শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

চৌগাছায় সাবেক কাউন্সিলর পিতা-পুত্রসহ ২৪ জামায়াত নেতাকর্মী কারাগারে

চৌগাছা (যশোর) প্রতিনিধি : কথিত নাশকতা প্রচেষ্টার একটি মামলায় যশোরের চৌগাছা উপজেলা জামায়াতের ২৪ নেতাকর্মীকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। গতকাল সোমবার আত্মসমর্পন করে জামিন আবেদন করলে যশোরের জেষ্ঠ বিচারিক হাকিম বুলবুল আহমেদের আদালত তাদের জামিন নামুঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আত্মসমর্পনকারী নেতাকর্মীরা হলেন হাকিমপুর ইউনিয়ন জামায়াতের সভাপতি আব্দুস সবুর খান, ধুলিয়ানি ইউনিয়ন জামায়াতের সভাপতি   রোকনুজ্জামান, জগদিশপুর ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারি ও স্বর্পরাজপুর দাখিল মাদরাসার সহ-সুপার মাওলানা রওশন জামিল, চৌগাছা পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের সাবেক দু’বারের কাউন্সিলর ও খড়িঞ্চা দাখিল মাদরাসার সহ-শিক্ষক মহিউদ্দিন, পাশাপোল ইউপির পলুয়া ওয়ার্ডের সাবেক কয়েকবারের মেম্বার আব্দুল জলিল, মাকাপুর দাখিল মাদরাসার সহকারী মৌলভি জাহাঙ্গীর আলম, শহরের পুস্তক ব্যবসায়ী আ¤্রকানন পাড়ার সাইফুল ইসলাম দেওয়ান, উপজেলা শিবিরের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সরোয়ার হুসাইন, জিসিবি আদর্শ কলেজের অফিস সহকারী ও বাদেখানপুর গ্রামের নূরুজ্জামান, শহরের কাসারি ব্যবসায়ী কুঠিপাড়ার আবুল খায়ের ও তার পুত্র বেকারি ব্যবসায়ী আবুল কালাম, চন্দ্রপাড়া গ্রামের সিরাজুল ইসলাম ও ইমদাদুল হক, হাজীপুর গ্রামের রজব আলী, মাঠচাকলা গ্রামের কুতুব উদ্দিন ও শাহাবুদ্দিন, কোমরপুর গ্রামের হাবিল উদ্দিন, নারায়নপুর গ্রামের ওহিদুল ইসলাম ও রূপচাদ আলী, শহরের নার্সারি ব্যবসায়ী বাকপাড়ার হাবিবুর রহমান, পাঁচনমনা গ্রামের শাহিনুর রহমান, পাশাপোল গ্রামের হায়দার আলী, পলুয়া গ্রামের সেলিম উদ্দিন ও স¦রুপপুর গ্রামের নূরুল মীর।
তবে কারাগারে পাঠানো নেতাকর্মীদের পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে হয়রানি করার উদ্দেশ্যেই সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যমূলকভাবে পুলিশ তাদের নামে এই মামলা দায়ের করেছে। কাসারি ব্যবসায়ি আবুল খায়েরের পুত্র আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন আমার পিতা চৌগাছা বাজারের একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। তিনি একাধিকবার চৌগাছা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির  নেতা নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি বয়োবৃদ্ধ মানুষ।  আমার ছোট ভাই বাজারের  বেকারি ব্যবসায়ী। ব্যবসায়িক কারণেই তারা দোকান আর বাড়ি ছাড়া আত্মীয় স্বজনের বাড়ি পর্যন্ত যেতে পারেন না। অথচ পুলিশ তাদের নামে বাড়ি থেকে ১২ কিলোমিটার দুরের একটি স্থানে কথিত নাশকতা পরিকল্পনার অভিযোগে সাজানো মামলা দায়ের করেছে। একই অভিযোগ করেছেন নার্সারি ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমানের মা রওশনারা বেগম। তিনি বলেন আমার একমাত্র পুত্র বাজারের প্রতিষ্ঠিত নার্সারি ব্যবসায়ী। বাজারের সকলেই তাকে চেনে। সে কোন নাশকতার সাথে জড়িত থাকতে পারে না। শুধুমাত্র জামায়াত সমর্থক হওয়ার কারণেই আমার ছেলেকে কথিত সাজানো নাশকতার মামলায় জড়ানো হয়েছে। তিনি আরো বলেন আমার একমাত্র ছেলের তিনটি শিশু পুত্র ও কন্যা রয়েছে। তার ছোট মেয়ের বয়স মাত্র ছয়মাস। ছেলের বয়স দেড় বছর। আরেক মেয়ে ৪র্থ শ্রেণিতে পড়ে। আমির একটি হাত ভাঙা। চোখেও অপারেশন হয়েছে। বৃদ্ধা মানুষ। ঠিকমত চলতে ফিরতে পারিনা। আমি এবং ছোট দুটি বাচ্চা নিয়ে আমার পুত্রবধূ ও ছেলে এমনিতেই নাজেহাল। তার রাজনীতি করার সময় কোথায়?  অথচ পুলিশ তাকে কথিত নাশকতার সাজানো মামলায় আসামী করেছে। আমার পরিবারের ভোগান্তির কথাও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী একবারো চিন্তা করলোনা।
উল্লেখ্য ২০১৮ সালের ২২ অক্টোবর উপজেলার হাকিমপুর দাখিল মাদরাসা মাঠে বসে নাশকতা পরিকল্পনা করার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে চৌগাছা থানায় একটি মামলা দায়ের হয়। যার নং ২৭। এই মামলায় জামিন নিতে তারা সোমবার যশোরের জেষ্ঠ বিচারিক হাকিম বুলবুল আহমেদের আদালতে আত্মসমর্পন করেন।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ