বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

পোকার আক্রমণে ক্ষতির আশঙ্কায় চাষি

খুলনা : ডুমুরিয়ায় এক কৃষকের ক্ষেত মাকড় পোকা, মাছি পোকা এবং মাইজজনিত রোগ গাছ মরে যাওয়ায় তিনি কীটনাশক প্রয়োগ করতে বাধ্য হয়েছেন। এতে করে চাষাবাদ খরচের পাল্লা একটু ভারি হয়েছে। ফলে এবার ক্ষতি আশঙ্কা করছেন তিনি

খুলনা অফিস : ডুমুরিয়া উপজেলার বরাতিয়া গোবিন্দকাঠি গ্রামের কৃষক ইমরান হোসেন মোড়ল ৩ বিঘা জমিতে টমেটো, শীম, ফুলকপির চাষ করেছেন। মাকড় পোকা, জাবি পোকা, মাছি পোকা এবং ভাইরাসজনিত রোগে গাছ মরে যাওয়ায় তিনি কীটনাশক প্রয়োগ করতে বাধ্য হয়েছেন। এতে তার চাষাবাদ খরচের পাল্লা একটু ভারি হয়েছে। ফলে এবার ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তিনি। শীত মওসুমের শুরুতেই সবজিতে পোকার আক্রমণে এলাকায় রবিউল ইসলাম, ইমরান হোসেনের মতো বেকায়দায় পড়েছেন এ এলাকার কৃষকেরা। তারা বলছেন, শীত জেঁকে বসলে পোকার আক্রমণ কমে যাবে। ফলন ভাল হবে, তবে তখন সবজির দাম থাকে না। তাই আগাম ফলনের জন্য পোকার আক্রমণ থেকে ফসল বাঁচাতে কীটনাশক ব্যবহার করতে হয়।

কেশবপুর উপজেলার মঙ্গলকোর্ট এলাকার চাষি রবিউল ইসলাম এবার ৪৫ শতক জমিতে বাঁধাকপি চাষ করেছিলেন। কিন্তু কপিগুলো পরিপক্ক হওয়ার আগেই পোকার আক্রমণে নষ্ট হতে শুরু করে। একইসঙ্গে দেখা দেয় গোড়া পচন রোগ। এ অবস্থায় ক্ষতির হাত থেকে বাঁচতে রবিউল তড়িঘড়ি করে অপরিপক্ক বাঁধাকপিই তুলে পার্শ্ববর্তী উপজেলার আঠারো মাইল পাইকারী বাজারে বিক্রি করে দেন। এতে তার কিছুটা লোকসান হয়েছে।

শুধু চাষির ক্ষেতে নয়। শহরেও বেশ পোকার উপদ্রব লক্ষ্য করা গেছে। সড়ক বাতি বা সকল ধরনের বাতিকে ঘিরে পোকার আক্রমণ এখন সব জায়গায়। একটুখানি আলো পেলেই সেখানে ভরে যাচ্ছে এসব পোকা। এসব পোকার আক্রমণ থেকে বাঁচতে অনেকেই বাতির পাশে রাখছেন গাছের পাতা। খাবার-দাবার বা প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র রাখছেন বাতি থেকে কিছুটা দূরে।

অপরদিকে মণিরামপুর কাছারীবাড়ী বাজার এলাকার বীজ বিক্রেতা পরিমল কান্তি বিশ্বাস জানান, ভাইরাস আর পোকার আক্রমণ ছাড়াও নিম্নমানের বীজের কারণেও উৎপাদন কম হওয়ার আশঙ্কা থাকে। ফলে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে চাষির ফলানো বাঁধাকপি, ফুলকপি, মূলা ও টমেটোসহ শীতকালীন সবজিতে এ মওসুমে কৃষকের মুখে হাসির পরিবর্তে হতাশা ভর করতে পারে। কেশবপুর, ডুমুরিয়া, তালা, মণিরামপুর উপজেলার মাঠজুড়ে এখন রবি ফসলের সমারোহ। এরই মধ্যে বাঁধাকপি, ফুলকপি, টমেটো, বেগুন চাষ প্রায় শেষ। এখন আলু, গম, সরিষা, পেঁয়াজ চাষের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। কিন্তু লেদা পোকার আক্রমণ, গোড়ায় পচন রোগ ও ভাইরাস আক্রান্ত হয়ে নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন চাষিরা। 

মণিরামপুর মনোহরপুর এলাকার চাষি আলী আকবর সরদার জানান, আবহাওয়ার সমস্যার কারণে এমনটি হচ্ছে। শীতের সময় শীত না পড়লেইতো সমস্যা। একটু শীত পড়লে সবজিতে ভাল ফলন হয়। 

ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মোসাদ্দেক হোসেন জানান, মাটির ছত্রাক জাতীয় সাদা পোকার আক্রমণে গাছের গোড়া পচন রোগ হয়। মাটিতে বেশি আর্দ্রতা থাকলেও এ রোগ দেখা দেয়। তবে শীত পড়লে বিভিন্ন ধরনের পোকার আক্রমণ কেটে যাবে। 

এ ব্যাপারে খুললনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আব্দুল লতিফ জানান, বাজার শীতকালীন সবজিতে ভরে রয়েছে। এখন শীত পড়া শুরু হয়েছে। ফলে সকল ধরনের পোকার আক্রমণ কমে যাবে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ