শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যে কোনো কাজে প্রস্তুত সেনাবাহিনী ---সেনাপ্রধান

 

স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখতে সরকারের নেওয়া যে কোনো কার্যক্রমে সব ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত রয়েছে সেনাবাহিনী। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা সেনানিবাসে আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা সেনা সদস্য এবং শান্তিকালীন পদকপ্রাপ্ত সেনা সদস্যদের সংবর্ধনা ও পদক প্রদান অনুষ্ঠানে একথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে বেশ কয়েকজন সাবেক সেনাপ্রধানসহ সেনাবাহিনীর উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগের প্রশংসা করেন জেনারেল আজিজ। গত জানুয়ারি থেকে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সেনা সদস্যদের অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাদের মতো ভাতা পাওয়ার কথা উল্লেখ করেন তিনি।

 সেনাবাহিনী এখন শুধু তার নিজস্ব প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই উল্লেখ করে সেনাপ্রধান বলেন, “ সেনাবাহিনী বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক ও জাতিগঠনমূলক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সরকার ও প্রশাসনকে সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে।” তিনি বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, রোহিঙ্গাদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ, শৃঙ্খলা আনয়ন এবং তাদের নিবন্ধন কার্যক্রমসহ সব জায়গায় সেনা সদস্যরা কাজের মাধ্যমে প্রশংসা কুড়িয়েছেন।“এছাড়া দেশে জঙ্গি দমনে যেমন সেনাবাহিনী আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত হয়েছে, তেমনি বিশ্ব শান্তি রক্ষা কার্যক্রমেও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভূমিকা আজ প্রশসিংত।”

অনুষ্ঠানে স্বাধীনতা যুদ্ধে অবদানের জন্য খেতাবপ্রাপ্ত সেনাবাহিনীর তিনজন বীরশ্রেষ্ঠ-এর নিকট আত্মীয়, তিনজন বীর উত্তম, ১৪ জন বীর বিক্রম ও ২৭ জন বীরপ্রতীককে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

এছাড়া ২০১৭-১৮ সালে ‘শান্তিকালীন’ সময়ে বিভিন্ন প্রশংসনীয় ও বীরত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতি হিসেবে নয়জনকে ‘অসামান্য সেবা পদক’ এবং ১৯ জনকে ‘বিশিষ্ট সেবা পদক’ দেওয়া হয়।

সেনাপ্রধান জানান, দেশে ও বিদেশে সাহসী ও বীরত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতি হিসেবে ‘শান্তিকালীন পদক’ চালু করা হয়েছে। এবারই প্রথম ‘অসামান্য সেবা পদক’ ও ‘বিশিষ্ট সেবা পদক’ প্রাপ্তদের কেন্দ্রীয়ভাবে পদক দেওয়া হল। অনুষ্ঠানে সংবর্ধনা পাওয়া ৪৭ জন মুত্তিযোদ্ধা সেনা সদস্যের কাছে গিয়ে খোঁজ খবর নেন সেনাপ্রধান।

অনুষ্ঠানের শুরুতে খেতাবপ্রাপ্ত সেনা সদস্যদের মুক্তিযুদ্ধকালীন বীরত্বগাঁথা এবং পদকপ্রাপ্তদের প্রশংসনীয় কর্মকান্ডের বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।

এদিকে সকালে নৌবাহিনীর সদর দপ্তরের সাগরিকা হলে এক অনুষ্ঠানে বাহিনীর খেতাবপ্রাপ্ত ২১ জন মুক্তিযোদ্ধাকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এই অনুষ্ঠানে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ রুহুল আমিনের পরিবার ছাড়াও পাঁচজন বীর উত্তম, সাতজন বীর বিক্রম, আটজন বীর প্রতীককে সম্মাননা দেওয়া হয় বলে আইসিপিআর জানিয়েছে। অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধা নৌ সদস্য ছাড়াও অনেকের পরিবারের সদস্যরা এই সম্মাননা গ্রহণ করেন। বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ রুহুল আমিনের পক্ষে তার মেয়ে নুরজাহান বেগম সম্মাননা গ্রহণ করেন।

এছাড়া বীর উত্তম আব্দুল ওয়াহেদ চৌধুরী, বীর উত্তম মো. জালাল উদ্দিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে সম্মাননা গ্রহণ করেন। বীর উত্তম শহীদ আফজাল মিয়ার পক্ষে মরিয়ম আফজাল সম্মাননা গ্রহণ করেন।

অনুষ্ঠানে নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ বলেন, “একটি কার্যকর ও পেশাদার নৌবাহিনী গড়ে তোলার লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিকতা ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বর্তমান সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ইতোমধ্যে নৌবাহিনীতে সাবমেরিন সংযোজনের মাধ্যমে ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।”

নৌবাহিনীকে আরও ‘যুগোপযোগী’ হিসেবে গড়ে তুলতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক যুদ্ধজাহাজ ও আধুনিক সামরিক সরঞ্জাম যোগ হওয়ার কথা জানান তিনি। নৌবাহিনীর সদস্যদের পেশাগত দক্ষতা, কর্তব্যনিষ্ঠা ও দেশপ্রেমের সমন্বয়ে কাজ করার আহ্বান জানান নৌবাহিনী প্রধান।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ