বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
Online Edition

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে টমেটো চাষে স্বাবলম্বী হচ্ছেন কৃষকরা

মৌলভীবাজার সংবাদদাতা (১২ নবেম্বর): মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জে সারা বছর টমেটো চাষ করে কৃষকরা স্বাবলম্বী হচ্ছেন।  মৌসুম ছাড়াও অমৌসুমে টমেটোর গ্রাফটিং পদ্ধতিতে চারা উৎপাদন ও টমেটো চাষাবাদে এখানকার কৃষকরা প্রশিক্ষিত। বন বেগুন গাছের সাথে টমেটোর চারার গ্রাফটিং পদ্ধতি দীর্ঘদিন যাবত অবলম্বন করে কৃষকরা  বাড়িতে বসেই আয়ের এই পথ বেঁচে নিয়েছেন। ফলে সারা বছর চারা পেয়ে সেড পদ্ধতিতে গ্রীষ্ম ও শীতকালীন সময়েও কৃষকরা টমেটো চাষাবাদে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছেন। উৎপাদিত এসব টমেটো দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করা হচ্ছে।
কমলগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার আলীনগর, আদমপুর, মাধবপুর ইউনিয়ন ও পৌর এলাকার তিলকপুর, জামিরকোনা, হোমেরজান, পাত্রখোলা, কাটাবিল, নাজাতকোনা, ধলাই পাড়, নরেন্দ্রপুর, ছয়ছিড়িসহ বিভিন্ন গ্রামে গ্রীষ্মকালীন সময়ে ১০ হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষাবাদ হয়েছে। এসব এলাকা ছাড়াও পুরো উপজেলা মিলিয়ে শীতকালীন সবজি হিসাবে এ পর্যন্ত ১৫০ হেক্টরেরও বেশি জমিতে টমেটো চাষাবাদ হয়েছে। তবে মৌসুম পর্যন্ত ২৫০ হেক্টর অতিক্রম করতে পারে।
ধানের চেয়ে টমেটো চাষ লাভজনক হওয়ায় অনেক কৃষক ধান উৎপাদন কমিয়ে টমেটো চাষে উৎসাহী হয়ে উঠছেন। কমলগঞ্জে গ্রাফটিং চারা উৎপাদনেও সাফল্য লাভের শীর্ষে রয়েছেন কয়েকজন কৃষক। 
জেলার সর্বোচ্চ টমেটো উৎপাদিত হচ্ছে কমলগঞ্জে। বর্ষা মৌসুমেও টমেটোর উৎপাদনে সাফল্য রয়েছেন অনেকেই। তিলকপুরের নৃপেন্দ্র কুমার সিংহ, ব্রজেন্দ্রকুমার সিংহ, রেজা উদ্দিন, আব্দুল হাসিম টমেটোর গ্রাফটিং চারা উৎপাদন ও বিক্রয় করে বছরে লক্ষাধিক টাকা আয় করছেন।
সরেজমিন পাত্রখোলা বালুচর এলাকা ও আদমপুর ঘুরে দেখা যায়, বিশাল এলাকায় প্রায় ১৮ একর জমিতে গাছে গাছে পাকা ও আধা পাকা টমেটো ঝুলছে। একই অবস্থা আদমপুর ও আলীনগর ইউনিয়নের গ্রীষ্মকালীন টমেটো ক্ষেতে। উপজেলার উত্তর তিলকপুর গ্রামের আবু সোফিয়ান, চেরাগ মিয়া, শাহিন মিয়া, তাহির মিয়া, এলাইছ মিয়া, মোবারক মিয়া, ফরিদ মিয়া, মেন্দি মিয়া, বিলাল মিয়া, ধলাইপারের মানিক মিয়া, কান্দিগাঁও এর খায়জুজ্জামান, ঘোড়ামারার গাজি মিয়া, পাত্রখোলার জাহাঙ্গির, জয়নাল হাজারী, বিরবল প্রসাদ, সবুজ মিয়া, মৃনাল, সহ প্রায় অর্ধ সহস্রাধিক কৃষক টমেটো চাষাবাদ করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছেন।
সদ্য যোগদানকারী কমলগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রঘুনাথ নাহা বলেন, আমি জেনেছি কমলগঞ্জে টমেটো চাষাবাদ একটি বিরল দৃষ্টান্ত।
সরেজমিনে টমেটো চাষাবাদের চিত্র না দেখলে তা সহজে বুঝা যাবে না। কৃষি বিভাগের সার্বক্ষণিক তদারকি ও পরামর্শ মোতাবেক এই এলাকায় টমেটোর চাষাবাদ হচ্ছে। তিনি বলেন, দেশের অন্যান্য স্থানেও এই পদ্ধতি অবলম্বন করে লাভবান হওয়া সম্ভব।
এসব কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তি হস্তান্তর করা হয়েছে। তাছাড়া পরিমিত উপায়ে কৃষকদের কীটনাশক ও বালাইনাশক ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে। এরপরও অনেকেই মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার করছেন সেটি মোটেই ঠিক নয়।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ