বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

কেশবপুরে ঘেরের দখল নিয়ে দু‘পক্ষ মুখোমুখি

কেশবপুর (যশোর) সংবাদদাতা: কেশবপুর উপজেলার হাবাসপোল পশ্চিম বিলে ঘের করাকে কেন্দ্র করে দুটি পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে। একপক্ষ ওই ঘরের ক্যানেল বেড়ি নির্মাণ করছে। অন্যপক্ষ তা বন্ধে আদালতে মামলা করেছে। এ নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসি। শান্তি শৃঙ্খলা ভঙ্গের আশঙ্কায় আদালতের নির্দেশে পুলিশ ওই ঘেরের সকল কার্যক্রম বন্ধে ১৪৪ ধারা জারি করেছে। এলাকার অধিকাংশ কৃষকই ২ ঘের মালিকের চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ। এলাকাবাসি জানায়, হাবাসপোল ও মূলগ্রামের পশ্চিম বিলে কৃষকদের ৫৫ বিঘা জমি রয়েছে। ২০১৭ সালে ৫ বছর মেয়াদে মাছের ঘের করার জন্য কৃষকদের সাথে চুক্তিবদ্ধ হন হাবাসপোল গ্রামের মৃত আব্দুল হামিদ সরদারের ছেলে আবু হাসান রনি। কিন্তু তিনি গত ২ বছরেও বিলে ঘেরের কার্যক্রম শুরু না করায় অবশেষে ২০১৯ সালের ১৬মে একই মেয়াদে কৃষকদের সাথে চুক্তিবদ্ধ হন গ্রামের মানিক সরদারের ছেলে রফিকুল ইসলাম ও শফিকুল ইসলাম। সেই মোতাবেক রফিকুল ইসলাম অধিকাংশ কৃষকের হারির টাকা পরিশোধ করে গত ২৯ এপ্রিল থেকে স্ক্যাভেটর দিয়ে ঘেরের বেঁড়িবাধ নির্মাণ কাজ শুরু করেন। বিষয়টি ভালোভাবে নিতে পারেনি আগের চুক্তিবদ্ধ ঘের ব্যবসায়ী আবু হাসান রনি। তিনি শত্রুতাবশত: ওই জমিতে যশোর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৪৪ ধারায় মামলা করেন। গত ১মে আদালতের নির্দেশে কেশবপুর থানার এসআই ফজলে রাব্বি ঘেরের সকল কার্যক্রম বন্ধে ১৪৪ ধারা জারি করেন। এরপর থেকে ঘেরের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। বর্তমান দুই ঘের মালিকই কৃষকদের স্বাক্ষর জাল বলে বিভিন্ন মহলে প্রচারণা চালাচ্ছে। ওই ঘেরের দখল নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন সময় বড় ধরনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। কৃষক ইব্রাহিম সরদার, মোস্তফা সানা বলেন, আবু হাসান রনি তাদের বিলে ঘের করতে ব্যর্থ হলে আমরা রফিকুল ইসলামের সাথে চুক্তিপত্র করি। এ কথা জানতে পেরে আবু হাসান রনি কৌশলে তাদের সাথে প্রতারণা করে আল আমিন নামের একটি ছেলেকে পাঠিয়ে খোজাখালের পানি সরানোর জন্য ইউএনও‘র কাছে দরখাস্ত দেয়ার মিথ্যা কথা বলে তার ডিডে স্বাক্ষর করে নিয়েছে।
এ বিষয়ে আবু হাসান রনি বলেন, রফিকুল ইসলাম জাল সই করে ওই ঘের দখল করতে বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। আমি শান্তিপূর্ণভাবে ঘের করার লক্ষ্যে আদালতে মামলা করেছি। কৃষকরা স্বেচ্ছায় তাদের ডিডে স্বাক্ষর করেছে। 
রফিকুল ইসলাম বলেন, আবু হাসান রনির কোন কাগজ পত্র নেই। জমির ৫৫ জন মালিকের মধ্যে ৪৭ জন তাদের ডিড করে দিয়েছে। সে মোতাবেক ঘেরের বাধ নির্মাণ কাজ শুরু করেছিলাম। কিন্তু প্রতিপক্ষ তার কাজে বাধা প্রদান করে হয়রানির লক্ষ্যে আদালতে মামলা করেছে। আবু হাসান রনির ডিডে অধিকাংশ কৃষকের স্বাক্ষরই জাল।  কেশবপুর থানার উপপরিদর্শক ফজলে রাব্বি বলেন, আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক ঘেরের কার্যক্রম বন্ধে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। ওই জমিতে শান্তি শৃংখলা বজায় রাখতে উভয় পক্ষকে আদালতের নিদের্শনা মেনে চলতে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশ অমান্য করলে তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ