শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

নির্বাচন কমিশনার তার ভোট কেন্দ্রে ধানের শীষের এজেন্ট পাননি

স্টাফ রিপোর্টার: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রগুলোতে ধানের শীষসহ অন্যান্য বিরোধী দলের এজেন্টদের পাওয়া যায়নি। এ চিত্র শুধু সাংবাদিক ও পর্যবেক্ষকরাই দেখেন নি। খোদ নির্বাচন কমিশনারগণও সরেজমিন কেন্দ্রে গিয়ে এ চিত্র দেখেছেন। নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার গতকাল রোববার সকাল সোয়া ৯টার দিকে রাজধানীর মগবাজারের ইস্পাহানি বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দেন। এ কেন্দ্রে তিনি বিরোধী প্রার্থীদের কোনো এজেন্ট পাননি বলে জানান সাংবাদিকদের। এজেন্টদের বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, ধানের শীষের এজেন্টরা কেন্দ্রে না আসলে কী করার? তাঁরা কেন্দ্রে কেন আসেননি বা কেন কোনো এজেন্ট নেই, সেটা প্রার্থীর নির্ধারিত এজেন্টরাই বলতে পারবেন।
নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেন, আমি তো আমার নিজের কেন্দ্রে এসেও বিরোধী পক্ষের কারো এজেন্ট পেলাম না। কেন পেলাম না, এটা তাদের কাছেই জানতে চান।
সিইসি কে এম নূরুল হুদা বলেন, ধানের শীষের এজেন্টরা কেন্দ্রে না আসলে কী করার? তাঁরা কেন্দ্রে কেন আসেননি বা কেন কোনো এজেন্ট নেই, সেটা প্রার্থীর নির্ধারিত এজেন্টরাই বলতে পারবেন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গতকাল রোববার রাজধানীর উত্তরার ৫ নম্বর সেক্টরের আইইএস স্কুল কেন্দ্রে ভোট দিতে এলে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন সিইসি।
বেলা পৌনে ১১টার দিকে কেন্দ্রটিতে ভোট দিতে আসেন কে এম নূরুল হুদা। সাংবাদিকেরা তাঁর কাছে জানতে চান, কেন্দ্রে কেন ধানের শীষের কোনো এজেন্ট নেই?
জবাব দিতে গিয়ে সিইসি আরও বলেন, তাঁরা (ধানের শীষের এজেন্ট) কেন আসতে পারেন নি, তা তিনি জানেন না। তবে পোলিং এজেন্টদের কেউ আসতে পারছেন না, বা তাঁদের আসতে বাধা দেওয়া হচ্ছে? এমন কোনো অভিযোগ তাঁদের কাছে করেননি। আইইএস স্কুল কেন্দ্রে ধানের শীষের এজেন্ট আছে কি না, এ বিষয়টি তিনি (সিইসি) খেয়াল করেননি। এ নিয়ে কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা প্রিজাইডিং কর্মকর্তাকেও জিজ্ঞাসা করা হয়নি বলে জানান তিনি।
সারা দেশে নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে কে এম নূরুল হুদা বলেন, এখন পর্যন্ত সারা দেশে নির্বাচনের পরিবেশ ভালো। কিছু জায়গায় বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। তবে সেগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আইইএস স্কুল কেন্দ্রের নির্বাচনী পরিবেশও ভালো বলে তিনি জানান।
দেশের বিভিন্ন জায়গার ভোটকেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা সম্পর্কে নির্বাচন কমিশনারকে অবগত করে, এ বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে সিইসি বলেন, কেন্দ্রগুলোতে নিয়োজিত পুলিশ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ সবাইকে নিজ নিজ দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দেয়া আছে।
সারা দেশের সব কেন্দ্র ঢাকায় বসে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না জানিয়ে সিইসি বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে ভোটগ্রহণ বন্ধ থাকবে। বিশৃঙ্খলা হওয়া কেন্দ্রগুলোতে ভোটগ্রহণ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পরিবেশ ভালো হলে আবার কেন্দ্রগুলোতে ভোট চালু করা হবে। তবে কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত সব কর্মকর্তাই তাঁদের দায়িত্ব পালনে সর্বাত্মক চেষ্টা করবেন বলেও জানান তিনি।
কিছু কিছু ভোটকেন্দ্রে গোপন কক্ষ খোলা রেখে ভোটারদের ভোট দিতে বাধ্য করা হচ্ছে ? এই অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে সিইসি বলেন, এমনটা হওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। কোনো ব্যক্তি বা কর্মকর্তা এমনটা করতে পারেন না
এবারের নির্বাচন আগের বারের নির্বাচনের কালিমা ঘোচাতে পারবে কি না ? এমন প্রশ্নের উত্তরে সিইসি বলেন, নির্বাচন শেষ হোক। এর আগে কিছু বলা যাবে না। তবে কিছু জায়গায় বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া সার্বিক পরিস্থিতি ভালো।
ভোট প্রদান শেষে কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন মাহবুব তালুকদার। কেমন ভোট হচ্ছে? জানতে চাইলে জবাবে নির্বাচন কমিশনার সাংবাদিকদের বলেন, কেমন ভোট হচ্ছে, এটা আপনারা ভালোভাবেই জানেন। আপনারা নিজেদেরই প্রশ্ন করুন। তাহলেই বুঝতে পারবেন, কেমন ভোট হচ্ছে। তা ছাড়া এখানে নির্বাচনের দায়িত্বে যাঁরা আছেন, তাঁদেরও জিজ্ঞেস করুন।
মাহবুব তালুকদার আরো বলেন, আমি তো আমার নিজের কেন্দ্রে এসেও বিরোধী পক্ষের কারো এজেন্ট পেলাম না। কেন পেলাম না, এটা তাদের কাছেই জানতে চান। আমি সকাল থেকেই নির্বাচন নিয়ে অংসখ্য অভিযোগ পাচ্ছি। এগুলো নানামুখী অভিযোগ। সুষ্ঠু নির্বাচন করা একজন নির্বাচন কমিশনার হিসেবে আমার একক কোনো রেসপনসিবিলিটি (দায়িত্ব) নয় বলে আমি মনে করি।
মাহবুব তালুকদার বলেন, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন জাতির প্রত্যাশা। এ নির্বাচন অবশ্যই হতে হবে গ্রহণযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ