ওয়েলিংটনে আজ দ্বিতীয় টেস্টে মাঠে নামছে বাংলাদেশ
স্পোর্টস রিপোর্টার : নিউজিল্যন্ড সফরে ওয়ানডে সিরিজের পর টেস্ট সিরিজেও পরাজয় দিয়ে শুরু করেছে বাংলাদেশ। প্রথম টেস্টে বাংলাদেশ হেরেছে ইনিংস ও ৫২ রানে। তবে নিউজিল্যান্ডের করা বিশাল স্কোরে সামনে ব্যাট করতে নেমে লড়াই করেছে টাইগাররা। আজ দ্বিতীয় টেস্টে মাঠে নামার আগে সেটাই অনপ্রেরণা যোগাচ্ছে টাইগারদের। কারণ লংগার ভার্সনে প্রথম ম্যাচে নিজেদের ব্যর্থতার খোলস থেকে বের হতে পেরেছেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। সেঞ্চুরি করেছেন তিন ব্যাটসম্যান। এই তিন সেঞ্চুরিতে অনুপ্রাণিত হয়েই সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে আজ নামছে বাংলাদেশ। ওয়েলিংটনে আজ ভোর রাত ৪টায় শুরু হবে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট।
২০১৫ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ৯টি টেস্ট সিরিজ খেলে বাংলাদেশ। এ সময়ে পাঁচটিতে ড্র ও চারটি সিরিজ হারে তারা। তবে ২০১৮ সালে চারটি টেস্ট সিরিজের মধ্যে ২টিতে হার, একটি করে জয় ও ড্র করে বাংলাদেশ। গেল নভেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্ট সিরিজ খেলেছিলো টাইগাররা। দুই ম্যাচের সিরিজে ক্যারিবীয়দের হোয়াইটওয়াশ করে বাংলাদেশ। সফরে ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পর সিরিজের প্রথম টেস্টে দুঃসংবাদ নিয়েই খেলতে হয়েছে টাইগারদের। এমনিতে দলে নেই নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব আল হাসাান। এর মধ্যে ইনজুরির কারনে প্রথম টেস্ট থেকে ছিটকে পড়েন সাবেক অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। তাই মিডল-অর্ডারের মেরুদন্ড মুশফিককে হারানোর ক্ষত নিয়ে হ্যামিল্টনে খেলতে নামে বাংলাদেশ। সেই ক্ষতকে বেশি গাঢ় হতে দেননি বাংলাদেশের দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও সাদমান ইসলাম। বাংলাদেশ ইনিংসের শুরুতে চমৎকার ব্যাটিং নৈপুন্যে প্রদর্শন করেন তারা। ২৪ রান করে সাদমান থামলেও, দলের সংগ্রহকে বড় করেন তামিম। তার দৃঢ়তায় ১ উইকেটে ১২১ রানে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। কিন্তু এরপরই ঘটে ছন্দপতন। আবারো নিজেদের ব্যর্থ হন বাংলাদেশের মিডল ও লোয়ার-অর্ডার ব্যাটসম্যানরা। তাই ১২১ থেকে ২৩৪ রানে পৌঁছেই অলআউট হয় বাংলাদেশ। মোমিনুল হক, মোহাম্মদ মিথুন, সৌম্য সরকার, অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, লিটন দাসরা যখন ব্যর্থ সেখানে পুরোপুরিভাবে ব্যতিক্রম ছিলেন তামিম। সেঞ্চুরি করে ১২৬ রানে থামেন তিনি। এছাড়া দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ছিলো লিটনের ২৯ রান। জবাবে বাংলাদেশের ২৩৪ রানে টপকে রানের পাহাড়ে উঠে বসে নিউজিল্যান্ড। টপ-অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানের সেঞ্চুরিতে প্রথমবারের মত নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে ৭শ রান টপকে যায় নিউজিল্যান্ড। জিত রাভাল ১৩২, টম লাথাম ১৬১ ও অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন অপরাজিত ২০০ রান করেন। ৬ উইকেটে ৭১৫ রানে ইনিংস ঘোষনা করে নিউজিল্যান্ড। ৪৮১ রানে প্রথম ইনিংসে পিছিয়ে থেকে ইনিংস হারের শংকায় পড়ে বাংলাদেশ। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংস দুর্দান্ত লড়াই করেন সৌম্য-মাহমুদুল্লাহ-তামিম। তামিমের সেঞ্চুরি মিস হলেও, দাপট দেখিয়ে তিন অংকে পা দিয়েছেন সৌম্য-মাহমুদুল্লাহ। দু’জনের সেঞ্চুরিতে ইনিংস হার এড়ানোর স্বপ্ন দেখতে থাকে বাংলাদেশ। কিন্তু সৌম্য ১৪৯ ও মাহমুদুুল্লাহ ১৪৬ রানে থামলে, ইনিংস ব্যবধানে হারতে হয় টাইগারদের । তামিম এই ইনিংসে করেন ৭৪ রান। বাংলাদেশ থামে ৪২৯ রানে। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটসম্যানদের লড়াই আফসোস বাড়িয়েছে বাংলাদেশ অধিনায়কের। প্রথম ইনিংসে এমন লড়াই হলে ম্যাচের চিত্র পাল্টে যেত বলে মনে করেন মাহমুদুল্লাহ, ‘ব্যাটিং-এর জন্য এই টেস্টে উইকেট খুবই ভালো ছিল এবং আমরা বড় একটা সুযোগই হারিয়েছি। প্রথম ইনিংসে ১ উইকেটে ১২০ রান ছিলো আমাদের। কিন্তু ২৩৪ রানে দল গুটিয়ে যায়। আমরা প্রথম ইনিংসে ভালো করতে পারলে, আমাদের ভাল সুযোগ থাকতো।’ ওয়েলিংটনের উইকেটে বল হাতে ভালো করার কথা বললেন নিউজিল্যান্ডের পেসার ট্রেন্ট বোল্ট, ‘ওয়েলিংটনে ব্যাটিংয়ে বেশ কয়েকটি রেকর্ড । কারণ এখানের উইকেট সত্যিকারের ব্যাটিং পিচ এবং সময়ের সঙ্গে এটা আরও ব্যাটিং উপযোগী হয়। তবে আমি আশা করছি এবার পেসারদের জন্য উইকেটে সবুজ ঘাস থাকবে। যাতে করে ব্যাটসম্যান-বোলার উভয়েই সাফল্য পেতে পারে। কিন্তু আমাদের মূল লক্ষ্য থাকবে ভালো বোলিং করা।’
বাংলাদেশ দল (সম্ভাব্য) : মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ (অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, লিটন দাস, মুশফিকুর রহিম, মুমিনুল হক, সাদমান ইসলাম, মোহাম্মদ মিঠুন, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, নাঈম হাসান, মোস্তাফিজুর রহমান, আবু জায়েদ, খালেদ আহমেদ ও এবাদত হোসেন।
নিউজিল্যান্ড দল (সম্ভাব্য) : কেন উইলিয়ামসন (অধিনায়ক), টড অ্যাস্টল, ট্রেন্ট বোল্ট, কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম, ম্যাট হেনরি, লম লাথাম, হেনরি নিকোলস, জিত রাভাল, টিম সাউদি, রস টেইলর, নিল ওয়াগনার, বিজে ওয়াটলিং ও উইল ইয়ং।