আদমদীঘিতে ধানের ন্যায্য মূল্য হতে বঞ্চিত কৃষক
আদমদীঘি (বগুড়া) সংবাদদাতা : ধান কৃষকের জীবন। আবার ধানই যেন হয়ে উঠেছে কৃষকের মরণ। ধানের ফলন বিপর্যয় হলে যেমন কৃষকদের বিপদ তেমনি বাম্পার ফলনের পর বাজার দর পড়ে গেলে মহাবিপদ। কোন দিকে যাবে কৃষক ? বর্তমানে তাদের দিকে তাকানোর কেউ নেই। কৃষকের স্বার্থের অজুহাতে নানা ফন্দি-ফিকির করে থাকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলো। ভোটের চিন্তা মাথায় রেখে ‘কৃষক শব্দ’ নামে সংগঠনগুলো কৃষক বান্ধবের ভান করে থাকে। তারা কৃষকদের স্বার্থে কিছু না করে শুধু ফাঁকা বুলি আওরায়। সম্প্রতি বয়ে যাওয়া প্রাকৃতিক দুর্যোগ ফনীর কারণে বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা কিছুটা কম হওয়ার আশংকা রয়েছে। তবে উপজেলা কৃষি বিভাগ বলছে ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র প্রভাবে ফসলের তেমন কোন ক্ষতি হয়নি। ধানের ফলন ভাল মন্দ নিয়ে কৃষকদের তেমন মাথা ব্যথা না থাকলেও বাজারে ধানের ন্যায্য দাম না পাওয়ায় হতাশায় পড়েছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা। জানা যায়, চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে উপজেলায় ১২ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে ধান চাষ করা হয়েছে। যার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৮ হাজার ৭৮০ মে. টন। এ অঞ্চলের বর্গা চাষীদের ধান উৎপাদনে প্রতি বিঘায় খরচ হয়ে থাকে ১৩ হাজার থেকে ১৪ হাজার টাকা। আর প্রতি বিঘা জমি থেকে ধান পাওয়া যাচ্ছে ১৮ থেকে সর্বোচ্চ ২০ মণ। যার বর্তমান বাজার মূল্য ১১ হাজার ৭শত টাকা। গড়ে প্রতি বিঘায় ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার লোকসান গুনতে হচ্ছে কৃষকদের। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী সরকার নির্ধারিত সময়ে চাল সংগ্রহ শুরু করলেও ধান সংগ্রহ শুরু করে নির্ধারিত সময়ের অনেক পড়ে। আর এ সময়কে কাজে লাগিয়ে চাল ব্যবসায়ী ও মিল মালিকরা সিন্ডিকেট করে কৃষকদের সস্তায় ধান বেচতে বাধ্য করেন। সরকারি বেঁধে দেয়া নির্ধারিত সাড়ে ৩৭ কেজিতে প্রতি কেজি ২৬ টাকা দরে এক মন ধান ৯৭৫ টাকা দরে বিক্রয় হবার কথা থাকলেও প্রতি মণ ধান প্রকারভেদে ৬০০ টাকা থেকে ৬৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। এতে জমির মালিকদের কিছুটা লাভ হলেও বর্গাচাষীদের বিঘা প্রতি ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত লোকসান গুনতে হচ্ছে।