শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

তালাক গোপন রেখে সন্তানের বাবা হলেন যৌতুকলোভী স্বামী

স্টাফ রিপোর্টার : স্ত্রীকে তালাক দিয়ে তা গোপন রেখে সন্তানের বাবা হয়েছেন বরগুনার এক যৌতুকলোভী স্বামী। নবজাতক সন্তান নিয়ে বিচার চেয়ে এখন দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন প্রতারণার শিকার স্ত্রী বর্ষা (২৩)।
স্বামীর আকাশ (২৮)। তিনি বরগুনার উত্তর লাকুরতলা গ্রামের মো. মঞ্জুরুল হকের ছেলে। বাবা ও ছেলে পেশায় গাড়িচালক। ভুক্তভোগী ও তার মা-বাবার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্ষা যখন ছোট ছিল তখন তার খালা পারভিনের কাছে তাকে রেখে মা রেখা বেগম বিদেশে যান।
এরপর থেকে খালার বাড়িতেই বড় হতে থাকে সে। একসময় খালাতো ভাই আকাশের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে উভয়পক্ষের সম্মতিতে বিয়ে হয় তাদের। বিয়ের পরই শুরু হয় বর্ষার দুর্ভোগ। অন্যদিকে বিদেশে থেকে মা রেখা বেগম বিভিন্ন সময় প্রায় ১০ লাখ টাকা পাঠান জামাই আকাশের কাছে। এরপরও টাকার জন্য বর্ষাকে চাপ দিতে থাকে আকাশ। একপর্যায়ে মা-বাবার সহযোগিতায় বর্ষার ওপর শুরু হয় নির্যাতন।
এরপর ২০১৮ সালের ২৬ জানুয়ারি ব্যাংক থেকে টাকা তোলার কথা বলে প্রতারণার মাধ্যমে বর্ষার কাছ থেকে স্বাক্ষর নিয়ে গোপনে তাকে তালাক দেয় স্বামী আকাশ। গোপন তালাকের পরেও স্বামীর অভিনয় করতে থাকে তিনি। এতে সন্তান সম্ভবা হয়ে পড়েন বর্ষা। সেই অবস্থায়ও মাঝেমধ্যে টাকার জন্য বর্ষার উপর চলে নির্যাতন। বাধ্য হয়ে ঢাকায় বাবার কাছে চলে যায় যান তিনি।
 গোপন তালাকের আট মাসের মাথায় চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন বর্ষা। সন্তান হওয়ার সময় স্বামী আকাশ ও তার বাবা-মা ঢাকায় তার বাসায় যান। আবারও স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় চলে স্বামী-স্ত্রীর সংসার। এর কয়েক দিন পরেই বিদেশ থেকে ফিরে এসে মেয়ের নির্যাতনের সব ঘটনা শুনেন বর্ষার মা রেখা বেগম। এরপর আকাশ ও তার বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে একটি যৌতুক মামলা দায়ের করেন বর্ষা।
বর্ষার আইনজীবী শফিকুল ইসলাম মজিদ জানান, আকাশ ও তার পরিবার যে প্রতারণা করেছে তা নির্মম। যৌতুক দাবির মামলা থেকে রেহাই পেতে প্রতারক স্বামী গোপন রাখা তালাকের কাগজ দেখিয়ে আদালতকে ভুল বুঝিয়ে জামিন পেয়ে যান। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়ে বর্ষার পক্ষ হয়ে পুনরায় আদালতের দ্বারস্থ হবেন বলে জানান তিনি।
বর্ষার মা রেখা বেগম বলেন, আমার ১০ লাখ টাকাও আত্মসাৎ করলো, আবার আমার মেয়ের জীবনটাও নষ্ট করে দিলো ওরা। আমি এর বিচার চাই’। বর্ষা জানান, সন্তান পেটে থাকা অবস্থায়ও তাকে নির্মম নির্যাতন করেছে স্বামী আকাশ ও তার মা পারভিন বেগম। এ বিষয়ে অভিযুক্ত আকাশের সঙ্গে যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি। সবুজের বাবা মঞ্জুরুল হকের সঙ্গে কথা বললে তিনি সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন। তবে এ বিষয়ে গণমাধ্যমে কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি তিনি।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ