বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
Online Edition

শীঘ্রই স্থানান্তর হবে মংলা কাস্টম হাউজ

খুলনা অফিস : চলতি মাসেই স্থানাস্তর হচ্ছে মংলা কাস্টম হাউজ। বন্দর ব্যবহারকারীদের দাবির মুখে মংলা কাস্টম হাউজ খুলনার খালিশপুর থেকে মংলা বন্দর এলাকায় পূর্ণাঙ্গভাবে স্থানান্তর করা হবে। 

মংলা কাস্টম হাউজের কমিশনার সুরেশ চন্দ্র বিশ্বাস জানান, আগামী ২০ জানুয়ারি থেকে এর কার্যক্রম মংলা বন্দরের নতুন ইউনিট থেকে চালু করা হবে। তিনি বলেন, ‘খুলনাস্থ মংলা কাস্টম হাউজের রফতানি শুল্কায়ন ও আমদানি শুল্কায়ন গ্রুপ-২ এবং ৪ এর শুল্কায়ানসহ সব কার্যক্রম চালু করতে এরই মধ্যে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।’

১৯৫০ সালের ১ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে দেশের দ্বিতীয় সামুদ্রিক বন্দর হিসেবে মংলার কার্যক্রম শুরু হয়। তখন থেকেই মংলা কাস্টমস হাউজ খুলনার খালিশপুরে অবস্থিত হওয়ায় ব্যবসায়ীদের অনেক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বলে জানা যায়। দীর্ঘদিন ব্যবসায়ীরা আমদানি-রফতানির স্বার্থে মংলা কাস্টম হাউস মংলাতেই রাখার দাবি জানিয়ে আসছিলেন। মংলা বন্দর ব্যবহারকারী মেসার্স নুরু এন্ড সন্সের কর্ণধার এইচ এম দুলাল এবং মেসার্স মায়া এন্টারপাইজের কর্ণধার আহসান হাবিব হাসান বলেন, ‘মংলা বন্দর থেকে খুলনার খালিশপুর পর্যন্ত দূরত্ব ৫৮ কিলোমিটার। একজন ব্যবসায়ীকে শুল্কায়নসহ পণ্য খালাসের জন্যে দুই থেকে তিন দফায় খুলনা-মংলা যাতায়াত করতে হয়। ব্যবসায়ীদের এ হয়রানি দীর্ঘ ৬৮ বছর ধরে চলে আসলেও এখনও মংলায় আসেনি মংলা কাস্টমস হাউজ।’ তারা আরও বলেন, ‘মংলা বন্দর থেকে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হলেও যথাস্থানে কাস্টম হাউজের মূল অফিস না থাকায় ব্যবসায়ীদের ভয়াবহ ভোগান্তিতে পড়তে হয়।’ তারা বলেন, ‘বন্দরে কাজ শেষ করে কাস্টম ক্লিয়ারেন্সের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে খুলনায় যেতে হয়। পরে ওই কাগজ নিয়ে আবার বন্দরে ফিরে এসে সংশ্লিষ্ট অফিসে জমা দিতে হয়।’

খুলনা সি এন্ড এফ (ক্লিয়ারিং এন্ড ফরোয়ার্ডিং) এসোসিয়েশনের সভাপতি সুলতান আহমেদ খান বলেন, ‘শুধু কার্যালয় মংলায় আসলেই তো সমস্যার সমাধান হবে না। শুল্কায়ন কার্যক্রমের সঙ্গে বেশ কিছু কার্যক্রম জড়িত। ব্যাংকিং সেবা, ক্লিয়ারিং এন্ড ফরোয়ার্ডিং (সিএন্ডএফ), শিপিং এজেন্সির কার্যক্রমসহ বেশ কিছু কার্যালয়ও শুল্ক কার্যালয়ের সঙ্গে সঙ্গে মংলায় স্থানান্তর করতে হবে।’

মংলা কাস্টমস হাউজের কমিশনার সুরেশ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘প্রতিষ্ঠার পর থেকে মংলা বন্দরের আমদানি-রফতানিকৃত পণ্যের কাস্টমস সংশ্লিষ্ট যাবতীয কার্যক্রম খুলনা ও মংলা এ দু’স্থানে সম্পন্ন হয়ে আসছে। পণ্য পরীক্ষা, রামেজ (ঘোষণার অতিরিক্ত কোনও পণ্য জাহাজে আছে কিনা তা পরীক্ষা), ইপিজেড পণ্য পরীক্ষা ও শুল্কায়ন, পণ্য খালাস, প্রিভেন্টিভসহ (নিবারকমূলক কার্যক্রম) আনুষঙ্গিক কার্যক্রম মংলা কাস্টমস কাউজের বন্দর ইউনিট অর্থাৎ মংলা বন্দরে সম্পন্ন হচ্ছে।  অন্যদিকে সব প্রশাসনিক কার্যক্রমের পাশাপাশি আইজিএম (জাহাজে আমদানিকৃত পণ্যের ঘোষণা) দাখিল, আমদানি-রফতানিকৃত পণ্যের শুল্কায়ন, ব্যাংকিং কার্যক্রম ও রাসায়নিক পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম খুলনার খালিশপুরে অবস্থিত মূল কার্যালয়ে সম্পন্ন হয়ে আসছে। তবে, মংলা বন্দর উপদেষ্টা কমিটির ১৪ তম সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ২০ জানুয়ারি থেকে মংলা ইউনিট থেকে সব কর্যক্রম পরিচালিত হবে। এজন্য সংশ্লিষ্ট একাধিক দফতরে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে।’

এ ব্যাপারে মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমডোর এ কে এম ফারুক হাসান বলেন, ‘যেকোনও মূল্যেই আমরা চাই মংলা বন্দরের সঙ্গেই কাস্টমস কার্যালয় স্থানান্তরিত হোক। আপাতত সমস্যার সমাধানের জন্যে আমাদের ট্রাফিক বিভাগের কিছু কক্ষ তাদের ছেড়ে দিয়েছি। কিন্তু তাতে তাদের পুরো কার্যক্রম সম্পাদন করা সম্ভব হচ্ছে না। এ সমস্যা সমাধানে যত দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া যায় সেটি আমাদের বন্দরের জন্যেই মঙ্গল।’

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ