শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

গ্যাসের মূল্য বাড়লে মুখ থুবড়ে পড়বে দেশের উৎপাদন খাত

 

স্টাফ রিপোর্টার: গ্যাসের দাম বাড়লে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বস্ত্রখাত ও পোশাক রপ্তানি। মুখ থুবড়ে পড়বে দেশের উৎপাদন খাত। সেই সঙ্গে বেড়ে যাবে অভ্যন্তরীণ বাজারের জন্য উৎপাদিত পণ্যের দামও, বাড়বে আমদানি প্রবণতা। আর তাই গত সপ্তাহে গণশুনানিতে বিতরণ কোম্পানির গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবকে ভয়ানক বলে মনে করছেন শিল্পো উদ্যোক্তারা।

 অবশ্য জ্বালানি প্রতিমন্ত্রীর যুক্তি লোকসান এড়াতেই গ্যাসের দাম বাড়ানো প্রয়োজন। তবে আদৌ দাম বাড়ছে কিনা, তা জানা যাবে আগামী তিন মাসের মধ্যে।

সরকার যখন শিল্প-কারখানায় বিদ্যুৎ দিতে পারছিলো না, তখন নিজেদের উদ্যোগেই বিদ্যুৎ তৈরিতে উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করেছিলো সরকার। এজন্য ক্যাপটিভ পাওয়ার প্লান্টে মাত্র ২ টাকা ৮২ পয়সায় প্রতি ঘনমিটার গ্যাস দেয়া হয়ে ছিলো। এখন তা ৯ টাকা ৬২ পয়সা। বেড়েছে ২৪১ শতাংশ।

এখন আবার গ্যাসের দাম দ্বিগুণ করতে চাইছে বিতরণ কোম্পানিগুলো। গত সপ্তাহে আয়োজিত গণশুনানিতে শিল্প কারখানার ক্যাপটিভ পাওয়ার প্লান্টে প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম প্রস্তাব করা হয়েছে ১৮ টাকা ৮৮ পয়সা।

বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস এসোসিয়েশন, বিটিএমএ’র সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন বলেন, এক মাসে যদি এক কোটি টাকার গ্যাসের বিল বেড়ে দেড় কোটি টাকা হয়, তাহলে আমাদের আগের চেয়ে অনেক বেশি বিল দিতে হবে। গ্যাসের দাম বাড়লেই লাভের পরিমান কিন্তু বাড়ে না। আর পণ্য তৈরির খরচ যদি বেড়ে যায় ,তাহলে কিভাবে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতা করবো।

এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দীন বলেন, গ্যাসের দাম বাড়ানোর যে প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে আমার মনে হয় না এটা কোনো সুবিবেচনা উদ্যোগ। কারণ বাংলাদেশ এখন এমন এক জায়গায় আছে যেখানে কিছু দিন পর নতুন করে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে উঠবে, কিন্তু গ্যাসের দাম বাড়ানো হলে তা মুখ থুবড়ে পড়তে পারে। আর এটা শিল্পায়নের জন্য ভালো কোনো সংবাদ নয়।

যদিও গ্যাসের দাম সহনীয় রাখতে চলতি অর্থবছরে আমদানি ও সম্পূরক শুল্ক, ভ্যাট বাবদ এ খাতে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা করছাড় দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। তারপরও লোকসান এড়াতে দাম বাড়ানোর প্রয়োজন বলে মনে করেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। তিনি বলেন, আমাদের গ্যাস উত্তোলন করতে নয় টাকা খরচ হলেও ছয় টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। এতে অনেক লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে। তাই লোকসানের পরিমান কমানোর জন্যই দামের ব্যাপারে কিছুটা সমন্বয় করা হচ্ছে।

বিতরণ কোম্পানির প্রস্তাবে সব শ্রেণীর গ্যাসের দাম গড়ে বাড়বে ১০২ শতাংশ। সার কারখানার গ্যাসের দাম বাড়বে সবচেয়ে বেশি। তারপর বিদ্যুতে। শিল্পেও দ্বিগুণের বেশি দাম বাড়াতে চায় কোম্পানিগুলো। আর আবাসিক সংযোগে এক চুলা ১ হাজার ৩৫০ এবং দুই চুলায় ১ হাজার ৪৪০ টাকা করার প্রস্তাব রয়েছে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ