বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
Online Edition

বিশ্ব গণমাধ্যমের প্রধান শিরোনাম চকবাজারের আগুন

স্টাফ রিপোর্টার: আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে ঢাকার চকবাজারের ভয়াবহ অগ্নিকান্ড। বিবিসি, রয়টার্স, আল জাজিরাসহ প্রথম সারির গণমাধ্যমগুলোতে প্রধান শিরোনামে প্রচারিত হয়েছে এ দুর্ঘটনার খবর। প্রতিবেদনগুলোয় আগুন লাগার কারণ হিসেবে আবাসিক এলাকায় রাসায়নিকের গুদামকেই দায়ী করা হয়েছে।

রয়টার্স, বিবিসি আর সিএনএন সবার প্রতিবেদনই বলছে, রাজধানী ঢাকার অপরিকল্পিত নগরায়নে অগ্নিকা-ের মতো মর্মান্তিক দুর্ঘটনা  বেড়েই চলছে প্রতি বছর। পুরান ঢাকার সরু গলি আর গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকা বহুতল ভবন, যেকোন দুর্ঘটনার পর উদ্ধার কাজে বাধা হয়ে দাঁড়ায় বলে উল্লেখ করেছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।

ঐতিহ্যবাহী পুরান ঢাকায় দাহ্য রাসায়নিক পদার্থের গুদাম স্থাপন নিয়েও উদ্বেগ জানিয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম। ভবন নির্মাণে নীতিমালা লঙ্ঘনে দুর্ঘটনা বাড়ছে বলে উদ্বেগ জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

এদিকে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার নগর কাঠামোর অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করেছে রয়টার্স। প্রতিবেদনে বলছে, রেস্তোরাঁসহ পাঁচটি বহুতল ভবনের মাঝে কোনো ধরণের ফাঁকা জায়গা ছিল না। তাই রাস্তার ধারে গাড়ির সিলিন্ডার বিস্ফোরণের আগুণ ছড়িয়েছে দ্রুত গতিতে। ঘিঞ্জি গলি দমকল বাহিনীর প্রবেশে বাঁধা হয়ে দাঁড়ানোয় উদ্ধার কাজে দেরী হয়েছে বলে মনে করছে বিবিসি।  

বিবিসিতে দিনের প্রধান খবর হিসেবে প্রকাশ করা হয় আগুনের খবরটি। শিরোনাম ছিলো, ‘ঢাকার ঐতিহাসিক এলাকায় আগুনে নিহত ৭৮’। একই সঙ্গে আরও চারটি চারটি সাইডস্টোরি প্রকাশ করা হয়। মূল সংবাদে বলা হয়, ঐ এলাকায় আগুন লাগার ঘটনা নতুন নয়, ২০১০ সালেও আগুন লেগে নিমতলীতে ১২৪ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সেবার গঠিত তদন্ত কমিটি কেমিক্যাল কারখানা সরাতে বললেও তা বাস্তবায়নে কোন পদক্ষেপই নেয়া হয়নি।

মূল খবরে বিবিসির প্রতিবেদক বলেন, বাংলাদেশে বড় ভবনে আগুন লাগার ঘটনা সাধারণ ব্যাপার। কর্তৃপক্ষের শিথিল নিয়ন্ত্রণ ও ত্রুটিপূর্ণ অবস্থাই এর কারণ।

আল-জাজিরা ব্যানার হেডলাইন করেছে চকবাজারের আগুনকে। শিরোনাম দেয়া হয়, আমি বিগ ব্যাংয়ের মতো বিস্ফোরণ শুনেছি বাংলাদেশে বড় আগুনে অনেক মানুষের মৃত্যু। সঙ্গে ছিলো আরও তিনটি সাইডস্টোরি। খবরে আল-জাজিরা বলেছে, বাংলাদেশে লাভজনক ইন্ডাস্ট্রির খরচ কমানোর অর্থ হলো নিরাপত্তায় গুরুত্ব না দেয়া। ২০০৬ সালের পর থেকে দেশটিতে ৬০০ শ্রমিক আগুনে পুড়ে মারা গেছে।

সিএনএনে ‘ঢাকায় অ্যাপার্টমেন্টে আগুন নিহত ৭০’ শিরোনামে দেয়া দ্বিতীয় প্রধান খবরে বলা হয়, ঢাকার আগুন লেগে মৃত্যুর মর্মান্তিক ইতিহাস রয়েছে।

সিএনএন ২০১২ সালে তাজরীন ফ্যাশনে আগুন লেগে ১১৭ জন নিহত হওয়ার ঘটনাসহ বাংলাদেশে ঘটা বড় অগ্নিকান্ডের খতিয়ানও উল্লেখ করেছে খবরে।

এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক টাইমস, যুক্তরাজ্যের গার্ডিয়ান, ডেইলি মেইল, সৌদি আরবের আরব টাইমস, ভারতের এনডিটিভিসহ বিশ্বের প্রায় সবকটি সর্বাধিক পঠিত সংবাদমাধ্যমে গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করা হয়েছে চকবাজারের আগুনের খবরটি।

সকাল থেকে ঘটনার সবশেষ খবর ধারাবাহিকভাবে প্রচার করেছে বেশ কিছু আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম। এছাড়া, জনগণের নিরাপত্তার স্বার্থে জরুরী সতর্কবার্তা দিয়েছে গুগল ও ফেইসবুক।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ