শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

শেখ রাসেলকে হারিয়ে স্বাধীনতা কাপ চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা

স্পোর্টস রিপোর্টার : শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রকে হারিয়ে স্বাধীনতা কাপের শিরোপা জিতলো নবাগত দল বসুন্ধরা কিংস। অতিরিক্ত সময়ের গোলে তারা প্রথমবারের মত শিরোপা জিতে নেয়। গতকাল বুধবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফাইনালে বসুন্ধরা কিংস ২-১ গোলে জয় পেয়েছে। তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচের নির্ধারিত সময় ১-১ গোলে ড্র ছিল। ঢাকার ক্লাব ফুটবলের শীর্ষ আসরে অভিষেকেই ট্রফি জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েছিল নবাগত বসুন্ধরা কিংস। কিন্তু জনপ্রিয় ক্লাব ঢাকা আবাহনী লিমিটেডের কাছে ফেডারেশনকাপের ঘটনাবহুল ফাইনালে ৩-১ গোলে হেরে শেষ অবধি রানার্সআপ হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়। কিন্তু মৌসুমের দ্বিতীয় আসর, তথা স্বাধীনতা কাপেই ঘুচলো শুরুতে ট্রফি জিততে না পারার আক্ষেপ। ৯০ মিনিটের জমজমাট ফাইনাল ১-১ গোলে অমিমাংসিত থাকার পর অতিরিক্ত সময়ে গড়ায় খেলা। অতিরিক্ত সময়ের পঞ্চম মিনিটে বদলি ফরোয়ার্ড মতিন মিয়ার দারুণ এক গোলে জয়ের দেখা পায় বসুন্ধরা কিংস।

শিরোপা জয়ের প্রত্যাশা নিয়ে খেলতে নামা দল দুটি ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমনাত্মক কৌশলে খেলতে নামে। ফলে ফাইনাল ম্যাচটি হয়ে উঠে জমজমাট। ম্যাচের প্রথমার্ধেই খেলার ফলাফল ছিল ১-১ গোলে ড্র। কিক অফের পর থেকে প্রথমার্ধ শেষের বাঁশি বাজার আগমুহূর্ত পর্যন্ত বলে বেশিরভাগ নিয়ন্ত্রণ ছিল শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের। বেশি সময় নিজেদের পায়ে বল রাখাই শুধু নয়, মাঝ মাঠেও ছিল নীল জার্সির প্রাধান্য। প্রতিপক্ষের মাঝ মাঠ ও রক্ষণভাগে ফাটল ধরিয়ে আক্রমণ শানানো এবং গোলের সুযোগ তৈরীর কাজটিও বসুন্ধরা কিংসের তুলনায় অনেক বেশি করেছেন শেখ রাসেল মিডফিল্ড আর আক্রমনভাগ।সেই সব আক্রমণ থেকে একাধিক গোলের সুযোগও সৃষ্টি হয়েছিল। তার অর্ধেক কাজে লাগাতে পারলে হয়ত প্রথমার্ধেই এগিয়ে যেতে পারতো শেখ রাসেল। কিন্তু তা হয়নি। উল্টো ১৭ মিনিটে গোল হজম করে সাইফুল বারী টিটুর শিষ্যরা। এগিয়ে যায় বসুন্ধরা কিংস। সে গোল অবশ্যই ধারার বিপক্ষেই হয়েছে।

সেটাও যে খুব পরিকল্পিত আক্রমণ থেকে, তা বলার উপায় নেই। একটি পাল্টা আক্রমণ থেকে ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড মার্কোস ভিনিসিয়াস বাঁ পায়ের এক দারুণ শটে গোল করে এগিয়ে দেন বসুন্ধরা কিংসকে। কাউন্টার অ্যাটাক থেকে শেখ রাসেলের হাফ সীমানায় একটু ডান দিক ঘেষে বল পেয়েছিলেন বসুন্ধরার ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড মার্কোস ভিনিসিয়াস।শেখ রাসেলের একজন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে একটু ভিতরে ঢুকে শেখ রাসেল গোলকিপারের পজিশন দেখে বাঁ পায়ের তীব্র শট নেন। তা গোলকিপার আশরাফুল ইসলাম রানাকে হতবাক করে তার ডান দিক দিয়ে বুলেটের গতিতে দুরের পোষ্ট ঘেষে জালে গিয়ে আছড়ে পড়ে।গোল হজমের নয় মিনিট আগে শেখ রাসেল এগিয়ে যেতে পারতো। ডান দিক থেকে ওভার ল্যাপ করে ওপরে উঠে যার উৎস রচে দেন শেখ রাসেল রাইটউইং ব্যাক আরিফুল ইসলাম। বসুন্ধরার বক্সে ঢুকে তিনি যে নীচু সেন্টার করেন, নাইজিরিয়ান ফরোয়ার্ড রাফায়েল ওদোয়িনি তা ছোট বক্সের ঠিক মাথা থেকে টোকা দিলে বল প্রথম পোষ্ট ঘেষে বাইরে চলে যায়। পিছিয়ে পড়ার পর আক্রমণের তেজ অনেক বাড়ে শেখ রাসেলের। তাদের সাজানো ও দ্রুতগতির অব্যাহত আক্রমণে কোণঠাসা বসুন্ধরা রক্ষনভাগ। ২৮ মিনিটে সুবিধাজনক জায়গায় বল পেয়েও রাফায়েল ওডোয়িন পা ছোঁয়াতে না পারায় একটি সুযোগ হয় হাতছাড়া।

২৯ মিনিটে বাঁ দিক দিয়ে একার চেষ্টায় বসুন্ধরা বক্সে ঢুকে প্রায় খেলায় সমতা ফিরিয়ে এনেছিলেন রাফায়েল। দ্বিতীয় পোষ্ট লক্ষ্য করে তার ডান পায়ের বাঁকানো শট গোলকিপার জিকো ঝাঁপিয়ে পড়ে রক্ষা করেন। গোলকিপার জিকো ৪৩ মিনিটে আরও একবার বসুন্ধরাকে গোল হজমের হাত থেকে রক্ষা করেন। ডিফেন্ডার ইয়ামিন আহমেদ মুন্নার বক্সের বাইরে থেকে নেয়া জোরালো শট আবার ঝাপিয়ে পড়ে রক্ষা করেন জিকো।কিন্তু দুই মিনিট পর আর রক্ষা পায়নি বসুন্ধরা।প্রথমার্ধের ইনজুরি টাইমের প্রথম মিনিটে রাফায়েল ওডোয়িন ঠিক গোল করে সমতা ফিরিয়ে আনেন। তার ডান পায়ের নেয়া প্রচন্ড শট আর আটকাতে পারেননি গোলকিপার জিকো। তাকে ফাঁকি দিয়ে বল জালে জড়িয়ে যায়। তাতেই খেলায় সমতা ফিরে আসে ১-১।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ