না। তাই ডেঙ্গু যেকোনো সময় ছড়িয়ে পড়তে পারে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ