খুলনার ফুটপাতে এবার মিলছে না ইফতার সামগ্রী!
খুলনা অফিস : ফুটপাতের ইফতারিতেই ভরসা ছিলো খুলনার অধিকাংশ মানুষের। রমযানে ইফতারের সময় যতো ঘনিয়ে আসতো ফুটপাতে যেন উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হতো। বিক্রেতাদের হাঁক-ডাক আর ক্রেতাদের ক্রয় উৎসবে জমজমাট হয়ে উঠতো ফুটপাতের ইফতার বাজার। কিন্তু এবার ফুটপাতে ইফতার সামগ্রী নিয়ে কাউকে বসতে দেওয়া হবে না বলে সাফ জানিয়েছেন খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক। তিনি বলেন, কাউকে ইফতারির দোকান সাজিয়ে ফুটপাতে বসতে দেওয়া হবে না। তাতে যদি পৃথিবীতে লয় হয়ে যায় তাও আমি ফুটপাতে বসতে দেবো না।
প্রতি বছর রমযানের সময় দুপুরের পর থেকেই ফুটপাতগুলোতে ইফতারের পসরা সাজিয়ে বসতেন বিক্রেতারা। মওসুমী ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন হোটেল-রেস্তোরাঁ, মিষ্টি ও খাদ্যদরব্যের দোকানের সামনে সামিয়ানা টানিয়ে বাহারি এসব ইফতার বিক্রি করা হতো। পেশাজীবী, শিক্ষার্থী, শ্রমিক সব শ্রেণীর মানুষ ইফতার কিনতে ফুটপাতে ভিড় করতেন।
ছোলা, মুড়ি, পেঁয়াজু, বেগুনি, খেজুর, ডিম চপ, জিলাপি, শরবত, হালিমসহ রকমারি সব ইফতারের আয়োজন থাকতো নগরীর শান্তিধামের মোড়, ডাকবাংলো মোড়, ফেরিঘাট মোড়, সাত রাস্তার মোড়, ময়লাপোতা মোড়, শিববাড়ি, নিউমার্কেট, সাউথ সেন্টার রোডসহ বিভিন্ন স্থানের ফুটপাতের দোকানগুলোতে।
কিন্তু এবার খুলনা মহানগরীর ফুটপাত হকারমুক্ত থাকায় রমজানেও ফুটপাতে কাউকে ইফতার সামগ্রী নিয়ে বসতে দেওয়া হবে না।
সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, আধুনিক নগরী হিসেবে খুলনাকে গড়ে তুলতে চলতি বছরের জানুয়ারিতে ফুটপাত দখলমুক্ত ও যানজট নিরসন করে পরিচ্ছন্ন নগরী গড়ে তোলার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু করা হয়। যার ফলে কয়েকদিনে মহানগরী খুলনার চেহারা বদলাতে শুরু করে। পথচারীদের ভোগান্তি লাঘবে খুলনা সিটি করেপারেশন অবৈধ দখলদার হকারদের সরিয়ে নগরীর ফুটপাথ দখলমুক্ত করে।
এছাড়া বন্ধ করা হয়েছে যানবাহনের অবৈধ পার্কিং। সবকিছু মিলিয়ে পরিচ্ছন্ন নতুন চেহারায় ফিরেছে খুলনা মহানগরী।
এদিকে ফুটপাত দখলমুক্ত রাখার জন্য সিটি করপোরেশন প্রতিনিয়ত মাইকিং করছে। কেসিসির এ তৎপরতার কারণে প্রতি বছর যেখানে রমযানের দুই-চার দিন আগেই সামিয়ানা টানিয়ে ফুটপাতে দোকান তৈরি করা হতো এবার একদিন আগেও তেমন কোনো চিত্রই দেখা যায়নি। অনেকেই সবকিছু প্রস্তুত করেও ফুটপাতে দোকান বসানো নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছেন। যেসব মওসুমী ব্যবসায়ী রমযানে ফুটপাতে দীর্ঘ বছর ধরে ইফতারি বিক্রি করে আসছিলেন তাদের মধ্যে এবার চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। তারা বলছেন, অন্তত বিকেলে দুই-তিন ঘণ্টার জন্য কেসিসি আমাদের ফুটপাতে বসার সুযোগ দিলে আমরা যেমন লাভবান হতাম তেমনি রোযাদাররা কম মূল্যে সহজে ইফতার সামগ্রী পেতেন।