আতাই নদীর ভাঙনে বিলীন হচ্ছে গ্রাম
খুলনা অফিস: আতাই নদীর ভাঙনে ছোট হচ্ছে খুলনার চন্দনীমহল গ্রামের মানচিত্র। প্রতিবছর ১৫ মিটার করে বাড়ছে নদীর তীর। ইতোমধ্যে নদী তীরে নির্মিত আশ্রয়ন প্রকল্পের প্রায় ১২০ ফুট এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের কারণে আশ্রয়ন প্রকল্প ছাড়ছে মানুষ। এ অবস্থায় ভাঙন ঠেকাতে ৪০ কোটি ৪৩ লাখ টাকার একটি প্রকল্প নিয়েছে খুলনার পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। গত ১৪ অক্টোবর প্রকল্পটি ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। দ্রুত প্রকল্পটি অনুমোদন করে কাজ রুর দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
গ্রামবাসী জানান, দিঘলিয়া উপজেলার ভূমিহীন মানুষের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে বারাকপুর-দীঘলিয়ার চন্দনীমহল এলাকায় ২০১৩ সালে একটি আশ্রয়ন প্রকল্প নির্মাণ করে সরকার। ওই প্রকল্পে এক সময় দেড়শতাধিক পরিবার বসবাস করতো। ২০১৫ সাল থেকে আতাই নদীতে ভাঙন শুরু হয়। এ পর্যন্ত আশ্রয়ন প্রকল্পের দেড়শ’ ফুট জায়গা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ফলে ভয়ে আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়ছে মানুষ।
সম্প্রতি নদী এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, খুলনা নগরীর চরেরহাট এলাকায় নদীর বিপরীত পাশেই আশ্রয়ন প্রকল্পটির অবস্থান। ভৈরব ও আতাই নদীর দুইপাশই সমানভাবে ভাঙছে। গত বর্ষায়ও নদী পাড়ের বড় একটা অংশ বিলীন হয়ে গেছে। তবে নদী শান্ত থাকায় বর্তমানে ভাঙন নেই।
আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্দা ইব্রাহিম মুন্সি জানান, প্রকল্পের জায়গা বালু দিয়ে ভরাট করায় প্রতিবছরই কিছু কিছু এলাকা ভাঙছে। যতোদিন যাচ্ছে ভাঙনের মাত্রা তীব্র হচ্ছে। দ্রুত এ ভাঙন রোধ করা না গেলে তাদের মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু নদীগর্ভে হারিয়ে যাবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী ও গ্রামবাসী জানান, বৃষ্টির সময় নদীর পাড় উপচে গ্রামে পানি প্রবেশ করে। দেখা যায়, জোয়ারের সময় ১১ নম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানি উঠে যায়। কিছুদিন আগে ২০-২৫টি কাঁচাঘর ভেঙ্গে পড়েছে। বছর প্রতি ভাঙনের হার ১৫ মিটার।
পানি উন্নয়ন বোর্ড খুলনা-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শরীফুল ইসলাম জানান, আতাই ও ভৈরব নদের ভাঙন ঠেকাতে ‘বারাকপুর-দিঘলিয়া প্রকল্পের অধীন চন্দনীমহল আশ্রয়ন প্রকল্প রক্ষার্থে ভৈরব ও আতাই নদীর তীর সংরক্ষণ’ নামে একটি প্রকল্প নেয়া হয়েছে। ৪০ কোটি ৪৩ লাখ টাকা ব্যয়ের প্রকল্পটি গত ১৪ অক্টোবর ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় চরেরহাটের বিপরীত পাশে চন্দনীমহলের দুই পাশে ৯৫০ মিটার তীর সংরক্ষণ করা হবে।
তিনি বলেন, শুধু তীর সংরক্ষণই নয়, বাঁধ উঁচু করে সেখানে ব্লক দিয়ে ঢাল নির্মাণ করা হবে। কাজ শেষ হলে ভাঙন প্রতিরোধের সঙ্গে বিনোদনের অন্যতম কেন্দ্রে পরিণত হবে আতাই নদীর পাড়।