শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

প্যারোলের আবেদনে সম্মত নন খালেদা জিয়া

মোহাম্মদ জাফর ইকবাল : প্যারোলে মুক্তি নিতে চান না বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তিনি স্পষ্ট বলে দিয়েছেন, এই সরকারের কাছে তিনি প্যারোলে মুক্তির আবেদন জানাবেন না। বিএনপির একাধিক নেতার সাথে কথা বলে এ তথ্য পাওয়া গেছে। জানা গেছে, প্যারোল নিয়ে তার নেগেটিভ অবস্থানের কারণেই বিএনপির সিনিয়র নেতারাও এখন প্যারোলের বিরুদ্ধে কথা বলছেন। যদিও একটি অংশ প্যারোলে হলেও বেগম জিয়াকে কারাগার থেকে মুক্তি করার পক্ষে রয়েছে। তাদের তদবিরের কারণেই কারাবন্দী বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ পাঠাতে সরকারের নমনীয় অবস্থানের আভাস পাওয়া গেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল গত শনিবার দেয়া একটি বক্তব্যে অন্তত সেটি ফুটে উঠেছে। তিনি বলেছেন, বেগম জিয়া সুনির্দিষ্ট কারণ দেখিয়ে প্যারোলে মুক্তির আবেদন করলে সরকার বিষয়টি বিবেচনা করবে।
খালেদা জিয়ার মুক্তি আইনি প্রক্রিয়ায় না প্যারোলে? -এ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চলছে নানামুখী আলোচনা। বেগম জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর থেকেই তার নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়ে আসছে দলটির নেতা-কর্মীরা। এ নিয়ে আইনি লড়াইয়ের পাশাপাশি রাজপথে আন্দোলনের কথাও বলছে দলটি। তবে নানা আইনি জটিলতায় মুক্তি মিলছে না সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীর। আইনিভাবে খালেদা জিয়ার কারামুক্তিতে এখন অন্তত চার মামলায় জামিন পেতে হবে। অন্যদিকে বিএনপি প্রধানের প্যারোলে মুক্তির গুঞ্জন রয়েছে। কিন্তু তাকে প্যারোলে মুক্তি পেতে হলে সরকারের নির্বাহী আদেশ লাগবে। এ জন্য তাকে আবেদন করতে হবে সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরে। জানা যায়, প্যারোলে মুক্তিতে সম্মত নন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই তিনি বেরিয়ে আসতে চান। দলের ভিতরে-বাইরে তুমুল আলোচনা থাকলেও বেগম জিয়ার পাশাপাশি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এখনো সম্মতি দেননি। দলের আইনজীবী নেতাদের আইনিভাবে লড়াইয়েরই দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আইনজীবীদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিএনপি চেয়ারপার্সনের বিরুদ্ধে থাকা মোট ৩৬ মামলার মধ্যে সাজা হয়েছে দুটিতে। এর মধ্যে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিচারিক আদালত পাঁচ বছর কারাদন্ড দেওয়ার পর হাই কোর্টে সাজা বেড়ে হয় ১০ বছর। মামলাটি বর্তমানে আপিল বিভাগে বিচারাধীন। আর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীকে ৭ বছর কারাদন্ড দিয়েছে নিম্ন আদালত। এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন তার আইনজীবীরা। বাকি ৩৪ মামলার মধ্যে গ্যাটকো, নাইকো ও বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলাসহ ১৩টি মামলা বিচারাধীন। আর হাই কোর্টের আদেশে স্থগিত রয়েছে ২১ মামলা। বর্তমানে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ধর্মীয় উসকানি এবং মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তির মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি রয়েছে। সর্বশেষ কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বাসে পেট্রলবোমা ছুড়ে আটজনকে হত্যার মামলায় গতকাল বেগম জিয়াকে দেওয়া হাই কোর্টের জামিন আদেশ বহাল রাখে আপিল বিভাগ।
জানা যায়, বেগম জিয়ার পরিবারের সদস্যরা চান যে কোনো পরিস্থিতিতে বেগম জিয়ার মুক্তি। তারা বেগম জিয়ার কাছেও প্যারোলের আবেদনের বিষয়টি তুলে ধরেন। কিন্তু বিএনপি প্রধান তাতে সায় দেননি। আইনের স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় মুক্তি পেতে দলের আইনজীবী নেতাদের প্রতি নির্দেশনা দেন তিনি। এ প্রসঙ্গে পরিবারের সদস্যরা কথা বলতে রাজি হননি।
সূত্র মতে, ২০১৮ সালের ফ্রেবুয়ারি থেকে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। সম্প্রতি তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ায় বর্তমানে তিনি বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি রয়েছেন। তার চিকিৎসা নিয়ে বিএনপি খুবই উদ্বেগে রয়েছে। দলটির পক্ষ থেকে বেগম জিয়াকে তার পছন্দের বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা করার দাবি করা হচ্ছে। কিন্তু সরকার সেটিতে ইতিবাচক কোনো জবাব দিচ্ছেনা। বরং বেগম জিয়া যদি প্যারোলে মুক্তি নিয়ে বিদেশে যেতে চান সেক্ষত্রে সরকার সেটি বিচেনা করবে। যার কারণে বিদেশে গিয়ে চিকিৎসার জন্য সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী প্যারোলে মুক্তি চাইবেন কি-না তা নিয়ে আলোচনা চলছে। বিএনপির একটি অংশও যেকোনো ভাবে বেগম জিয়াকে মুক্তি করার পক্ষে। তারা বিভিন্নভাবে বেগম জিয়াকে বুঝানোর চেষ্টা করেছেন। কিন্তু খালেদা জিয়া স্পষ্ট বলে দিয়েছেন, তিনি এই সরকারের কাছে প্যারোলের আবেদন করবেন না। 
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, বেগম জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আমরা তার উন্নত চিকিৎসার দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু বেগম জিয়া প্যারোলে মুক্তির আবেদন করবেন কি-না সেটি একান্তই তার নিজস্ব ব্যাপার, এটি তার শারীরিক ও স্বাস্থ্যগত বিষয়। খালেদা জিয়ার আইনজীবী অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, প্যারোলে মুক্তি চাওয়ার বিষয়টি একান্তই বেগম জিয়ার সিদ্ধান্ত। এটি বিএনপির বিষয় নয়। তবে এই মুহূর্তে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। বিদেশে তার চিকিৎসা নেয়ার যুক্তিসঙ্গত কারণও রয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে চিকিৎসার যথেষ্ট সীমাবদ্ধতা রয়েছে। সম্প্রতি ওবায়দুল কাদেরকেও উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠাতে হয়েছে। বেগম জিয়াও বহুবার সৌদি আরব ও লন্ডনে গিয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। এখন তিনি চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাবেন কি-না, সেই সিদ্ধান্ত তিনিই নেবেন।
জানা গেছে, রাজনৈতিক অঙ্গনে খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে নানা আলোচনা চাউর আছে। বলা হচ্ছে- পর্দার অন্তরালে খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে সরকার ও বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ে দেনদরবার চলছে। তার মুক্তি নিয়ে দুই পক্ষই শর্তারোপ করছে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, প্যারোলে মুক্তি নিয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সনকে বিদেশে চলে যেতে হবে। সেখানে তিনি শারীরিক চিকিৎসা করাতে পারবেন। কিন্তু রাজনৈতিক বিষয়ে কোনো কথাবার্তা বলতে পারবেন না। পাশাপাশি বিএনপির জনপ্রতিনিধিদের সংসদে যেতে হবে। তবে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, শারীরিক অসুস্থতা ও বার্ধক্যজনিত কারণে বেগম খালেদা জিয়াকে জামিনে মুক্তি দিতে হবে। মুক্তি পেয়ে তিনি যেখানে খুশি সেখানে চিকিৎসা নিতে পারবেন। তিনি সুস্থ হয়ে রাজনৈতিক কর্মকা-েও যুক্ত হতে পারবেন। যদি এরকম সিদ্ধান্তে সরকার রাজি থাকে তাহলে বিএনপির সংসদ সদস্যরা শপথ নিতে পারেন। অন্যথায় তারা শপথ নিবেন না।
খালেদা জিয়া প্যারোলে মুক্তিতে রাজি আছেন এমন আলোচনাও আছে। তবে এসব আলোচনার কোনো নিশ্চিত ভিত্তি খুঁজে পাওয়া যায়নি। বিএনপি শীর্ষ পর্যায়ের প্রভাবশালী বেশ কয়েকজন জন নেতা জানিয়েছেন, এ বিষয়ে তারা কিছুই জানেন না। কেউ কেউ এসব অপপ্রচার, গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। বেগম খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত বিষয় দেখভাল করেন এমন একজন জানিয়েছেন, প্যারোলে মুক্তি চাওয়ার বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। চলমান এমন নানা গুঞ্জনের মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
এখন প্রশ্ন একটাই বেগম জিয়া প্যারোলে মুক্তি নিয়ে বিদেশে চিকিৎসার জন্য যাবেন কি-না। দলের সিনিয়র এক নেতা বলেছেন, বিএনপি বেগম জিয়ার জামিনে মুক্তির জন্য আইনিভাবে দীর্ঘদিন ধরে লড়াই করে যাচ্ছে। সরকার বাধা না দিলে তিনি অনেক আগেই জামিনে মুক্তি পেতেন। ওই নেতা আরো বলেন, রাজনৈতিক বিবেচনায় বেগম জিয়াকে বিদেশে পাঠাতে পারলে সরকারের জন্য সুবিধাজনক অবস্থারই সৃষ্টি হয়। ইতোমধ্যে এক বছরেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। দীর্ঘ আইনি মারপ্যাঁচের কারণে বিএনপির নেতারা প্রায়ই বলে আসছেন, আইনি উপায়ে খালেদা জিয়ার মুক্তি সম্ভব নয়, এটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বিষয়। একই সাথে দলটির নেতারা রাজপথে তার মুক্তির দাবিতে আন্দোলন গড়ে তোলারও হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন।
সরকারি দল যে খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠিয়ে দিতে চায় সেটি আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের বক্তব্যেই ফুটে উঠছে। রোববার তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এমপি বলেছেন, বেগম জিয়া আবেদন না করলে প্যারোল বিবেচনারই সুযোগ নেই। ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বেগম খালেদা জিয়া দুর্নীতির দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে আছেন। তিনি আবেদন করলেই শুধু সেটি বিবেচনা করার সুযোগ আছে। বেগম খালেদা জিয়া নিজে যদি না চান, তার আগে তাকে মুক্তি দেয়ার বিষয়টি বিবেচনারই কোনো সুযোগ নেই বা তাকে সরকার প্যারোলে মুক্তি দেয়ার কোনো চিন্তাভাবনা করছে এমনও নয়।
খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তির বিষয়টি ‘রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বিষয়’  বলে জানিয়েছেন  তার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন। তিনি বলেন, আমি বার বার বলেছি, প্যারোলের বিষয়টি রাজনৈতিক বিষয়। এখানে ম্যাডাম খালেদা জিয়া প্যারোলে যাবেন কিনা এবং সরকার প্যারোল দিবেন কিনা এটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। আমরা আইনজীবী হিসেবে বলতে পারি চিকিৎসার জন্য প্যারোলে যায়। প্যারোলের বিভিন্ন উদাহরণ তুলে ধরে বলেন, দেশে, ভারতে, পাকিস্তানে প্যারোলে যাবার নজির আছে। রাজনৈতিক অঙ্গনে প্যারোলে যাওয়া প্রায়ই দেখা যায়। আমরা চাই তাকে আইনগতভাবে মুক্তি দেয়া। খালেদা জিয়ার অপর আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেন, আমরা প্যারোলের আবেদন করি নাই।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমরা বেগম জিয়ার আইনি প্রক্রিয়ায় জামিনে মুক্তি চাই। তবে তিনি এখন খুবই অসুস্থ। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এক্ষেত্রে চিকিৎসকরা যদি তার চিকিৎসার স্বার্থে বিদেশে চিকিৎসার জন্য সুপারিশ করেন, তখনই প্যারোলে মুক্তির প্রশ্ন আসবে। চিকিৎসকরা এখন পর্যন্ত এ ধরনের কোনো কথা বলেননি।
বিএনপি সূত্রে জানা যায়, বেগম জিয়ার মুক্তি পেতে আইনি লড়াইয়ের পাশাপাশি রাজপথেও আন্দোলনে যাবে বিএনপি। এ জন্যই দল গোছানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে ৪৪টি জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন তারেক রহমান। দল গোছানোর পাশাপাশি নিজের মায়ের মুক্তি আন্দোলন নিয়েও কথা বলছেন তিনি। আগামী তিন মাসের মধ্যেই দল ও অঙ্গ সংগঠনগুলো গুছিয়ে তুলতে চান তারেক রহমান। বিএনপির অঙ্গ সংগঠনগুলোর আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হচ্ছে। ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটিও শিগগিরই দেওয়া হবে। যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি নিয়েও কাজ চলছে। কৃষক দল, তাঁতী দল, মৎস্যজীবী দল, ওলামা দল, ড্যাব ও এ্যাবের আহ্বায়ক কমিটি দেওয়া হয়েছে। মহিলা দলের পূর্ণাঙ্গ কমিটিও ঘোষণা করা হয়েছে। ঢাকা মহানগরের অসম্পূর্ণ কমিটিও দেওয়া হবে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, দল গুছিয়েই আমরা বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনে যাব। তার নেতৃত্বেই সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি আদায় করব।
জানা গেছে, খালেদা জিয়ার অনঢ় অবস্থানের কারণেই প্যােেরাল বাদ দিয়ে অবিলম্বে জামিনে মুক্তির দাবি জানাচ্ছে বিএনপির সিনিয়র নেতারা। রোববার বেগম জিয়ার মুক্তির দাবিতে আয়োজিত প্রতীক অনশনে তারা বলেন, কোনো প্যারোল নয়, খালেদা জিয়াকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে।  সভাপতির বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, কোনো প্যারোল নয়, খালেদা জিয়াকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। এটা তার আইনগত অধিকার। কারো দয়ায় তিনি মুক্ত হতে চান না। খালেদা জিয়ার মামলার অবস্থা তুলে ধরে স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ বলেন, ১৩ মাস যাবত বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে আছেন। যে মিথ্যা মামলায় তাকে (খালেদা জিয়া) সাজা দেয়া হয়েছে তারপরেও গতানুগতিকভাবে অন্য যেকোনো নাগরিকের জন্য সেভাবে আইন প্রয়োগ করা হতো তাহলে ৭/১০ দিনের মধ্যে তার জামিনে মুক্ত হয়ে যাওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু হয় নাই। আপনারা যদি মনে করেন, বেগম জিয়াকে আমরা মুক্ত করবো। এই আন্দোলনের মাধ্যমে আমি আশাবাদী বেগম জিয়া মুক্ত হবেন এবং তিনি মুক্ত হয়ে বাংলাদেশের জনগনের নেতৃত্ব দেবেন। 
 জেএসডির সভাপতি আসম আবদুর রব বলেন, শ্লোগান দিয়ে খালেদা জিয়া মুক্ত হবে না। যদি তাকে মুক্ত করতে চান ইন্সটিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ার্সে শ্লোগান দিয়ে হবে না। সকলকে সারা বাংলায় ছড়িয়ে পড়তে হবে, গ্রামে গ্রামে ছড়িয়ে পড়তে হবে, জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে জাতীয় নেত্রীকে মুক্ত করার জন্য, তিনি এখন শুধু বিএনপি নেত্রী নন। আমি বলতে চাই, এক লক্ষ কর্মী জেলে আছে, ৫০ লক্ষ কর্মীর মামলা আছে। দরকার হলে আরো ৫০ লক্ষ আমরা কারাগারে যেতে রাজী আছি তাহলে খালেদা জিয়া মুক্ত হতে পারে। কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, আজকে গণতন্ত্র আর বেগম খালেদা জিয়া এবং ন্যায় বিচার আর খালেদা জিয়া এক হয়ে গেছে। পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষন করে তিনি বলেন, আজকে পেপারে দেখলাম এখানেও কে যেন বলছেন। আপনাদের মতামতও শুনলাম। বেগম খালেদা জিয়া যদি চান - প্যারোল হবে। আমি তো আশা করবো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব যেমন প্যারেলো রাওয়ালপিন্ডিতে আইয়ুব খানের সাথে আলোচনা করতে যান নাই, দ্বিতীয় নজির হবেন বেগম খালেদা জিয়া কোনো প্যারেল না। প্যারোলে মুক্তি হবে বেগম জিয়ার মৃত্যু গণতন্ত্রের মৃত্যু।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ