বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪
Online Edition

খালেদা জিয়ার জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে ম্যান্ডেটবিহীন মিডনাইট ইলেকশনের সরকার ---- রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপি অভিযোগ করে বলেছে, সরকার সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। তার সাথে আত্মীয়স্বজন ও পরিবারের সদস্যদের দেখা-সাক্ষাৎ বন্ধ করে দিয়েছে। তিনি বলেন, সুচিকিৎসার অভাবে তার অসুস্থতা ভয়ংকর পর্যায়ে উপনীত হলেও তাকে ফেলে রাখা হয়েছে গুমোট স্যাঁতসেঁতে পরিত্যক্ত কারাগারে। এর ওপর প্রতিনিয়ত সরকারের মন্ত্রী ও আওয়ামী নেতারা সমস্ত শিষ্টাচার, সুরুচিকে অবজ্ঞা করে দেশনেত্রীর অসুস্থতা নিয়ে কটূক্তি ও ব্যঙ্গ করে যাচ্ছেন। এটি কেবল মনুষ্যত্বহীন বিবেকবর্জিত মানুষদের দ্বারাই সম্ভব। আমাদের দলের সিনিয়র নেতারা গত মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করে দেশনেত্রীর পছন্দ মতো বিশেষায়িত হাসপাতালে সুচিকিৎসার জন্য দ্রুত ভর্তি করার আহ্বান জানিয়েছেন। অত্যন্ত পরিতাপ নিয়ে বলছি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছিলেন-কারাবন্দী খালেদা জিয়াকে শিগগিরই বিএসএমএমইউ হাসপাতালে ভর্তি করে সুচিকৎসা করা হবে। তার আগের দিন নি¤œ আদালত হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী বেগম খালেদা জিয়াকে সুচিকিৎসা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তারপর তিনদিন চলে গেছে কিন্তু কোন উদ্যোগ নেই। আদালতের নির্দেশ ও মন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি এখনও কার্যকর হয়নি। আমরা আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রীকে নিয়ে প্রতি মুহূর্ত পার করছি উদ্বেগ-উৎকন্ঠা আর অজানা আশংকায়। 

গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এসব অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, সর্বশেষ গত ১০ ফেব্রুয়ারি বেগম খালেদা জিয়ার সাথে তার পরিবারের সদস্যদের সাক্ষাৎ করতে দেওয়া হয়। এরপর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি এবং গত ৩ মার্চ দুই বার তার আত্মীয়-স্বজন এবং পরিবারের সদস্যরা সাক্ষাতের জন্য আবেদন করলেও অনুমতি দেয়া হচ্ছে না। দলের মহাসচিবসহ সিনিয়র নেতারা গত দুই মাসে বহু চেষ্টা করেও বেগম খালেদা জিয়ার সাথে সাক্ষাতের অনুমতি পাচ্ছেন না। কারাগার কর্তৃপক্ষ বারবার একই কথা বলছেন- ‘হাই লেভেল থেকে অনুমতি না পেলে আমাদের কিছু করার নেই।

এদিকে, এক প্রশ্নের জবাবে রিজভী বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সিদ্ধান্তের বিপরীতে গিয়ে সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদের সংসদে শপথ নেয়াকে রাজনৈতিক ছলনা। তিনি বলেন, যারা অঙ্গীকার ভাঙবে, তারা ‘গণশত্রুতে’ পরিণত হবে। দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে শপথ নিলে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সে কথা গণফোরাম আগেই জানিয়েছে বলেও উল্লেখ করেন রিজভী।

লিখিত বক্তব্যে রুহুল কবির রিজভী বলেন, গণতন্ত্রের জন্য অকুতোভয় আপোষহীন সংগ্রামী, বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে বর্তমান ম্যান্ডেটবিহীন মিডনাইট ইলেকশনের সরকার। সুচিকিৎসার অভাবে তার অসুস্থতা ভয়ংকর পর্যায়ে উপনীত হলেও তাঁকে ফেলে রাখা হয়েছে গুমোট স্যাঁতসেঁতে পরিত্যক্ত কারাগারে। এর ওপর প্রতিনিয়ত সরকারের মন্ত্রী ও আওয়ামী নেতারা সমস্ত শিষ্টাচার, সুরুচিকে অবজ্ঞা করে দেশনেত্রীর অসুস্থতা নিয়ে কটুক্তি ও ব্যঙ্গ করে যাচ্ছেন। এটি কেবল মনুষ্যত্বহীন বিবেকবর্জিত মানুষদের দ্বারাই সম্ভব। আমাদের দলের সিনিয়র নেতারা গত মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাত করে দেশনেত্রীর পছন্দ মতো বিশেষায়িত হাসপাতালে সুচিকিৎসার জন্য দ্রুত ভর্তি করার আহ্বান জানিয়েছেন। অত্যন্ত পরিতাপ নিয়ে বলছি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছিলেন-কারাবন্দী খালেদা জিয়াকে শিগগিরই বিএসএমএমইউ হাসপাতালে ভর্তি করে সুচিকৎসা করা হবে। তার আগের দিন নি¤œ আদালত হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী বেগম খালেদা জিয়াকে সুচিকিৎসা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তারপর তিনদিন চলে গেছে কিন্তু কোন উদ্যোগ নেই। আদালতের নির্দেশ ও মন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি এখনও কার্যকর হয়নি। আমরা আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রীকে নিয়ে প্রতি মুহূর্ত পার করছি উদ্বেগ-উৎকন্ঠা আর অজানা আশংকায়। এখানেই জিঘাংসার শেষ নয়, গত এক মাস ধরে দেশনেত্রীর সাথে তার আত্মীয়-স্বজন ও পরিবারের সদস্যদের দেখা-সাক্ষাৎ বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। সর্বশেষ গত ১০ ফেব্রুয়ারি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার পরিবারের সদস্যদের সাক্ষাৎ করতে দেয়া হয়। এরপর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি এবং গত ৩ মার্চ দুই বার তার আত্মীয়-স্বজন এবং পরিবারের সদস্যরা সাক্ষাতের জন্য আবেদন করলেও অনুমতি দেয়া হচেছ না। আমাদের দলের মহাসচিবসহ সিনিয়র নেতারা গত দুই মাসে বহু চেষ্টা করেও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সাথে সাক্ষাতের অনুমতি পাচ্ছে না। কারাগার কর্তৃপক্ষ বারবার একই কথা বলছেন-‘হাই লেভেল থেকে অনুমতি না পেলে আমাদের কিছু করার নেই।’ এই ‘হাই লেভেল’ টা কে তা আমরা জানি। দেশের জনগণও ভালো করে জানেন। 

রিজভী বলেন, আপনারা জানেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেগম খালেদা জিয়ার অকল্পনীয় জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে তাকে সাজানো মিথ্যা মামলায় কারাগারে রেখে বর্বর কায়দায় গত এক বছর যাবৎ শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে যাচ্ছেন। দেশনেত্রীর প্রতি এই প্রতিহিংসা এবং হিংস্রতার প্রধান কারন জনগণ জানে। আমাদের প্রানপ্রিয় দেশনেত্রী তিন বার নয়, চার বার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে নির্বাচিত হয়। এরপর ১৯৯১ সালের ২০ মার্চ খালেদা জিয়া দেশের প্রথম নারী যিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। বিরোধী দলের দাবী এবং প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার উদ্যোগে রাষ্ট্রপতি-শাসিত থেকে সংসদীয় সরকার ব্যবস্থায় উত্তরণের লক্ষ্যে ১৯৯১ সালের ৬ আগস্ট জাতীয় সংসদে সংবিধানের ঐতিহাসিক দ্বাদশ সংশোধনী বিল সর্বসম্মতভাবে পাশ হয়। সংসদীয় সরকার ব্যবস্থার অধীনে খালেদা জিয়া ১৯ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দ্বিতীয়বারের মতোা শপথ গ্রহণ করেন।

আমরা প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আবারও আহ্বান জানাবো-আপনার মনের মতো নির্বাচন তো শেষ। এবার দেশনেত্রীকে মুক্তি দেন। তার বয়স এবং গুরুতর অসুস্থতার কথা বিবেচনা করে তাকে কারামুক্ত করুন। কারন বন্দীশালার চাবি আপনার হাতেই। তাকে সুচিকৎসার জন্য বিশেষায়িত হাসপাতালে ভর্তির সযোগ দিন।

রিজভী বলেন, আমরা বিএনপি’র পক্ষ থেকে বারবার বলে আসছি-বিএসএমএমইউ (পিজি)-তে পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা ব্যবস্থার সুযোগ নেই। আমাদের দাবি কতখানি সত্য ছিল তা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গুরুতর অসুস্থ হয়ে বিএসএমএমইউ-তে ভর্তি হলে তাঁকে চিকিৎসা দিতে ল্যাব এইড থেকে ধার করে চিকিৎসা যন্ত্র নিয়ে আসতে হয়েছে। আরও উন্নত চিকিৎসা দিতে তাঁকে নেয়া হয়েছে সিঙ্গাপুরে। আমরা তো আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে দেশেই একটি বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসার দাবি করে আসছি। অথচ সেই দাবি প্রতিহিংসার কারণে বারবার উপেক্ষিত হচ্ছে।  

সাংবাদিক সম্মেলন থেকে বেগম খালেদা জিয়াসহ বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরী, শামসুর রহমান শিমুল বিশ^াস, হাবিব উন নবী খান সোহেল, লায়ন আসলাম চৌধুরী, ফজলুল হক মিলন, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, ড. আসাদুজ্জামান রিপন, মীর সরফত আলী সপু, সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকু, শহিদুল ইসলাম বাবুল, শেখ রবিউল ইসলাম রবি, মামুনুর রশিদ মামুন, শেখ মোহাম্মদ শামীম, হযরত আলী, মিয়া নূর উদ্দিন অপু, মনোয়ার হোসেন, ইসহাক সরকার ছাড়াও দেশব্যাপী হাজার হাজার বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন রিজভী।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ