বর্তমান দুদক সরকারের প্রতিহিংসা বাস্তবায়নের অত্যাচারী মেশিন
স্টাফ রিপোর্টার: বর্তমান দুর্নীতি দমন কমিশনকে সরকারের প্রতিহিংসা বাস্তবায়নের অত্যাচারী মেশিন হিসেবে অভিহিত করেছে বিএনপি। গতকাল সোমবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, বর্তমান দুর্নীতি দমন কমিশনে আসীন উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা সরকারের প্রতিহিংসা বাস্তবায়নের অত্যাচারী মেশিন ছাড়া আর কিছুই নয়। সেজন্য দুদক বিরোধী রাজনৈতিক শক্তিকে দমন করতে গিয়ে বেপরোয়া অনাচারে লিপ্ত থেকে মনুষ্যত্বহীনতার ডালপালা বিস্তার করেছে। আর এতে নির্দোষ-নিরীহ-নিরাপরাধ মানুষও দুদক এর দায়ের করা মিথ্যা মামলার অমানবিকতার হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না। বিশেষ করে তাদের নির্মম নির্যাতনের শিকার বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া, জিয়া পরিবারের সদস্য ও বিরোধী রাজনীতিক নেতাকর্মীরা।
দুদকের মামলায় অসংখ্য নিরপরাধ মানুষ নির্যাতনের শিকার হচ্ছে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশে রোববার ১০৯২ দিন পর কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন জাহালম। নির্দোষ জাহালম এতদিন কারাগারে ছিলেন শুধুমাত্র আওয়ামী সরকারের ক্ষমতায় আশ্রিত দুদক এর রাজনৈতিক ভূমিকার কারণে। বর্তমান দুর্নীতি দমন কমিশনে আসীন উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা সরকারের প্রতিহিংসা বাস্তবায়নের অত্যাচারী মেশিন ছাড়া আর কিছুই নয়। সেজন্য দুদক বিরোধী রাজনৈতিক শক্তিকে দমন করতে গিয়ে বেপরোয়া অনাচারে লিপ্ত থেকে মনুষ্যত্বহীনতার ডালপালা বিস্তার করেছে। আর এতে নির্দোষ-নিরীহ-নিরাপরাধ মানুষও দুদক এর দায়ের করা মিথ্যা মামলার অমানবিকতার হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না।
রিজভী বলেন, ভুয়া ভোটের সরকারের চাহিদা মেটাতে গণতান্ত্রিক শক্তিকে পরাধীনতার শৃঙ্খলে বন্দী করতে দুর্নীতি দমন কমিশন উদ্ভ্রান্ত উগ্রতা নিয়ে কাজ করছে। আর সেটির নির্মম শিকার হয়েছেন দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দলের চেয়ারপার্সন ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এবং অসংখ্য নেতৃবৃন্দ। এই ধরণের নির্বিচারে মামলার ধারাবাহিকতায় প্রকৃত অপরাধীকে বাদ দিয়ে নিরীহ যুবক জাহালম আটকিয়ে থাকে কারাগারে।
বিএনপির এই নেতা বলন, এই দুদক সরকারের প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে অন্যায়ভাবে সাজা দিয়েছে। এই দুদক আইনী নিয়ম-কানুন কিছুই না মেনে আওয়ামী সরকারের শীর্ষ ব্যক্তির নির্দেশেই দেশের সর্বাধিক জনপ্রিয় নেত্রী বেগম জিয়াকে আটকিয়ে রাখতে মামলা সাজিয়েছে। বিরোধী শক্তিকে দমন করতে আওয়ামী অবৈধ গোষ্ঠীর একটি হাতিয়ার হলো বর্তমান দুর্নীতি দমন কমিশন। এই দুদক ভুয়া ভোটের সরকারের ‘দশ বছরের মেগা দুর্নীতি’র কেশাগ্র স্পর্শ করতে পারেনি। যদি করতেই পারতো তবে আওয়ামী লীগের অনেক মন্ত্রী-উপদেষ্টা এবং নেতারা যাদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ তারা আজকে প্রবল প্রতাপে দেশব্যাপী দাপিয়ে বেড়াতে পারতো না। দেশের বাইরে বেগম পল্লী ও সেকেন্ড হোম গড়ে উঠতো না। নিউইয়র্কে মন্ত্রীর পুত্রের বিলাসবহুল এ্যাপার্টমেন্ট থাকতো না। সাবেক অর্থমন্ত্রী চার হাজার কোটি টাকা চুরিকে দুর্নীতি বলতে নারাজ হতেন না। এই দুদক এর কারণেই দেশে ‘ক্রিমিনাল ইকোনমি’র আশকারা পেয়ে পত্র-পল্লবে বিশাল বৃক্ষে পরিণত হয়েছে। জাহালম এর দীর্ঘদিন কারাভোগের ঘটনায় দুদকের ভূমিকা নজীরবিহীনভাবে ন্যক্কারজনক। এই ঘটনায় দেশে একটি ‘ক্রিমিনাল এ্যাডমিনিষ্ট্রেশন’ এর ছবিই ভেসে ওঠে।
বেগম জিয়াকে ‘গণতন্ত্রের মা’ উল্লেখ করে রিজভী বলেন, দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ দেশের বিভিন্ন কারাগারে অন্যায়ভাবে কারান্তরীণ নেতাকর্মীদের নি:শর্ত মুক্তির দাবিতে আগামী ৮ই ফেব্রুয়ারী ২০১৯ শুক্রবার কেবলমাত্র ঢাকায় বিএনপি’র উদ্যোগে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হবে। এছাড়া ৯ ফেব্রুয়ারী দেশব্যাপী একই দাবিতে ঢাকা মহানগরী বাদে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হবে।