শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

সাবেক সংসদ সদস্য আবু হেনা দলে ফেরায় বাগমারায় বিএনপিতে নানা গুঞ্জন

বাগমারা (রাজশাহী) সংবাদদাতা : বাগমারার সাবেক সংসদ সদস্য বিএনপি নেতা আবু হেনা দীর্ঘদিন পর সংস্কারপন্থীদের হয়ে আবারো দলে ফিরেছেন এমন খবরে এলাকায় ব্যাপক গুনজন শুরু হয়েছে। এক সময়ে আ’লীগ থেকে বিএনপিতে যোগ দিয়ে আবু হেনা পরপর দু’বার বাগমারায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেও এলাকায় তিনি ছিলেন নিষ্ক্রীয়। দীর্ঘ দিনপর গত বৃহস্পতিবার ১/১১ সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় বিএনপি ছেড়ে যাওয়া সংস্কারপন্থী ১২ জন নেতার সঙ্গে তিনি দলে ফিরে এসেছেন। পুনরায় দলে ফিরা নিয়ে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

 জানা গেছে, সাবেক জাতীয় সংসদ সদস্য বিএনপি নেতা আবু হেনা ২০০৪ সালে জেএমবি’র উত্থানে বিএনপি’র সম্বন্ধে কটুক্তি ও দলীয় ভাব মর্যাদা নষ্ট করার অভিযোগে তাকে বহিস্কৃত করা হয়। সাবেক এই সংসদ সদস্য এর পর পুনরায় দলে ফিরে আসার চেষ্টা নেন এবং দলীয় মনোনয়নের দাবি করেন। কিন্তু জামায়াত ও বিএনপি সন্মন্ধে বিভ্রান্তিকর তার এক সময়ের বক্তব্যে এলাকাবাসীর তোপের মুখে তিনি দলীয় মনোনয়ন পাননি। এতে সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক আব্দুল গফুর দলীয় মনোনয়ন নিয়ে বাগমারায় নির্বাচনে অংশগ্রহন করেন। এই ঘটনার পর আবু হেনা দেশ থেকে বিদেশে পাড়ি জমান। দীর্ঘ ৫ বছর পর ২০১১ সালের ৪ মার্চ দেশে ফেরান। এসময় তিনি দলে ভিড়ে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়ার চেষ্টা করে ব্যার্থ হন। 

এদিকে আবু হেনা বাগমারায় দীর্ঘ দিন পর সংস্কারপন্থীদের হাত ধরে দলে আসায় দলের একটি অংশের নেতাকর্মীদের মধ্যে আনন্দ উৎসব লক্ষ্য করা গেলেও দলের একটি বড় অংশ তার আসার বিষয়ে ভিন্ন মত পোষণ করেছেন। তার আবু হেনাকে দলে ভিড়ায় দলীয় কোন্দল বাড়বে বলে অভিমত পোষণ করেন। তারা দাবী করেন গত নির্বাচনের সময় আবু হেনা বিতর্কিত হওয়ায় দলীয় ভাবে তাকে মনোনয়ন দেয়া হয়নি। বিএনপি’র সম্বন্ধে কটুক্তিতে দলীয় ভাব মর্যাদা নষ্ট হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগে গত নির্বাচনে তাকে ফেবারিট মনে না করায় তাকে মনোনয়ন পত্র না দিয়ে সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল গফুরকে দেয়া হয়েছিল। এতে করে বাগমারার বিএনপি’র ঐক্য ফিরে আসে। আবারও আবু হেনা এলাকায় ফেরায় দলের মধ্যে দলীয় কোন্দল দেখা দিতে পারে বলে তারা আশংকা করছেন। এছাড়া তিনি দল থেকে বহিস্কৃত হবার পর পুনরায় দলে ফিরেছেন নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। নেতাকর্মীরা বলছেন, আবু হেনা দুই দফায় ১০ বছর এমপি থাকার সময়ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে মেশেননি। গত ১০ বছরে একদিনের জন্য এলাকায় যাননি। আবু হেনা এক-এগারোর পর গা ঢাকা দিয়েছিলেন এবারে বিএনপির সংস্কারপন্থীদের দলে ভিড়েছেন। তারা অভিযোগ করে বলেন, ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল বাগমারার পলাশী গ্রামে মনোয়ার হোসেন বাবু নামে এক যুবককে গলা কেটে হত্যার মধ্য দিয়ে আত্ম প্রকাশ ঘটে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামাআ’তুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ বা জেএমবি। এরপর পুরো চার মাস ধরে বাগমারায় চলে জঙ্গিদের রাজত্ব, নির্যাতন ও নৃশংস হত্যাযজ্ঞ। সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে এ জঙ্গি সংগঠনের অপতৎপরতা সে সময় রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন বিএনপি নেতা আবু হেনা। কিন্তু সে সময় তিনি এসব জঙ্গি কর্মকান্ড বন্ধ বা প্রতিরোধের কোনো ভূমিকাই পালন করেননি। পাশাপাশি নির্যাতিতদের পাশেও দাঁড়াননি তিনি।

এছাড়া এক সময় কোন কারণ ছাড়াই তিনি সাংবাদিক সম্মেলন করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে জঙ্গি মদদ দেয়ার অভিযোগ তোলেন। এসব কারণে ২০০৭ সালের ২৪ নভেম্বর আবু হেনাকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল।

 তবে এব্যাপারে সাবেক সাংসদ আবু হেনার সাথে যোগাযোগ করে হলে তিনি বলেন, ব্যক্তিগত কারণে তিনি গত নির্বাচনে সরে ছিলেন। বর্তমানে তিনি দলকে সুসংগঠিত করার লক্ষ্যে কাজ করবেন। দল মনোনয়ন দিলে তিনি আবারো নির্বাচন করবেন বলে মত প্রকাশ করেন।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ