শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

খুলনায় ট্রাক টার্মিনালে কাঁচাবাজার ঘিরে সন্ত্রাসীদের আনাগোনা ॥ চাঁদাবাজি

খুলনা অফিস : খুলনা মহানগরীর ট্রাক টার্মিনালে খুলনা সিটি করপোরেশনের পাইকারী কাঁচাবাজার ঘিরে সন্ত্রাসীদের আনাগোনা বেড়েছে। এখানে ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে নিয়মিত চাঁদাবাজি, ট্রাক, নসিমন-পিকআপ থেকে চাঁদা আদায় ও বাজার এলাকায় জুয়ার আড্ডা বসিয়েছে সন্ত্রাসীরা।

এদিকে ব্যবসায়ীদের আপত্তির মুখে সম্প্রতি পুলিশ বাজার এলাকায় অভিযান শুরু করলে সন্ত্রাসীরা গা ঢাকা দিয়েছে। তবে গোপনে তারা আবারও সংগঠিত হচ্ছে বলে জানা গেছে। এতে ব্যবসায়ীদের মধ্যে নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

জানা যায়, ২০০৮ সালের ১৩ মার্চ হাজি রাহেজ উদ্দিন (নিরালা) নামে অবৈধ পাইকারি বাজারটি উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেয় সিটি করপোরেশন। এ সময় বাজারের ব্যবসায়ীদের জোড়াগেট বাজারে পুনর্বাসনের সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু বাজারটি উচ্ছেদের ছয় ঘন্টার মধ্যেই নগরীর সোনাডাঙ্গা ট্রাক টার্মিনালে এই পাইকারি কাঁচাবাজার চালু করা হয়। সেই থেকে এখানে ১৫০টি আড়তের মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা ব্যবসা পরিচালনা করছে। পাশাপাশি ব্যবসায়ী, শ্রমিক ও কর্মচারী মিলিয়ে ৫ থেকে ৭ হাজার মানুষ এই বাজারের ওপর নির্ভরশীল। ব্যবসায়ীরা তিলতিল করে এখানে ব্যবসা জমিয়ে তুলেছে।

কিন্তু ট্রাক টার্মিনালের আশেপাশে থাকা সন্ত্রাসীরা নানাভাবে ব্যবসায়ীদের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করেছে। বাজারের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়, বাজারে পণ্য নিয়ে আসা ট্রাক, নসিমন ভ্যান থেকে চাঁদা নেয়া ও জুয়ার আড্ডা বসিয়ে চাঁদাবাজি করা হয় এখানে। একপর্যায়ে সরকারি দলের বিভিন্ন দলের নেতার নাম ব্যবহার করে সন্ত্রাসীরা আধিপত্য বিস্তার করে। তাদের চাঁদাবাজিতে একরকম অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে ব্যবসায়ীরা।

জানা যায়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী মনির ও তার সহযোগী জালাল, আইয়ুব, হেলালসহ আরও কয়েকজনের নেতৃত্বে এখানে চাঁদাবাজি চলছে। এই চক্রটি সরকারি খাল দখল, গাড়ি চুরি ও জুয়ার আড্ডা পরিচালনা করছে। এদিকে সিটি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক বাজার পরিদর্শনে গেলে ব্যবসায়ীরা এসব সমস্যার কথা তার কাছে তুলে ধরেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন। পুলিশ অভিযান শুরু করলে চক্রটির অধিকাংশ সদস্য গা ঢাকা দেয়।

বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক মঈনুল ইসলাম নাসির বলেন, চাঁদাবাজিতে বাধা দেয়ায় একাধিকবার আমার ওপর হামলা চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা। 

তাদের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলা-জিডি হলেও তাদের তৎপরতা ঠেকানো যায়নি। সাধারণ ব্যবসায়ীরা এ ধরনের চাঁদাবাজিসহ অপকর্ম বন্ধ করতে পুলিশের নিয়মিত অভিযান শুরুর দাবি জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে সোনাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক জানান, বাজারের দৈনিক টাকা আদায় সমিতির লেনদেনকে কেন্দ্র করে থানায় দুইটি মামলা হয়েছে। বাজারের চাঁদাবাজি বন্ধে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ