নাগরিক সুবিধা বঞ্চিত
শাহজাদপুরে বসবাসকারী উপজাতি হিসেবে পরিচিত “বাগদী ও পাটনী” স¤প্রদায় নাগরিক সুযোগ সুবিধা বঞ্চিত হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। শাহজাদপুর পৌর এলাকার টাউন মসজিদের পূর্বে উপজেলা পশুসম্পদ অফিসের পশ্চিমের সামান্যাংশে গাদাগাদি করে বসবাস করা পাটনী ও বাগদী সম্প্রদায় মানবেতর জীবন যাপন করছে। জাতিতে হিন্দু এ স¤প্রদায়টি অষ্ট্রিক জনগোষ্ঠীর দ্বারা প্রভাবিত। এদের দৈহিক গঠন সমাজের অন্যান্য মানুষদের চেয়ে একটু ভিন্ন। উচ্চতায় এরা মধ্যম আকৃতির, গায়ের রং কালো, ঠোট মোটা, কপাল কিছুটা প্রসস্ত, চুল কারো কারো কোকড়ানো, চোখের মনি কালো, নারীদের বক্ষ অপেক্ষাকৃত উঁচু ও নিতম্ব কিছুটা স্ফীত। এদের ভাষা ও খাদ্যাভাস সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রকৃতির। জানা যায়, এরা কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাথে কলকাতা থেকে শাহজাদপুরে এসেছিল। পুরুষদের মধ্যে কেউ বেহারা বা পালকি বহন করে কেউ মেথরের কাজ করে। আর মহিলাদের অধিকাংশই শহর পরিছন্ন কাজে নিয়োজিত থাকে। দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করা স¤প্রদায়টির নারী, পুরুষ শিশু সবাই নাগরিক সুবিধা বঞ্চিত হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। অল্প জায়গায় প্রায় অর্ধশত পরিবার কয়েক যুগ ধরে বসবাস করে আসছে। ছোট ছোট টিনের দুচালা ঘর আর বাঁশ তালাইয়ের বেড়ায় সমৃদ্ধ জরাজীর্ণ ও অপরিছন্ন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাস করায় এসব পরিবারের শিশুরা অধিকাংশই স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ভুগছে। এছাড়া অর্থের অভাবে এদের শিশুরা শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত। অর্ধশত পরিবারের ব্যবহারের জন্য মাত্র সরকারিভাবে একটি টয়লেট আর তারা পাম্প টিউবওয়েল স্থাপন করলেও তা দিয়ে কিভাবে এতগুলো লোকের চাহিদা মিটানো সম্ভব হয় এ প্রশ্ন বাগদী সম্প্রদায়ের মানুষের। দারিদ্র্য সীমার নীচে বসবাসকারী বাগদী ও পাটনী সম্প্রদায়টি অবজ্ঞা অবহেলায় পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করে। বিজ্ঞানের উৎকর্ষতায় পালকীর প্রচলন কমে যাওয়ায় যুগের সাথে নিজেদের খাপ খাওয়াতে না পেরে অনেকটাই বেকার বসে থাকে। উপার্জনের অন্য পেশা না থাকায় দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির এ যুগে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।