দলের নয় দেশের জন্য খালেদা জিয়ার মুক্তি প্রয়োজন
চট্টগ্রাম ব্যুরো: বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী আবদুল্লাহ আল নোমান বলেছেন, বাংলাদেশে এখন ত্রিমুখী সংকট চলছে, এই সংকট উত্তরণে জাতীয় ঐক্য অবশ্যম্ভাবী। এই সংকট মোচনে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সম্পৃক্ততা অপরিহার্য। শুধু অসুস্থতা এবং দলের প্রয়োজনে নয়, দেশের জন্য খালেদা জিয়ার মুক্তি প্রয়োজন।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা, স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৩৮’তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিটির উদ্যোগে গত মংগলবার ২৮মে বিকাল ৪টায় চট্টগ্রাম নগরীর রীমা কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা, ইফতার ও দোয়া মাহফিলে আবদুল্লাহ আল নোমান প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছিলেন।
আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, বাংলাদেশ জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে যে সংকটের মুখোমুখী হয়েছে তা নিরসন না হলে স্বাধীনতা যুদ্ধের চেতনা ধ্বংস হয়ে যাবে এবং দেশে অরাজকতা সৃষ্টি হবে, এটা দেশের জনগণের জন্য কল্যাণ হবে না। সরকারের পক্ষেও এককভাবে এই সমস্যা সমাধান সম্ভব হবে না, তাই জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজনে দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার ভূমিকা ও মুক্তি অপরিহার্য হয়ে পড়েছে।
আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, দেশে অর্থনৈতিক দূর্ভিক্ষ চলছে। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা অনেকটা তলাবিহীন ঝুড়ির মত হয়ে গেছে। হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাঁচার হয়ে গেছে। ব্যাংকগুলোতে অর্থ সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে অনেক ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে যাবে। দেশের মানুষকে সাড়ে ৭% প্রবৃদ্ধির গল্প শোনানো হচ্ছে প্রকৃত পক্ষে সাড়ে ৭% প্রবৃদ্ধি অর্জন হলে বাংলাদেশের নাগরিকদের জীবনের ঝুকি নিয়ে সমুদ্র পথে ইটালী কিংবা মালেশীয়া যেতে হত না। উল্টো প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে বাংলাদেশে শ্রমিক আসত।
আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, জিয়াউর রহমান শুধু স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে নয়, তিনি তাঁর রাজনৈতিক দর্শন দিয়ে মানুষের কাছে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন। শহীদ জিয়া ছিলেন শ্রেষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধা, শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ সফল রাষ্ট্রনায়ক, বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা। জাতির প্রতিটি ক্রান্তিলগ্নে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। ৭৫’এর পটপরিক্রম্বায় জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র, ভোটাধিকার ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা পূনঃপ্রতিষ্ঠা করেছিলেন। জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা না করলে রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামীলীগের পূনঃজন্ম হত না।
আন্দোলন প্রশ্নে আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, চট্টগ্রামের রাজপথের আন্দোলন ছাড়া দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে না, তাই অতীতের মত চট্টগ্রাম থেকেই তাঁর মুক্তি আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের চট্টগ্রাম বিভাগের সভাপতি এ.এম. নাজিম উদ্দীনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শেখ নুরুল্লাহ বাহারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দীন, প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন মহানগর বিএনপির সভাপতি ডাক্তার শাহাদাত হোসেন, বিশেষ বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, বিশেষ বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও চট্টগ্রাম ৮ আসনের বিএনপি প্রাথী আবু সুফিয়ান। এছাড়া অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাংগীর আলম, একরামুল করিম, জেলা আইনজীবি সমিতির সভাপতি এডভোকেট বদরুল আনোয়ার, মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি এডভোকেট আব্দুস সাত্তার, এস.কে. খোদা তোতন, এডভোকেট সাত্তার সারোয়ার, যুগ্ন-সম্পাদক ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, আবদুল মান্নান, আনোয়ার হোসেন লিপু, গাজী সিরাজ, কামরুল ইসলাম, শ্রমিকদলনেতা শ.ম. জামাল, শামসুল আলম, তাহের আহমদ, মহিলা দলনেত্রী ডাক্তার কামরুন নাহার দস্তগীর, মনোয়ারা বেগম মনি, জেলী চৌধুরী, শ্রমিকদল নেতা মমতাজ মিয়া, মোস্তফা কামাল পাশা, মহসীন তরু, তোফাজ্জল হোসেন, আবদুল বাতেন, আবু বক্কর সিদ্দিকী প্রমূখ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন বলেন, আইনী প্রক্রিয়ায় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা সম্ভব নয়, কারন দেশে আইনের শাসন ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নেই। আন্দোলনের মাধ্যমেই বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে।