বিশিষ্ট লেখক অধ্যাপক আবু জাফর
অধ্যাপক আবু জাফর একজন ইসলামী ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন। তিনি ছিলেন একজন গীতিকার, কবি ও সংগীত শিল্পী। এক সময়ে তিনি সাংস্কৃতিক অঙ্গনে হৈচৈ ফেলে দিয়েছিলেন। তার বাচনিক ভঙ্গী, প্রতিভা ও কর্মকান্ডের কারণে সর্বমহলে ব্যাপক সুনাম কুড়িয়েছেন। তিনি ১৯৪৩ সালের ১৫ মে কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের গড়ের বাড়ী কাঞ্চনপুর গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতার নাম খোন্দকার মহঃ জমির উদ্দিন। আবু জাফর চুয়াডাঙ্গা কলেজে ও কুষ্টিয়া সরকারী কলেজে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। তিনি রাজশাহী ও ঢাকা বেতার ও টেলিভিশনে নিয়মিত সঙ্গীত শিল্পী এবং গীতিকার ছিলেন। তার দেশত্ববোধক গান ও আধুনিক গান বিভিন্ন মহলে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। তিনি অনেকগুলো গ্রন্থ রচনা করেন। এর মধ্যে নতুন রাত্রি পুরনো দিন (কাব্য), বাজারে দূর্ণাম তবু তুমিই সর্বস্ব (কাব্য), বিপ্লবোত্তর সোভিয়েত কবিতা (অনুবাদ কাব্য) উল্লেখযোগ্য। তার সহধর্মিণী ফরিদা পারভীন বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট লালন শিল্পী হিসাবে পরিচিত।
তিনি সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হিসাবে যেমন সাংস্কৃতিক অঙ্গনে পরিচিতি লাভ করেছিলেন তেমনি ইসলামী ভাবাপন্ন, গবেষক ও লেখক হিসাবেও সর্ব মহলে সমাদৃত। তার মধ্যে ইসলামী চিন্তা চেতনার যে প্রতিফলন উদ্ভাসিত হয়েছে তা দেখে ও তার লেখনীর ফলে দেশের বিভিন্ন মহল হতবাক হয়েছে। অধ্যাপক আবু জাফরের মধ্যে যে পরিবর্তন এ জন্য সকলের নিকট তিনি প্রশংসনীয় ও অনুকরণীয়। ১৯৯৫ সালে তিনি হজব্রত পালন করেন। তিনি ২০০০ সালে চাকুরী থেকে অবসর গ্রহণ করেন। হজব্রত পালনের পূর্ব পর্যন্ত তিনি ছিলেন বাংলাদেশের সঙ্গীতাঙ্গনে নিয়মিত গুঞ্জনরত এক আত্মমুগ্ধ আত্মবিস্মৃত গীতপতঙ্গ। কিন্তু আল্লাহপাকের বিশেষ রহমত, সেই কৃষ্ণ-গহবর থেকে মুক্তি লাভ করেছেন। এখন পশ্চাতের সেই কুহক ভরা অন্ধকার দিনগুলোর কথা এখন আর ভাল করে মনেও পড়ে না। সার্বিক অর্থেই অধ্যাপক আবু জাফরের এ এক নব জন্ম। এখন তার জাগতিক কোন অভিলাষ নেই। আল্লাহর কাছে তার একটিই প্রার্থনা ঈমানদার অনুগত অনুগ্রহপ্রাপ্ত কৃতজ্ঞ বান্দাদের তালিকায় সর্ব পশ্চাতে হলেও তার নামটিও যেন লিপিবদ্ধ হয়। পৃথিবী নিয়ে কোন ভয় নেই, কারণ পার্থিব কোন সমস্যা এখন আর আবু জাফরকে আদৌ বিচলিত করেনা। একটিই মাত্র ভয়, অত্যাসন্ন আখেরাতের অনন্ত জিন্দিগীতে অবশেষে কী-হয় না হয়!
তিনি মহানবীর (সাঃ) মহাজীবনসহ আরো অনেক ইসলামী গ্রন্থ রচনা করেছেন। অধ্যাপক আবু জাফর বর্তমানে দ্যা স্কলারস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও সাপ্তাহিক কুষ্টিয়ার দিগন্ত পত্রিকার সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।