বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
Online Edition

ঢাকা টেস্টেও চার স্পিনার -প্রধান কোচ

স্পোর্টস রিপোর্টার : ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চট্টগ্রামে প্রথম টেস্টে চার স্পিনার নিয়ে দাপটের সাথে টেস্ট জিতেছে বাংলাদেশ। তাইজুল-সাকিব-মিরাজ-নাঈমের স্পিন জাদুতে দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৬৪ রানের বড় ব্যবধানে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এবার দ্বিতীয় টেস্টেও চার স্পিনার নিয়ে মাঠে নামবে বাংরাদেশ দল। এমনটাই আভাস দিয়েছেন প্রধান কোচ স্টিভ রোডর্স। আগামী ৩০ নভেম্বর মিরপুরে শুরু হবে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট। আর ২-০ তে সিরিজ জিততে ঢাকা টেস্টেও চার স্পিনার নিয়ে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। গতকাল বাংলাদেশ দলের হেড কোচ স্টিভ রোডসের মুখে এমনটাই শোনা যায়। চট্টগ্রাম টেস্ট শেষে অধিনায়ক সাকিব আল হাসান স্পিন কন্ডিশন নিয়ে কথা বলতে একদম নারাজ ছিলেন। এই বিষয়গুলোকে নিজেদের প্রাইভেট ইস্যু বলে এড়িয়ে যান। কিন্তু দলের কোচ বিষয়টি  খোলাখুলিভাবেই দেখছেন। তাছাড়া চার স্পিনার নিয়ে খেলাকে সঠিক কৌশল বলেই মানছেন এই ইংলিশ কোচ। স্টিভ রোডস বলেন,‘ইতিহাস বলে টেস্টে বেশিরভাগ সময় দুই স্পিনার, তিন পেসার আর এক অল রাউন্ডার নিয়ে খেলা হয়ে আসছে। কিন্তু যখন ওয়েস্ট ইন্ডিজ চার পেসার এবং কোন স্পিনার ছাড়া নামত সেটা ছিল তাদের কৌশল। যদি আমরা মনে করি চার স্পিনারই ঠিক আছে, এটাই আমাদের কৌশল তাহলে সেটাই আমাদের অনুসরণ করা উচিত।’ স্পিন সহায়ক উইকেটে বাংলাদেশি বোলাররা কতটা ভয়ানক হয়ে উঠে তার প্রমান মিলেছে চট্টগ্রাম টেস্টে। সেই ধারাবাহিকতা ধরে ২-০ তে সিরিজ জিততে চান দলের কোচ রোডস। তিনি বলেন, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জয়টা সত্যিই দারুণ ছিল। তবে তারা পরের টেস্টে ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া থাকবে। আমাদের এজন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। ২-০ তে সিরিজ জিততে চাই আমরা।’  চট্টগ্রামে সফরকারীরা তাদের সবক’টি উইকেটই হারিয়েছে টাইগার স্পিনারদের কাছে। তাইজুল ইসলাম, মেহেদী হাসান মিরাজ, সাকিব আল হাসান ও নাঈম হাসান প্রত্যেকেই ছিলেন দারুণ বিধংসী। অভিষেকেই নেমে ৫ উইকেট তুলে নিয়েছেন নাঈম। ঢাকা টেস্ট জিততে তাই স্পিনারদের নিয়ে রণ কৌশল সাজানোর পরিকল্পনা বাংলাদেশের কোচের। এদিকে স্পিনিং কন্ডিশনে চার স্পিনার খেলিয়ে সাফল্য পাওয়া নিয়ে তির্যক মন্তব্য করেছেন কেউ কেউ। তাতে অবশ্য কান দিতে নারাজ টাইগার কোচ। সত্তর-আশি দশকের ওয়েস্ট ইন্ডিজের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেছেন, ইতিহাস বলে টেস্টে বেশির ভাগ সময় দুই স্পিনার, তিন পেসার আর এক অল রাউন্ডার নিয়ে খেলা হয়ে আসছে। কিন্তু যখন ওয়েস্ট ইন্ডিজ চার পেসার এবং কোন স্পিনার ছাড়া নামত সেটা ছিল তাদের কৌশল। যদি আমরা মনে করি চার স্পিনারই ঠিক আছে, এটাই আমাদের কৌশল তাহলে সেটাই আমাদের অনুসরণ করা উচিত। বাংলাদেশের স্পিনাররা যে জাদু দেখাচ্ছেন তাতে মিরপুরে সহায়ক পিচ পেলে যে তারা আরও বিধংসী হয়ে উঠবেন তা বলাই বাহুল্য। ক্রিকেটারদের মতোই তাদের জন্য আমার অনেক সমীহ আছে। তারা পরের  টেস্টে ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া থাকবে। আমাদের এজন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। আমি চাই ২-০ তে জিততে। গত জুন-জুলাইয়ের বাংলাদেশের উইন্ডিজ সফরের কথা মনে করিয়ে দিয়ে জানান যে সেখানে বাংলাদেশকে খেলতে হয়েছিল ‘এলিয়েন’ কন্ডিশনের বিপক্ষে। তিনি বলেন, ‘দেখেন, উপমহাদেশে খেলতে আসলে আপনাকে অবশ্যই স্পিনের কথা মাথায় রেখেই আসতে হবে। এটা কোনো সার প্রাইজ বা নতুন কিছু নয়। এখন কলম্বোতে শ্রীলংকা-ইংল্যান্ডের ম্যাচ চলছে,  সেখানেও এমন স্পিনিং উইকেট দেয়া হয়েছে। তাই এটা খুবই স্বাভাবিক। এখানে খেলতে এলে এমন উইকেটের কথা আগেই ভাবতে হবে আপনার। এখানের উইকেট খানিক ভিন্নতর।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি আপনাদের অ্যান্টিগা টেস্টের (সে ম্যাচে বাংলাদেশ নিজেদের ইতিহাসের সর্বনিম্ন ৪৩ রানে অলআউট হয়েছিল) কথা মনে করিয়ে দিতে চাই। সে ম্যাচটা আমরা তো এলিয়েন কন্ডিশনে খেলেছি। সবুজ উইকেটে বল সুইং করছে সাপের মতো, কাঁধের কাছ দিয়ে সাঁই সাঁই বাউন্সার ছুঁটে যাচ্ছে, একটা এদিকে, আরেকটা ওদিকে। পুরোপুরি ভিন্ন ছিল আমাদের জন্য। কিন্তু আমি মনে করি এটাও সারা বিশ্বে ট্যুর করার মজা। অভিজাত এই ফরম্যাট খেলার নানান ভিন্ন তরিকা রয়েছে আর বাংলাদেশে খেলার সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি হলো স্পিনে ভালো করার প্রস্তুতি নেয়া।’ উইবেট নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি এমন উইকেট বানালে ঝুঁকিও থাকে। কারণ ওয়েস্ট ইন্ডিজের দলেও তিনজন ভালো স্পিনার রয়েছে। এমনকি ম্যাচ শুরুর আগেই আমি তাদের সামর্থ্য সম্পর্কে অবগত ছিলাম। আমি জানতাম আমাদের ব্যাটিং ভালো করতে হবে, বোলিং জায়গামত করতে হবে। আমি মনে করি আমরা ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে স্রেফ একটি টেস্ট ম্যাচ জিতেছি,  যেখানে গর্ব করার অনেক জায়গা রয়েছে।’

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ