শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

প্রধান শিক্ষকদের সাথে সহকারী শিক্ষকদের বেতন বৈষম্য অসম্মানের

স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ বলেছেন, ১৬ বছর চাকরি করার পর একজন প্রধান শিক্ষরের সঙ্গে সহকারী শিক্ষকের বেতন-ভাতায় ২০ হাজার টাকা ব্যবধান তৈরি হচ্ছে। একজন প্রধান শিক্ষক যে স্কেলে চাকরি শুরু করেন সেখানে একজন সহকারী শিক্ষক সেই স্কেলেরও এক গ্রেড নিচে চাকরি থেকে অবসর নেন। এটি আমাদের জন্য অসম্মানের একটি বিষয়। সহকারী শিক্ষকদের ৩ ধাপ বেতন বৈষম্য নিরসনে দীর্ঘ পাঁচ বছর আন্দোলন করার পরও আমাদের সমস্যার সমাধান হয়নি।
মঙ্গলবার (২৫ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে তারা এসব বিষয় তুলে ধরেন। সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন সংগঠনের সভাপতি মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ। এ সময় চাঁদপুর সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি ওমর খৈয়াম বাগদাদী, বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক তপন দাসসহ আওয়ামী লীগপন্থী শিক্ষক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ বলেন, ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকার আমলে প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করার পর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের মধ্যে কোনো ধরনের বেতন বৈষম্য ছিল না। ২০০৬ সালে সহকারী শিক্ষকদের দুই গ্রেড নিচে নামানো হয়, ২০১৪ সালে এসে সেটি ৩ গ্রেডে উত্তীর্ণ হয়। বর্তমানে একজন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জাতীয় বেতন স্কেলের ১১তম গ্রেড (১২ হাজার ৫০০ টাকা) এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকরা জাতীয় বেতন স্কেলের ১৪তম গ্রেড (১০ হাজার ২০০ টাকা) পাচ্ছেন।
এতে করে ১৬ বছর চাকরি করার পর একজন প্রধান শিক্ষকদের সাথে সহকারী শিক্ষকের বেতন-ভাতায় ২০ হাজার টাকা ব্যবধান তৈরি হচ্ছে। একজন প্রধান শিক্ষক যে স্কেলে চাকরি শুরু করেন সেখানে একজন সহকারী শিক্ষক সেই স্কেলেরও এক গ্রেড নিচে চাকরি থেকে অবসর নেন। এটি আমাদের জন্য অসম্মানের একটি বিষয়।
তিনি বলেন, সহকারী শিক্ষকদের ৩ ধাপ বেতন বৈষম্য নিরসনে দীর্ঘ পাঁচ বছর আন্দোলন করার পরও আমাদের সমস্যার সমাধান না হওয়ায় গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর আমরা ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালনের পর আমরণ অনশন পালন করি। পরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী, সচিব ও প্রাধমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক এসে আমাদের দাবি পূরণের আশ্বাস দিলে আমার অনশন ছেড়ে বাড়ি চলে যাই। এরপর ১১ মাস পার হলেও আজও আমাদের দাবি বাস্তবায়ন করা হয়নি।
তিনি বলেন, আমাদের মর্যাদার দাবি পূরণ না হওয়ায় আমরা বিভিন্নভাবে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আর্কষণের চেষ্টা করি। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আমাদের যৌক্তিক দাবির বিষয়টি তুলে ধরি। তিনি আমাদের দাবি পূরণে আশ্বাস্ত করেন। পরে সেটি আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে যুক্ত করা হয়। এ কারণে প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
সংগঠনের শিক্ষক নেতারা বলেন, সরকারি প্রধান বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের মর্যাদা না দিয়ে দেশের শিক্ষার উন্নয়ন করা সম্ভব নয়, শিক্ষকদের মর্যদা দিয়েই তা করতে হবে। এ দাবি থেকে আমরা একচুলও সরে যাবো না।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ