প্রতিশোধের উন্মত্ততা নেই!
আত্মঘাতী বোমা হামলায় ভারতীয় নিরাপত্তারক্ষী বাহিনীর সদস্যদের মৃত্যুর প্রতিক্রিয়ায় জম্মুতে কাশ্মীরী ও স্থানীয় মুসলমান বাসিন্দাদের মারধরের ঘটনা ঘটেছে। এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জম্মু ও কাশ্মীরের সাবেক দুই মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি ও ওমর আবদুল্লাহ। তারা বলেন, হামলার দায় মুসলমানদের নয়, সন্ত্রাসীদের। ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, হামলার পেছনে পাকিস্তানের মদদ থাকার অভিযোগ তুলে বিক্ষোভকারীরা মিছিলে মিছিলে মুখরিত করে রেখেছিল জম্মু শহর। স্থানীয় প্রশাসন সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে জারি করেছে কারফিউ।
উত্তেজিত হওয়া সহজ, উগ্র হওয়াও কোন কঠিন বিষয় নয়। জম্মুতে কাশ্মীরী ও স্থানীয় মুসলমানদের ওপর হামলার ঘটনায় আমরা তেমন চিত্রই লক্ষ্য করলাম। তবে ১৬ ফেব্রুয়ারিতে মুদ্রিত ওই খবরটির একদিন পর ১৭ ফেব্রুয়ারিতে আমরা আর একটি খবর দেখলাম আনন্দবাজার পত্রিকায়। খবরটিতে বলা হয়, সামরিকতায় আচ্ছন্ন জম্মু-কাশ্মীরে দেশরক্ষার পেশাগত দায়িত্বের বলি হয়েছেন বাবলু সাঁতরাও। তবুও প্রতিশোধের উন্মত্ততা নেই স্বামীহারা স্ত্রী মিতার মধ্যে। জঙ্গী দমনের নামে রক্তপাত কিংবা পাকিস্তানের সাথে যুদ্ধ চান না তিনি। স্বামীহারা মিতার কাছে প্রতিশোধ মানেই নতুন রক্তপাতের আশংকা। যুদ্ধ মানেই উন্মত্ততা। তাই শান্তিপূর্ণ পথে কাশ্মীর সংকট সমাধানে সরকারের প্রতি আহ্বান জানালেন বাঙালি জওয়ান বাবলু সাঁতরার স্ত্রী মিতা।
বর্তমান সভ্যতায় মিতার জীবনদৃষ্টি যেন ব্যতিক্রম। তিনি বৃহস্পতিবারের জঙ্গী হামলাকে প্রথমত নিরাপত্তাজনিত ঘাটতি হিসেবে দেখছেন। সংবাদ মাধ্যমে তিনি বলেছেন, ‘তেমন নিরাপত্তা ছিল না, থাকলে এমন ঘটনা দেখতে হতো না।’ এদিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্রমোদি বলেছেন, পুলওয়াসা হামলার কঠোর জবাব দিতে যে কোন হামলার কঠোর জবাব দিতে যে কোন পদক্ষেপ নেওয়ার স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে সেনাবাহিনীকে। এ প্রসঙ্গে মিতা বলেন, ‘এইভাবে কোন সমাধান হতে পারে না। যতোটা শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করা যায় সেই চেষ্টা করুক সরকার।’ স্বামী হারিয়েও রক্তপাতের বিরুদ্ধে সোচ্চার মিতা। তিনি আরো বলেন, ‘শুধু তো আমাদের দেশে নয় সারাবিশ্বে কত তাজাপ্রাণ শেষ হয়ে যাচ্ছে তার হিসাব নেই। আজ যদি নতুন করে যুদ্ধ বাধে তাহলে আবার মায়ের কোল খালি হবে। এমনটি হোক তা আমি চাই না।’ এখন দেখার বিষয় হলো ভারত কোন পথে যায়।